এ সমাজে ভালোবাসা নিলামে বিক্রি হয় দেদারসে।
এ সমাজে যার তৈল আছে, তার পায়েই সবাই তৈল মর্দন করে।
দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে গিয়ে অসহায় যুবকের দিকভ্রান্ত ছুটাছুটি দেখে এ সমাজ তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে। ভালো নেই, তবু হাসি মুখে "ভালো আছি" বলে ভালো থাকার মিথ্যা অভিনয়, তুমি কি বুঝতে পারো?
বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে যে যুবক জীবনের রঙ্গিন স্বপ্নকে জীবন্ত হত্যা করেছে। বিরহে, যাতনায় যার কৃষ্ণচূড়া হাসির রং ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। তার স্বপ্নের নববধূর বেনারসী শাড়ির লাল বর্ণ যেন পশ্চিম আকাশে অস্তমিত সূর্যের রক্তিম আভা।
যে যুবকের দুঃখিনী মা এক বেলা রাঁধে আর তিন বেলা খায়, সে যুবকের দায়িত্বের বোঝা শূন্য, শুধু শূন্য মনে হয়। যার তারুণ্য দীপ্ত চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেছে, ক্লান্তির ছাপ পড়ে তারুণ্যের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে গেছে। সে যুবক কখনো প্রসাধনীর মিথ্যা প্রলেপ মাখে না।
যেখানে মন্দ মেয়েদের উপাখ্যান, সেখানেই কামুক পুরুষের আনাগোনা, যেখানে রাতের রজনী গন্ধারা শহরের ল্যাম্পপোস্টের আলোয় হাতছানি দেয়, সেখানেই সম্ভ্রম হারানো অসৎ যুবকদের আনাগোনা।
অথচ সেই যুবককে কখনো সেখানে দেখা যায় না।
রাতকে না দেখে কেন তুমি চন্দ্রিমা দেখতে গেলে?
পূর্ণিমা রাত দেখে তুমি অমাবস্যার কথা ভুলে গেলে
অথচ শূন্যের ভাসমান মেঘ, সে তো অর্থহীন ওড়াউড়ি
তুমি তো জানো, সংসার করতে হলে গণিত জানতে হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠেই যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ দিয়ে পাটিগণিত করতে হয়। জটিল সুত্র প্রয়োগ করতে হয়।
ভোর রাতে মুয়াজ্জিনের ঐশী ডাক "আসসালাতু খায়রুম মিনান্নাউম" ধ্বনি তুমি কি শুনতে পাও? নাকি তোমার কর্ণকুহরে পৌঁছে না? সবাই যখন গভীর ঘুমে অচেতন, তখন সে যুবক ক্লান্ত দেহ আর মাথা ভর্তি দুশ্চিন্তার বোঝা নিয়ে মসজিদে ছুটে যায়।
অথচ এই সমাজে ঐ যুবককে কখনো মূল্য দিতে জানে না। অর্থ বিত্ত নেই বলে ভালোবাসা নিয়ে কেউ জানতে চাইনা "কেমন আছো"?
অথচ এই সমাজ বেছে নেয় সেই ভোগবাদি যুবককে, যে যুবক সুন্দরী নারীর প্রতি লোলুপ দৃষ্টি দেয়। যে যুবক নারী দেহের ঘ্রাণের মাদকতায় আচ্ছন্ন হয়ে স্রষ্টার আরাধনা করতে জানে না।
মুহাম্মাদ রাসেল উদ্দীন
২৩ মে ২০১৯
গোধূলি লগ্ন