মাত্র দুদিনে বেড়ে গেছে সুরমার পানি। গত দুদিন আগেই দেখা গেছে সুরমা নদীর আলী আমজাদ ঘাটের পনের ষোলটা সিড়ি নিচে সুরমার পানির অবস্থান। আজ সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা যায় সিলেট শহর তলিয়ে যেতে আলী আমজাদ ঘাটের আর মাত্র পাচটা সিড়ি বাকী। অর্থাৎ মাত্র পাঁচ ফিট বাকী। আলী আমজাদ ঘাটের বিপরিত দিকের বস্তিটা তলিয়ে যেতে আর মাত্র দের ফিট বাকী। এক দিনের মুশল ধারার বৃষ্টিই তলিয়ে দিতে পারে নদীর দু-প্রান্ত সিলেট শহরের মুল অংশ।
শহরের শাহজালাল (নতুন ব্রিজ) এর নিচে গিয়ে দেখা যায় নদীর পার ঘেরা রাস্তা থেকে নদীর পানি মাত্র এক দেড় ফিট নিচে। মাছিমপুর, ছড়ারপার,কাস্টগড়, উপশহর, মেন্দীবাগ, সোবহানী ঘাট, সোনারপাড়া ও আশে পাশের এলাকা ডুবিয়ে দিতে সুরমার জন্য কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিই যতেষ্ট।
এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার অনেক নিম্নাঞ্চল। প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে গেছে অনেক কাচা পাকা ঘর বাড়ি, সড়ক।
তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুরের হাওর অঞ্চল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হাজার হাজার কৃষক। হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা মুল্যের কৃষি ফসল ধান।
ক্বিন ব্রিজের নিচে আলী আমজাদ ঘাটের পাশের এক চা দোকানি চাচা বলেন- মাত্র দুদিনে এই ঘাটের (আলী আমজাদ ঘাট) সাত আটটা সিড়ি ডুবে গেছে। এই দুদিন কিন্তু তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। আমার ধারনা ভারতের বাধ ছেড়ে দিয়েছে। না হয় এতো পানি আসলো কোথায় থেকে?
ক্বিন ব্রিজ এর নিচে ঘুরতে আসা আরেক দর্শনার্থী জানান- নিশ্চয়ই ভারত বাধ খুলে দিয়েছে। না হয় এই বৈশাখ মাসে সুরমা নদীতে এতো পানি হওয়ার কথা নয়। সারা বাংলাদের মানুষ যে সময় বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে। ঠিক সেই সময় সিলেটের মানুষ বৃষ্টি না আসার জন্য পার্থনা করছেন। ঐ দর্শনার্থী আরো বলেন- আমাদের সিলেটকে ডুবিয়ে দিতে একদিনের বৃষ্টি যতেষ্ট বলে আমার মনে হয়।
কথা হয় এখানে ঘুরতে আসা আরেক দর্শনার্থীর সাথে। উনি রসিকতা করে বলেন এই গ্রীষ্মকালে যদি সুরমার পানি এতো বেশী হয়, তবে তো বর্ষা কালে সুরমার পানি সার্কিট হাউজের (আঙ্গুলের ইশারায় সার্কিট হাউস দেখিয়ে) ছাদে থাকবে।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারনে সুরমার পানি কিছুটা বাড়লেও এতোটা বেড়ে যাওয়া মেনে পারছেননা কেউ। সবাই বলছেন ভারতের বাধ ছেড়ে দেওয়ার কারনেই সুরমা নদীর পানি আজ বিপদসীমার উপরে। বৃষ্টির অভাবে গীষ্মের তাপদাহে যে সময় সারা বাংলাদেশ পুড়ছে ঠিক সে সময় সিলেটবাসি বৃষ্টি আসার ভয়ে ঘরের নিচের আসবাপত্র গুলি উপরে তুলে রাখছেন। কখন জানী সুরমার পানি ঘরে এসে ঢুকে যায়। বন্যার ভয় সিলেটবাসীর শান্তির ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সবার প্রার্থনা নদীর পানি নিচে না নামা পর্যন্ত যেন বৃষ্টি না আসে।