বিষয়ঃ
মাননীয় যোগাযোগমন্ত্রী-দয়া করে জনগণকে সার্কাস দেখানো বন্ধ করুন।
মাননীয় যোগাযোগমন্ত্রী,
সালাম নেবেন। আশা করি, মন্ত্রিত্ব পেয়ে যারপরনাই খুশিতে আছেন। উৎফুল্লে আছেন। আপনার চালচলন, হুমকি-ধামকি এবং সামি ভ্যালু-মালয়েশিয়া কানেকশন, পদ্মা সেতু ক্যারিশমা-সবকিছু দেখে মনে হয়-আপনি মর্তে নেই-আকাশে উড়ছেন। কর্মহীন বাস্তব জীবন কতো সুখের-তা আপনাকে দেখলে বোঝা যায়, সহজেই আঁচ করা যায়।
আপনি মন্ত্রী হয়েই পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে মালয়েশিয়ার সাথে কথা বললেন। মালয়েশিয়ার সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করলেন। আহাম্মক কাকে বলে-কথা হবে, চুক্তি হবে-ইআরডি'র সাথে। যোগাযোগ করবে, সম্পর্ক জোড়া দেবে ইআরডি। আর আপনি নিজে হাত বাড়িয়ে-পা বাড়িয়ে চলে গেলেন-মালয়েশিয়া। চুক্তি স্বাক্ষর করলেন। আর বিশ্বব্যাংককে দ্রুত রাগিয়ে তুললেন। বিশ্বব্যাংক সময় থাকা সত্ত্বেও ঋণ চুক্তি বাতিল করল। একেই বলে আপনার ঘোষিত চমক। আপনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন-সামনে চমক আছে। ঋণ চুক্তি বাতিলই মনে হয় আপনার সেই চমক। চমকের বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে মাফ চাইলেন। দেখে শুনে মনে হয়, আপনি হয় আঁতেল, না হয় বোকা না হয় পুরোপুরি ধুরন্ধর।
মাননীয় মন্ত্রী, আপনার আগে যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি অতি ঢাক ঢোল পিটিয়ে পদ্মা নদীর মাঝখানে গিয়ে, বিরাট নৌকায় মানে জাহাজে, বিশ্বব্যাংকের সাথে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করলেন। বিশ্বব্যাংককে সাথে নিয়ে কিন্তু শেষাবধি ব্রিজ করতে পারলেন না। তাঁকে চলে যেতে হল। আর আপনি এসে কাঁসা বাজিয়ে, চমক দেখিয়ে, সামি ভ্যালুর মতো ধুরন্ধরের সাথে হাত মিলিয়ে, শেষ পর্যন্ত অশ্বডিম্ব দেখালেন। এটা সম্ভব একমাত্র বাংলাদেশে। আর কোথাও নয়।
মাননীয় মন্ত্রী, বলুন তো, প্রতিদিন আপনি কি করেন। সুটেড-বুটেড হয়ে অফিসে আসেন। ফেসবুকে মেয়েদের সাথে চ্যাটিং করেন। দস্তখত ছাড়া নথিতে আর কিছু করেন? নির্ধারিত মক্ষীরানির সাথে খোশগল্প শেষ করে টিভিতে সার্কাস দেখানোর জন্য মাঠে যান। হামকি-দুমকি দেন কর্মকর্তাদের। শোকজ করেন। নতুন প্রকল্পের, নতুন চিন্তা ভাবনার বালাই নেই। দেড় বছর বাকি-কোন কাজের কাজের উদ্যোগ নেই। শুধু চিৎকার, ফাইজলামি, গালমন্দ, ভাগাভাগি-আর কি বলতে পারেন? কথা আছে Morning shows the day। মনে হয় আপনাকে দিয়ে কিচ্ছুই হবে না।
মাননীয় মন্ত্রী, এসব ভাঁওতাবাজি, সার্কাস, উন্নাসিক কথাবার্তা ছাড়ুন। বন্ধ করুন। কাজ করুন। কর্মকর্তাদের নিয়ে টিমওয়ার্ক গড়ে তুলুন। ভদ্র হতে চেষ্টা করুন। কর্মকর্তাদের সাথে ব্যবহার ভালো করুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আড়ালে-আবডালে অসৌজন্যমূলক কথা না বলে, তাঁকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন। দেয়ালেরও কান আছে। তাতে ভালো থাকবেন।
ইতি-
আপনার গুণমুগ্ধ,
কলিম শরাফি
মাইজদি, নোয়াখালী।