somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসুন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একসাথে গর্জে উঠি। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ে সামিল হই।

০২ রা জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে তখন উত্তাল শাহবাগ। লাখ লাখ মানুষ শাহবাগে একটা দাবী নিয়েই মিলিত হয়েছে। তাদের সবার আদর্শ, বিশ্বাস, কালচার, শ্রেণী এক ছিলনা। এখানে আস্তিক ছিল। নাস্তিক ছিল। আওয়ামী, বাম, ডান নির্বিবাদী সব শ্রেণীর মানুষ ছিল। কিন্তু তারা সবাই একটা দাবীতে এক হয়ে গিয়েছিল। তারা সবাই যুদ্ধাপরাধের বিচার চায়। সে লাখ মানুষের স্রোতে আমিও ছিলাম। যারা তখন বিচার বানচাল করতে চাচ্ছিল তারাও চুপ করে বসে ছিলনা। তাদের জন্য তখন দরকার ছিল এমন একটা প্ল্যান যা দিয়ে এই জনস্রোতকে বিভক্ত করে ফেলা যায়। ফারহাদ মাযহার খুব জ্ঞানী একজন মানুষ। তিনি খুব গভীর দৃষ্টিতে যেকোনো ব্যাপার পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। জামাত শিবির চক্র এবং বিএনপির নীতিনির্ধারকরা সেদিন সঠিক মানুষটাকেই তাদের পথপ্রদর্শক হিসাবে বেছে নিয়েছিল। এই ফারহাদ মাযহার, মাহমুদুর রহমানরা তখন একটা প্রোপাগান্ডা ছড়াতে থাকে। তারা শাহবাগের মুভমেন্টটাকে আস্তিক নাস্তিক বিতর্কের দিকে নিয়ে যায়। এটা খুব মোক্ষম একটা অস্ত্র ছিল। তারা জানত এ দেশে যারা মডারেট মুসলিম তারা এতে করে কনফিউজড হয়ে যাবে। আর মগজ ধোলাই করা কিছু জঙ্গিকে মাঠে নামিয়ে দেওয়াটা তাদের জন্য খুব কঠিন কিছু ছিলনা।

রাজীব হায়দারকে নির্মম ভাবে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে এক নতুন ষড়যন্ত্রের শুরু হয়। তবে এখানে একটা মজার ব্যাপার লক্ষ করার আছে। যখন রাজীব হায়দারকে হত্যা করা হয় তখন সব শ্রেণীর মানুষ এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এমনকি রাজীব হায়দারের জানাজায় লাখ লাখ মানুষ সামিল হয়েছিল। সেখানে প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয়ও ছিলেন। কিন্তু তারপরই হঠাৎ করে হেফাজতের উত্থান ঘটে। সরকার ভয় পেয়ে যায়। শাহবাগ মুভমেন্টের আয়োজকরা হঠাৎ করে নিজেদের মুসলমান প্রমানের চেষ্টা শুরু করে দেয়। সরকার চারজন নাস্তিক ব্লগারকে গ্রেপ্তার করে ফেলে। দৃশ্যপট পরিবর্তিত হতে থাকে। ফারহাদ মাজহার খুব গভীর ভাবে মার্ক্সবাদ অধ্যয়ন করেছেন। তিনি খুব ভালো করেই জানতেন ধর্মীয় অনুভূতিকে উসকে দিয়ে কত কিছুইয়া না করে ফেলা যায়!

২।
ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই একের পর এক ব্লগারকে হত্যা করা হতে থাকে। সেসব ব্লগারদের মধ্যে একটা ব্যাপার কমন। তারা সবাই নাস্তিক। প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসী না। তাদের মধ্যে অভিজিত রায়ের মত অসাধারন লেখক যেমন আছেন তেমনি আবার কুৎসিত ভাষায় গালি দেওয়া লেখকও আছেন। কিন্তু তাদের হত্যার পর সরকার খুব উদাসীন মনোভাব দেখাতে শুরু করল। অনেকেই ইঙ্গিতে বোঝাতে শুরু করলেন যে দোষটা আসলে ব্লগারদের। তারা কেন ইসলাম নিয়ে লিখতে গেল? অনেকেই আবার খুব সুকৌশলে বুঝিয়ে দিল তারা কোন পক্ষকেই সাপোর্ট করেনা। তারা শুধু জানে যে ইসলাম শান্তির ধর্ম। এটা খুব স্পষ্ট করেই বলতে চাই জঙ্গিরা অনেক ভাবেই গত কয়েক বছরে মদদ পেয়েছে। তারা যেমন প্রশাসনের উদাসীনতায় নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করেছে। ঠিক তেমনি এ দেশের মুসুলমানদেরও বিভ্রান্ত করতে পেরেছে। ধর্মের বিরুদ্ধে লেখা আর ধর্মের নামে হত্যাকে একই টাইপ অপরাধ ভেবে যারা চুপ করে বসে ছিল তারাও আসলে পরোক্ষভাবে এই জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করেছে।


জঙ্গিবাদ ব্যাপারটা বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত। তবে এখানে কয়েক জন তাত্ত্বিক গুরু মিলে অনেককে বিভিন্ন কৌশলে প্রভাবিত করে। যারা প্রভাবিত হয় তারাই কর্মী হিসাবে কাজ করে। এটা হচ্ছে একটা দিক। আরেকটা দিক হচ্ছে বিভিন্ন গোষ্ঠী নিজেদের প্রয়োজনে এসব জঙ্গি নেতাদের ব্যবহার করতে পারে। তবে জঙ্গি পালা আর বিষাক্ত সাপ নিয়ে খেলা করা একই ব্যাপার। যতই দুধ কলা খাওয়ানো হোক এরা ছোবল দিবেই। কারন তারাও তাদের সাহায্যকারী গোষ্ঠী গুলোকে নিজেদের প্রয়োজনেই ব্যবহার করে। ব্যাপারটা ভাইস ভার্সা!

বিএনপি সরকারের আমলে জেএমবি যখন সর্বহারা মারছিল, প্রশাসন তখন নিরব ছিল। তারা সব মিডিয়ার অপপ্রচার বলে জেএমবিকে দুধ কলাই খেতে দিচ্ছিল। তবে সাপ ছোবল দিতে খুব বেশী সময় নেয়নি। আদালতে, সিনেমা হলে বোমা মেরে তারা বিএনপি সরকারকে বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে দিয়েছিল। একই ঘটনা আবার ঘটছে এখন। এবার শাসক আওয়ামীলীগ। যখন ব্লগারদের হত্যা করা হচ্ছিল তারা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে চালিয়ে দিচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী, তার পুত্র জয় এবং পুলিশের আইজি যেসব স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন তাতে মনে হয়েছিল সব দোষ ব্লগারদের। তারা উল্টাপাল্টা লিখছে বলেই মরছে! নিজেদের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে পারেনি তাই পুলিশ প্রশাসনেরও কিছু করার নেই। তবে যে সাপের প্রতি তারা উদাসীন ছিল সেই সাপ এখন তাদের ছোবল দেওয়ার আয়োজন শুরু করে দিয়েছে। সামনে মরন কামড় দেবে এটাও নিশ্চিত!


যারা মনে করেন ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম জঙ্গিবাদ হত্যা এসব সমর্থন করেনা তাদের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের সময় এসেছে। তারা যদি মনে করে থাকেন জঙ্গিবাদ ইসলামকে ধ্বংস করছে তবে তাদের আজ অনেক বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। তাদের বুঝতে হবে তাদের বিশ্বাসকে অনেকভাবেই প্রশবিদ্ধ করা হবে। এভাবেই সভ্যতা বিকশিত হয়। সেসবের জবাব দিতে হবে জ্ঞান দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে। তা না করে যদি নাস্তিকদের জঙ্গিদের মতই সমান অপরাধি ভেবে চুপ করে বসে থাকা হয় তবে তার পরিনাম কি হতে পারে আমরা আজ দেখছি। জঙ্গিরা তাদের বিশ্বাস ছাড়া আর সবকিছুকে মূল্যহীন মনে করে। তারা যখন হত্যার জন্য নাস্তিক খুঁজে পাবেনা তখন অন্য ধর্মের পুরোহিতকে হত্যা করবে। বিদেশীদের হত্যা করবে। একসময় দেখবেন মসজিদে গিয়ে মুসলিমদেরদেরও ফতোয়া দিয়ে হত্যা করা শুরু করবে। তাই এখনি সময় এদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হওয়ার। যেখানে যেভাবে পারেন এদের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলুন। আপনাদের সন্তান, আত্মীয়, বন্ধুরা যেন এদের দ্বারা প্রভাবিত না হতে পারে সে ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। আর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেন। কোন নাস্তিক কাকে গালি দিল সেটা অন্য বিতর্ক। যদি তার সাথে ধর্মের নামে, ধর্ম চাপিয়ে দেওয়ার নামে মানুষ হত্যাকে এক করে ফেলেন তবে বলব আপনারাও জঙ্গিদের পরোক্ষ ভাবে মদদ দিচ্ছেন।


ধর্মীয় মতবাদের সমালোচনা করা আর জাতিগত বিদ্বেষ একনা এটা নাস্তিকদেরও বোঝার সময় এসেছে। আজ বিভিন্ন কারনে আমাদের দেশ ষড়যন্ত্রের শিকার। অনেক প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এ দেশকে ধ্বংস করতে তৎপর। আপনারা যারা ধর্মের বিরুদ্ধে গঠনমূলক সমালোচনা না করে অযৌক্তিক জাতি বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন কিংবা কুৎসিত গালি দিচ্ছেন তাদের আরো দায়িত্বশীল এবং যৌক্তিক আচরন করা প্রয়োজন বলে মনে করি। একাত্তরে আস্তিক নাস্তিক সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই লড়াই করেছিল। তখন কমন এনিমি ছিল পাকবাহিনী। আজ আমাদের কমন এনিমি হচ্ছে জঙ্গিবাদ। বিশ্বাসীরা আপনাদের এনিমিনা। তাদের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক গালি না দিয়ে বরং বিশ্বাসীদের সাহায্য করেন। মনে রাখবেন আস্তিক নাস্তিক বিতর্কের জন্যও একটা উন্নত পরিবেশ লাগবে। সেই উন্নত পরিবেশ সৃষ্টির প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে সবাই মিলে একসাথে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা।


বর্তমান সরকারের অনেক ব্যর্থতা আছে। তারা অনেক ব্যাপারেই উদাসীন অবস্থান নিয়ে সমস্যাকে আরো প্রকট করে ফেলেছে। তবে তার সাথে এটাও বলতে হবে এই সরকারই সব দেশি বিদেশী ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধের বিচারের মত একটা কঠিন কাজ করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে পেরেছে। আমরা জানি আপনারা চাইলে পারেন। আজ দেশের স্বার্থে জঙ্গিবাদকে আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা না বলে কিংবা উদাসীন না থেকে এ দেশ থেকে সমূলে উৎপাটন করেন। আমাদের দেশে সব সেক্টরেই দক্ষ মানুষ আছেন। শুধু তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগানোর ইচ্ছেটুকো আপনারা পোষণ করলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।


আমাদের পূর্বপুরুষরা যেমন সব মতভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিল একটা লক্ষ্যকেই সামনে রেখে, তেমনটা আজ আমাদেরকেও করতে হবে। হতে পারে আপনি আওয়ামী কিংবা বিএনপি, ডান কিংবা বাম! আস্তিক অথবা নাস্তিক! কিন্তু তাতে কি। যদি বাঙালি হয়ে থাকেন! যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে থাকেন! যদি নিজেকে মানুষ মনে করে থাকেন আর মানবতার জয় চান তবে আসুন এই বাংলার মাটি থেকে জঙ্গিবাদকে সমূলে উৎপাটন করি। আজ আবার এক সাথে গর্জে ওঠার সময় এসেছে।

জয় বাংলা। মানবতার জয় হোক।



সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৭
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×