হার্ট ব্লকের কারণ:
১. হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে ব্লক
২. হার্টঅ্যাটাক
৩. কিছু ওষুধের কারণে (যেমন বিটাব্লকার, ডিগক্সিন, ভেরাপাসিল, এমাইওডেরোন জাতীয় ওষুধের কারণে)
৪. কিছু ইনফেকশনের কারণে (যেমন লাইম ডিজিজ)
৫. অন্যান্য কিছু রোগের কারণে (যেমন-রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, এস.এল.ই)
৬. জন্মগত কিছু কারণ
৭. হৃদস্পন্দনের উৎপত্তিস্থলে বা মাইনাস নোড কোনো কারণে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে না পারলে।
উপসর্গ:
এটা হার্টব্লকের ধরন এবং তা কতটুকু মারাত্মক তার ওপর নির্ভর করে। হৃদস্পন্দনের গতি যখন অনেক কমে যায় বিশেষত মিনিটে ৪০ বারের নিচে-তখন নিুাকে্ত উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে।
মাথা ঘোরা অথবা ঝিমঝিম করা
মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া বা পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হওয়া
বুকে ব্যথা
শারীরিক পরিশ্রমের পর শ্বাসকষ্ট হওয়া
কখনো কখনো মস্তিষ্কে অপর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহের কারণে খিঁচুনি হওয়া
এখানে মনে রাখা ভালো যে নিয়মিত অ্যাথলেটিক ট্রেনিংয়ের মধ্যে যারা থাকেন, তাদের হৃদস্পন্দনের গতি সাধারণত স্বাভাবিকের নিচে থাকে, এটাই তাদের জন্য স্বাভাবিক।
হার্টব্লক নির্ণয়:
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীর উপসর্গ এবং তার সাথে ই.সি.জি এবং হন্টার মনিটরিং নামক একটি পরীক্ষার মাধ্যমে হার্টব্লক রোগ নির্ণয় করা যায়
কখন হার্টব্লকের চিকিৎসা প্রয়োজন
১. ফাস্ট ডিগ্রি হার্টব্লকের জন্য বিশেষ কোনো চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। রোগীকে আশ্বস্ত করতে হয় এবং কিছু ওষুধের পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন হতে পারে।
২. সেকেন্ড ডিগ্রি হার্টব্লক দুই ধরনের যেমন-
(ক) মবিজ টাইপ-১, সাধারণত এটিরও কোনো চিকিৎসা লাগে না।
(খ) মবিজ টাইপ-২-এর জন্য পূর্বে উল্লেখিত উপসর্গ দেখা দিলে কিংবা তা মাঝারি বা বড় ধরনের হার্টঅ্যাটাকের পর হয়ে থাকলে রোগীর হৃৎপিণ্ডে পেসমেকার স্থাপন করতে হয়। অনেক সময় মবিগ টাইপ ১ ধরনের ব্লক যদি মবিগ টাইপ-২-এ রূপান্তরিত হয় তাহলেও একই চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
৩. থার্ড ডিগ্রি হার্টব্লকের চিকিৎসাও সেকেন্ড ডিগ্রি মবিগ টাইপ-২-এর মতোই অর্থাৎ পেসমেকার ইমপ্লান্ট করা।
৪. হৃৎপিণ্ডের যে জায়গা থেকে হৃৎস্পন্দন তৈরি হয় সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড সেটি কোনো কারণে রোগাক্রান্ত হলে (সিক সাইনাস সিনড্রোম) স্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন তৈরি হতে পারে না। এ ক্ষেত্রেও রোগীর হৃৎপিণ্ডে পেসমেকার স্থাপন প্রয়োজন হয়।
৫. অনেক সময় ওষুধের কারণে হার্টব্লক হলে সংক্ষিপ্ত ওষুধ বন্ধ করেও পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।
পেসমেকার কী?
এটি একটি ম্যাচ বক্সের প্রায় সমান একটি ডিভাইস যন্ত্র যা রোগীর বুকের উপরের দিকে কলার বোনের নিচে সাধারণত বাম দিকে চামড়ার নিচে বসানো হয়। যন্ত্রের এই অংশটিকে ‘জেনারেটর’ বলে। এটি হার্টের চেম্বারের সাথে সাধারণত একটি বা দুটি সরু, লম্বা, ‘লিড’-এর দ্বারা যুক্ত থাকে। এই পেসমেকারটি হৃৎপিণ্ডের নিজস্ব বৈদ্যুতিক স্পন্দনকে সেন্স করে এবং তদনুযায়ী হৃৎপিণ্ডকে নিয়মিত গতিতে পাম্প করানোর জন্য ক্রমাগত বৈদ্যুতিক সিগনাল প্রেরণ করে। পেসমেকার হৃদযন্ত্রকে একটি নির্দিষ্ট গতিতে কিংবা হৃদস্পন্দনের গতি একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে চলে গেলে তাকে স্পন্দিত করাতে পারে। আজকাল অনেক উন্নত প্রযুক্তির পেসমেকার ব্যবহৃত হচ্ছে, যেগুলো রোগীর শারীরিক পরিশ্রমের ধরন কিংবা মানসিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে হৃদস্পন্দনের গতি নিজ থেকেই বাড়াতে কিংবা কমাতে পারে, সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়ে থাকে।
পেসমেকার স্থাপন:
এটি সাধারণত কার্ডিয়াক ক্যাথল্যাবে হয়ে থাকে। পেসমেকারের জেনারেটরটি ইমপ্লান্ট করার জন্য বুকের নির্দিষ্ট স্থানে স্থানীয়ভাবে অবশ করা হয় কেবল। রোগীকে অজ্ঞান করার কোনো প্রয়োজন হয় না। পুরো প্রক্রিয়াটি সাধারণত এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়।
(সংকলিত পোস্ট)
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:০৮