বৃদ্ধ বাবার ঘোলাটে চোখে বার্ধক্যের ছাপ
সব কিছু নতুন করে ভাবতে শেখায়
বৃদ্ধামির কাছে নতজানু জীবনের চরম দুঃসময়
দীর্ঘায়ু লাভ করলে যা আসবেই।
বাবার ঘোলাটে চোখ আর দুর্বল শরীর বর্তমানে অবাধ্য
মনের জোরে দশ ধাপ দিলেও তিনি হয়ে যান ক্লান্ত
চায়ের স্টলে গল্প ছাড়া তার আর কাজ নেই
অথচ একদিন তিনি ছিলেন প্রচন্ড শক্তিশালী
ভারী ভারী বোঝা তিনি বইয়েছেন
কঠিন জমি কর্ষণ করে ফলিয়েছেন ফসল
শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা তার কাছে ছিল পরাজিত
তার পুঁথি পাঠ অবাক হয়ে শুনতেন গ্রামের মানুষ
অথচ সেই মানুষটিই কত দুর্বল আজ!
বেশী দূর হাঁটতে পারে না
শক্ত কিছু চিবুতে পারে না
অথচ একদিন তার দাঁতের তলায় পিষ্ট হয়ে যেত
চাল ভাজা, বুট, কলাই, গোস্তের হাড়
অথচ তিনি আজ নির্বিকার, অসহায় নিজের শরীরের কাছে
তাই বৃদ্ধ বাবার ঘোলাটে চোখে
আমিও দেখতে পেলাম আমার বৃদ্ধামি
আমার জোয়ান শরীর একদিন দুর্বল হয়ে যাবে
আমিও পরাজিত হবো আমার শরীরের কাছে
তাই আমার যুবক বয়সের ক্লান্তি আলসেমীকে
বাবার বৃদ্ধামি তাড়া করে বেড়ায়
বাবার দন্তহীন মুখ আমার দাঁতওয়ালা মুখকে
সতর্ক করে
বাবার দুর্বল শরীর আমার জোয়ান শরীরকে
আরও বলিষ্ঠ করে
আমি জানি, বেঁচে থাকলে আমারও পরিণতি হবে
আর পাঁচজন বৃদ্ধের মতো
তাই আমি আজ খুব সতর্ক
বৃদ্ধ বাবার চোখে আমার বৃদ্ধামি দেখে।
(রাসেল আহমেদ মাসুম)