সুকান্তর একটা কবিতা আছে, দুর্মর।
"সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়:, জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।" মানুষের ভবিষ্যৎ বলা সহজ কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ কি সঠিক ভাবে বলা সম্ভব? বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ভালো নয়। অথচ দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫৩ বছর হয়ে গেছে। ভিয়েতনাম আমেরিকার সাথে যুদ্ধ করেছিলো। তছনছ হয়ে গিয়েছিল তাদের দেশ। আজ তারা স্বয়ংপূর্ণ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটন ভিয়েতনাম ভ্রমণ করতে যাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের দেশ পরিচালনা করছেন উপদেষ্টারা। সত্যি কথা বলতে দেশ পরিচালনা করার মতো জ্ঞান উপদেষ্টাদের নেই। আগামী এক দুই বছরের মধ্যে তারা নির্বাচন দেবেন। নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবেন বিএনপি অথবা জামায়াত ইসলাম। বিএনপি ক্ষমতায় আসার সম্ভবনা ৮৫%। আওয়ামী লীগ বিএনপির কোমর ভেঙে দিয়েছিল। আর আওয়ামী লীগের কোমর আওয়ামী লীগ নিজেই ভেঙেছে।
বিএনপি ক্ষমতায় আসলে কি হবে?
আহামরি কিছুই হবে না। আওয়ামীলীগ যা যা করেছে বিএনপিও তাই করবে। দূর্নীতি বন্ধ হবে না। বরং আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি দূর্নীতি করবে বিএনপি। যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো প্রতিবছর দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। লুটপাট করাতে আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি বেশি এগিয়ে থাকবে। বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য আহামরি কোনো পরিবর্তন হবে না। এক রাজা যাবে, এক রাজা আসবে। আমাদের দেশ বড় অদ্ভুত দেশ। এদেশে রাজাকাররা মন্ত্রী এমপি হয়েছে। স্বাধীনতা পদক পেয়েছে। দূর্নীতিবাজরা কিছুদিন জেল খাটে। তারপর ছাড়া পেয়ে যায়। দূর্নীতিবাজদের কঠিন কোনো শাস্তি হয় না। টাকা থাকলেই আমরা ধনীদের সালাম দেই। হুজুর হুজুর করি। হাত কচলাই। অথচ সেই ধনী লোকের টাকা দূর্নীতির টাকা। লোকটা ধনী এটাই আমাদের কাছে বড় কথা। হোক দূর্নীতির টাকা, সেটা কোনো ব্যাপার না।
যাদের ক্ষমতা আছে, শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে,
টাকা আছে তারা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। মানুষ শান্তিতে বাস করতে চায়, আনন্দ নিয়ে জীবনযাপন করতে চায়। বাংলাদেশে শান্তিতে বাস করা সম্ভব নয়। দেশটা পচে গলে নষ্ট হয়ে গেছে। এই দেশে সবাই সবাইকে ঠকাচ্ছে। আর কেউ কাউকে ঠকাতে পারলেই মনে করে জিতে গেলাম। এই দেশের মানুষের মানুষিকতার অধপতন মারাত্মক নিচে নেমে গেছে। চারিদিকে সবাই হাত পেতে আছে। দাও। আমাকে দাও। বাসা থেকে বের হলেই ভিক্ষুক। সিগনালে গাড়ি থামলেই হকার আসে, আসে ভিক্ষুক। রাস্তায় লম্বা সিগনাল পড়লে, বাসে ভিক্ষুক উঠে যায়। জনে জনে হাত পাতে। ঠক প্রতারক দিয়ে দেশ ভরা। বাংলাদেশের সব জায়গায় গাজা বিক্রি হচ্ছে। ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে। দিনেদুপুরে সকলের সামনে জুতো আঠা দিয়ে নেশা করছে টোকাইরা। কেউ তাদের বাধা দিচ্ছে না।
চারপাশ দেখে শুনে, রাজনৈতিক দল গুলোর কর্মকাণ্ড দেখে মনে কোনো আশার আলো জাগে না।
বাংলাদেশের লোকজন হলো চোর। সুযোগ পেলেই চুরি করে। অথচ এসব চোরেরা বাজারে গিয়ে হালাল মাংস খুজে। নামাজ পড়তে পড়তে কপালে স্থায়ী কালো দাগ বসিয়ে ফেলে। দেশের মানুষ ভালো না হলে, সেই দেশ উন্নতি টা করবে কি করে? আমাদের দেশে কোনো সৎ রাজনীতিবিদ নেই। পথের ফকির গুলো এমপি মন্ত্রী হয়ে রাতারাতি টিভি চ্যানেলর মালিক হয়ে যায়, দৈনিক পত্রিকার মালিক হয়ে যায়। বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসে আর বিদেশে টাকা পাচার করে। গত ৫৩ বছর ধরে এই-ই হয়ে আসছে। সব সরকারের আমলেই বেশ কিছু নব্য ধনী সৃষ্টি হয়। গত ৫৩ বছরের আলোকে বলা যায় দেশের ভবিষ্যতে অন্ধকার। এই দেশের বেশির ভাগ জনগণ মগজহীন। এরা নিজ বাড়ির সামনে ময়লা ফেলে। অথচ প্রতিদিন সকালে ময়লার গাড়ি আসে। চারপাশে হাজারো অন্যায় হচ্ছে। অন্যায় গুলোই আজ নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে।
সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করার জন্য এদেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলো। যারা পালাতে পারে নাই তাদের একে একে গ্রেফতার করা হলো। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের সম্পদ নষ্ট করা হলো। শেখ মুজিবের ভাস্কর্য গুলো ভেঙে ফেলা হলো, মেট্রোরেল ক্ষতিগ্রস্ত করা হলো। থানা গুলোতে আগুন দেওয়া হলো, অনেক জ্বালাও পোড়াও করা হলো। যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করলো, তাদের একজনকেও গ্রেফতার করা হলো না। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে দু'একটা কথা কেউ বললো না। আফসোস আমাদের দেশে একজন খাটি বুদ্ধিজীবী নেই। খাটি বুদ্ধিজীবী ছিলো ৭১ সালে। তারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। আর এখনকার তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা দালালি আর তেলবাজিতে ব্যস্ত। এদের শাস্তি হওয়া উচিৎ। সেই সাথে শাস্তি হওয়া উচিৎ দুদকের। চারিদিকে এত এত দূর্নীতিবাজ, অথচ তারা দূর্নীতিবাজদের গ্রেফতার করেনি। কিছু কিছু দূর্নীতিবাজকে কান ধরে দেশে ফিরিয়ে আনা উচিৎ। এদের শাস্তি হওয়া উচিৎ।
সাধারণ মানুষ নয়। খেটে খাওয়া মানুষ নয়,
দেশের রাজনৈতিক দল গুলোই দেশের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে সহজ দূর্নীতিবাজদের ধরা, শেখ হাসিনা সেই কাজটাই করেন নাই। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন খালেদা জিয়াও দূর্নীতবাজদের ধরেন নাই। আমাদের দেশে শিক্ষার মান অতি নীচু মানের। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলো প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা সেমিস্টার ফ্রি নিচ্ছে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গুলো প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা বেতন নিচ্ছে। একটা প্লে গ্রুপের স্টুডেন্ট এর কাছ থেকে বেতন নিচ্ছে ১১ হাজার টাকা। এটা অন্যায়। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। সুযোগ থাকলে এই পোড়া দেশে কেউ থাকতো না। এই দেশে জন্ম নেওয়াটাই পাপ। চারপাশের এমন পরিবেশ যে ঘর থেকে বের হলেই যে কোনো সময় মৃত্যু হয়ে যেতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫২