somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাশেদ অনু
নিজের সম্পর্ক নিজে বলার মতো যোগ্যতা এখনো হয়নি। শুধু এটুকুই বলতে পারি লিখতে ভালোবাসি, পড়তে ভালোবাসি, দেখতে ভালোবাসি, শুনতে ভালোবাসি, বলতে ভালোবাসি এবং বুঝতে ভালোবাসি। বাকিটা না হয় পরিচয় হওয়ার পর জেনে নেয়া যাবে।

স্বাস্থ্য সমাচার- ১ম পর্বঃ জেনে নিন হার্টব্লকের খুঁটিনাটি সবকিছু

০৫ ই মে, ২০১২ ভোর ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হৃৎপিণ্ডের রক্তনালি ব্লক কথাটির সাথে আমরা কমবেশি পরিচিত। হার্টের স্বাভাবিক পাম্পিং কাজ অর্থাৎ ছন্দোবদ্ধ সংকোচন ও প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহের পাশাপাশি হার্টের যথাযথ বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজটিও নির্বিঘ্নে হওয়া প্রয়োজন। হার্টের প্রকোষ্ঠ বা চেম্বারগুলোকে যদি একটি ঘরের বিভিন্ন কক্ষের সাথে তুলনা করি-তাহলে এর পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং দরজাগুলোকে যথাক্রমে হার্টের রক্ত সরবরাহ, বিদ্যুৎ সরবরাহ (ইম্পালস্‌ তৈরি এবং সরবরাহ) ও ভাল্বসমূহের সাথে তুলনা করা যায়। হৃৎপিণ্ডে বৈদ্যুতিক স্পন্দন বা ইম্পালস তৈরি এবং তা হৃৎপিণ্ডের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছানো একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মে একজন মানুষের সারাজীবন ধরে চলতে থাকে। ফলে হৃৎপিণ্ডের সংকোচন ও প্রসারণের কাজটি যা দ্বারা হৃৎপিণ্ড তার নিজের দেহে এবং ব্যক্তির সারা শরীরে নির্বিঘ্নে এবং ক্রমাগতভাবে রক্ত পাম্প করে থাকে। কখনো কখনো হার্টের এই ইলেকট্রিকাল সাপ্লাইতে ব্যাঘাত বা ব্যত্যয় ঘটতে পারে। সাধারণভাবে যাকে হার্ট ব্লক বলা হয়ে থাকে (এটি হার্টের ইলেকট্রিক্যাল ব্লক, রক্তনালির ব্লক নয়)

হার্ট ব্লকের কারণ:

১. হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে ব্লক
২. হার্টঅ্যাটাক
৩. কিছু ওষুধের কারণে (যেমন বিটাব্লকার, ডিগক্সিন, ভেরাপাসিল, এমাইওডেরোন জাতীয় ওষুধের কারণে)
৪. কিছু ইনফেকশনের কারণে (যেমন লাইম ডিজিজ)
৫. অন্যান্য কিছু রোগের কারণে (যেমন-রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, এস.এল.ই)
৬. জন্মগত কিছু কারণ
৭. হৃদস্পন্দনের উৎপত্তিস্থলে বা মাইনাস নোড কোনো কারণে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে না পারলে।



উপসর্গ:

এটা হার্টব্লকের ধরন এবং তা কতটুকু মারাত্মক তার ওপর নির্ভর করে। হৃদস্পন্দনের গতি যখন অনেক কমে যায় বিশেষত মিনিটে ৪০ বারের নিচে-তখন নিুাকে্ত উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে।
মাথা ঘোরা অথবা ঝিমঝিম করা
মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া বা পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হওয়া
বুকে ব্যথা
শারীরিক পরিশ্রমের পর শ্বাসকষ্ট হওয়া
কখনো কখনো মস্তিষ্কে অপর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহের কারণে খিঁচুনি হওয়া
এখানে মনে রাখা ভালো যে নিয়মিত অ্যাথলেটিক ট্রেনিংয়ের মধ্যে যারা থাকেন, তাদের হৃদস্পন্দনের গতি সাধারণত স্বাভাবিকের নিচে থাকে, এটাই তাদের জন্য স্বাভাবিক।



হার্টব্লক নির্ণয়:

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীর উপসর্গ এবং তার সাথে ই.সি.জি এবং হন্টার মনিটরিং নামক একটি পরীক্ষার মাধ্যমে হার্টব্লক রোগ নির্ণয় করা যায়
কখন হার্টব্লকের চিকিৎসা প্রয়োজন
১. ফাস্ট ডিগ্রি হার্টব্লকের জন্য বিশেষ কোনো চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। রোগীকে আশ্বস্ত করতে হয় এবং কিছু ওষুধের পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন হতে পারে।
২. সেকেন্ড ডিগ্রি হার্টব্লক দুই ধরনের যেমন-
(ক) মবিজ টাইপ-১, সাধারণত এটিরও কোনো চিকিৎসা লাগে না।
(খ) মবিজ টাইপ-২-এর জন্য পূর্বে উল্লেখিত উপসর্গ দেখা দিলে কিংবা তা মাঝারি বা বড় ধরনের হার্টঅ্যাটাকের পর হয়ে থাকলে রোগীর হৃৎপিণ্ডে পেসমেকার স্থাপন করতে হয়। অনেক সময় মবিগ টাইপ ১ ধরনের ব্লক যদি মবিগ টাইপ-২-এ রূপান্তরিত হয় তাহলেও একই চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
৩. থার্ড ডিগ্রি হার্টব্লকের চিকিৎসাও সেকেন্ড ডিগ্রি মবিগ টাইপ-২-এর মতোই অর্থাৎ পেসমেকার ইমপ্লান্ট করা।
৪. হৃৎপিণ্ডের যে জায়গা থেকে হৃৎস্পন্দন তৈরি হয় সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড সেটি কোনো কারণে রোগাক্রান্ত হলে (সিক সাইনাস সিনড্রোম) স্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন তৈরি হতে পারে না। এ ক্ষেত্রেও রোগীর হৃৎপিণ্ডে পেসমেকার স্থাপন প্রয়োজন হয়।
৫. অনেক সময় ওষুধের কারণে হার্টব্লক হলে সংক্ষিপ্ত ওষুধ বন্ধ করেও পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।

পেসমেকার কী?

এটি একটি ম্যাচ বক্সের প্রায় সমান একটি ডিভাইস যন্ত্র যা রোগীর বুকের উপরের দিকে কলার বোনের নিচে সাধারণত বাম দিকে চামড়ার নিচে বসানো হয়। যন্ত্রের এই অংশটিকে ‘জেনারেটর’ বলে। এটি হার্টের চেম্বারের সাথে সাধারণত একটি বা দুটি সরু, লম্বা, ‘লিড’-এর দ্বারা যুক্ত থাকে। এই পেসমেকারটি হৃৎপিণ্ডের নিজস্ব বৈদ্যুতিক স্পন্দনকে সেন্স করে এবং তদনুযায়ী হৃৎপিণ্ডকে নিয়মিত গতিতে পাম্প করানোর জন্য ক্রমাগত বৈদ্যুতিক সিগনাল প্রেরণ করে। পেসমেকার হৃদযন্ত্রকে একটি নির্দিষ্ট গতিতে কিংবা হৃদস্পন্দনের গতি একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে চলে গেলে তাকে স্পন্দিত করাতে পারে। আজকাল অনেক উন্নত প্রযুক্তির পেসমেকার ব্যবহৃত হচ্ছে, যেগুলো রোগীর শারীরিক পরিশ্রমের ধরন কিংবা মানসিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে হৃদস্পন্দনের গতি নিজ থেকেই বাড়াতে কিংবা কমাতে পারে, সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়ে থাকে।



পেসমেকার স্থাপন:

এটি সাধারণত কার্ডিয়াক ক্যাথল্যাবে হয়ে থাকে। পেসমেকারের জেনারেটরটি ইমপ্লান্ট করার জন্য বুকের নির্দিষ্ট স্থানে স্থানীয়ভাবে অবশ করা হয় কেবল। রোগীকে অজ্ঞান করার কোনো প্রয়োজন হয় না। পুরো প্রক্রিয়াটি সাধারণত এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়।




(সংকলিত পোস্ট)
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:০৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×