ঐ শিক্ষক কি সত্যি ধর্ম অবমাননা করেছেন নাকী উনার উপরে মিথ্যে অপবাদ লেপে দেওয়া হয়েছে?
তার একটা সঠিক তদন্ত হওয়ার চাই। তদন্তে যে বা যারা দোষী সাব্যস্থ্য হবে, দেশের আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি দেওয়া হোক।
এবং স্থানীয় এমপির আইন হাতে তুলে নিয়ে ঐ শিক্ষককে লাঞ্চিত করার বিচারও করা হোক।
সরকার ও আইন প্রয়োগকারীদেরক বলছি আপনারা কারো প্রতি বিচারের নামে অবিচার করবেন না। মনে রাখবেন এদেশে অবিচারের নজীর কম নয়।
এদেশে সভ্যতার দোহাই দিয়ে অসভ্য আচরণ করাটা খুব স্বাভাবিক হয়ে পরেছে।
এদেশে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড সত্যি লজ্জিত করে এই জাতিকে।
এদেশে এখনো স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে অন্যের স্বাধীনতা হনন অহরতই হচ্ছে।
এ দেশে কোনো বিচার না হলেও অবিচার চলছে সমান তালে।
এদেশে যারা দেশের সুখ শান্তি কামনা করছেন, তারাই আবার দেশের সেই সুখ শান্তি বিনষ্ট করছেন।
তবে কি করে আমরা নিজেদেরকে সভ্য জাতি হিসেবে দাবী করি?
আমরা সত্যিকার্থে বিশ্বের বুকে সভ্য জাতি হিসেবে উপনীত হতে চাই।
আমরা শুধু সংবিধান বই পুস্তক আর সরকারের মুখের গণতন্ত্র চাইনা।
আমরা সরকার আইন কানুন বিচার আচার ইত্যাদি মাধ্যমে গনতান্ত্রিক আচরন চাই।
যে গণতন্ত্র আমাদেরকে লজ্জিল করবেনা বিশ্বের বুকে।
আমাদের সাহসী পূর্ব পুরুষেরা স্বাধিনতা অর্জন করেছেন জান বাজী ধরে।
আর আমরা কাপুরুষেরা জানের ভয়ে আজো স্বাধীনতার সাধ টুকুও ভুগ করতে পারলামনা।
আমাদের এই ব্যর্থতাকে দ্বায় মুক্ত করতে আমরা মাঝে মাঝে বলি "তবে কি আমাদের বীরপুরুষ মুক্তি যোদ্ধারা ভুল করেছিলেন"?
সত্যি কি ভুল উনারা করেছেন। নিশ্চয়ই না।
ভুল আমাদের। ব্যর্থতা আমাদের।
আমরা পারিনি স্বাধীনতা হননকারীদের আমাদের পূর্ব পুরুষের মতো আমাদের বীরত্ব দেখাতে। তাই আমরা পারিনি সত্যিকার্থের স্বাধীনতার সাধ ভুগ করতে।
আরো কেন পারিনি সে উত্তরটা না হয় পাঠকবৃন্দ কষ্ট করে নিজেরাই দিয়ে দেবেন।
এদেশে খুন হত্যা ধর্ষণের বিচার না হলেও বিচারের নামে অবিচার হয় অহরত।
শুধু যে আইন আদালতে বিচারের নামে অবিচার হয় তা কিন্তু নয়। সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্টান, কর্মস্থান, সালিশ, বৈটক ইত্যাদিতেও বিচারের নামে অবিচার হয়।
যদি কাগজ পত্রে বিচার বিভাগ স্বাধীন। তবুও বিচার বিভাগের স্বাধিনতা নিয়ে জাতি সন্দিহান।
রাজনীতিবিদ রাজনৈতিক দল অরাজনৈতিক সংগঠন বা ব্যক্তিগন সর্বদা এদেশের সুখ শান্তি কামনা করে লম্বালম্বা বক্তিতা দেন। উনারাই আবার অহেতুক হরতাল অবরোধ ধর্মঘট ইত্যাদি কর্মসূচি দিয়ে রাষ্টের সুখ শান্তি কেরে নেন। সব হরতাল অবরোধ ধর্মঘট যে অহেতুক তা কিন্তু নয়। হরতাল অবরোধ ধর্মঘট নিশ্চয়ই প্রতিবাদের কঠিন ভাষা।
মতের বেমিল স্বার্থ বা উদ্যেশ্য হাচিল বা স্বার্থ বা উদ্যেশ্য হাচিলে বাধা এলেও রাজনীতিবিদ রাজনৈতিক দল অরাজনৈতিক সংগঠন বা ব্যক্তিগন অহেতুক হরতাল অবরোধ ধর্মঘট এর মতো কঠিন কর্মসূচি দিয়ে রাষ্টের সুখ শান্তি বিনষ্ট করেন।
প্রতিবাদি বা অহেতুক হরতাল অবরোধ ধর্মঘট ইত্যাদি কর্মসূচি পালনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সরকার আইন শৃংখলা বাহিনীও দেশের সুখ শান্তি ধংষ করে দেয়।
যা সত্যিকার্থে রাষ্টের সুখ শান্তি ফেরানো বা অটুট রাখার পন্থা নয়।
নারায়ণগঞ্জের ঐ স্কুলের ঘটনায় সাধারন মানুষের মতে প্রকাশ্য অপরাধের সংখ্যা ৩টি।
১/ ধর্ম নিয়ে কটুক্তি
২/ স্থানীয় এমপির আইন হাতে তুলে নেওয়া
৩/ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা
অপরাধ ১নং এবং ২নং এর এখনো কোন তদন্ত বা বিচার হয়নি। কিন্তু ১নং এবং ২নং অপরাধকে পিছিয়ে রেখে সর্বশেষ ৩নং অপরাধের অপরাধীর তদন্ত শেষ হয়ে বিচার হয়ে গেছে। যা সত্যি অবাক ও হাস্যকর। সত্যিকার্থে প্রথমে তদন্ত হওয়া উচিত ছিল ১নং এবং ২নং অপরাধের। কিন্তু ঘটনার আজ এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ১নং ও ২নং অপরাধ বা অপরাধীর কোন তদন্ত প্রতিবেদন বের হয়নি।
কিন্তু কেন হয়নি? এর উত্তর দেওয়ার মতো হয়তো সরকারের কেউ আজও প্রস্তুত হননি। হয়তো এই অপ্রস্ততুর আড়ালে থাকতে পারে সরকারের কোন গুপন পরিকল্পনা।
অপরাধের বিচার হয়না, হয় অপরাধীর বিচার। নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে নির্যাতন-লাঞ্ছনা করা হয়নি একথা কেই (স্বার্থবাদী ছাড়া) বলবেন বলে আমার মনে হয়না। কিন্তু স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত কি সত্যি ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেছেন নাকী স্কুল কমিটির সাথে উনার রেসারেসি কারনে উনার উপর ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তির অপবাদ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার উপর সঠিক তদন্ত করে জাতিকে জানাতে হবে আসলেই কে বা কারা অপরাধী?
নিশ্চয়ই জাতি নিজ হাতে এই অপরাধের অপরাধীর বিচার করবেনা। কিন্তু জাতির জানা উচিত আসলে কে বা কারা মুল অপরাধী। এই একটা অপরাধ এর সঠিক তদন্ত এখনো পর্যন্ত না হওয়ায় জাতী আজ দু-ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। জাতীকে আর এভাবে দু-ভাগে বিভক্ত করে রাখবেন না। এক দেশের একই জাতি দু-ভাগে বিভক্ত থাকা নিশ্চয়ই রাষ্টের জন্য কল্যাণকর নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪০