স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্যের একটি অংশ। স্কট স্বাধীনতার আন্দোলনে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি। ১৯৯৯ সালে তৈরি হয় স্কটিশ পার্লামেন্ট। আপাতত সেই পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে স্কটল্যান্ডে সরকার গঠন করেছে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি। সুন্দর পরিপাটি শহর। ঐতিহ্য ও সবুজ সভ্যতার পাদদেশ এই দেশটি বুকে ধারণ করেছে অনেক অনেক জগতখ্যাত জনমন্ডলি।
এডিনবরা দেশের রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। স্কটল্যান্ডের মোট আয়তন ৭৮,০৮০ বর্গকিলোমিটার। স্কটল্যান্ডে প্রায় ৬০ হাজার মুসলমান বসবাস করে এবং ইসলাম দেশটির দ্বিতীয় প্রধান ধর্ম। স্কটল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৩০টি মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদসমূহের মাঝে অলোচিত মসজিদ হলো- স্কটল্যান্ডের আল মাখতুম মসজিদ। ‘ইউহান্না’ নামক একটি গীর্জা আছে, যেখানে মুসলমান এবং খ্রিস্টানরা পরস্পরে পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে উভয়েই তাদের ইবাদতের স্থান হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
ঢাকার ইস্কাটনঃ ইস্কাটন শব্দটি ‘স্কটল্যান্ড’ এর একটি বিকৃত সংস্করণ। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সময়কালে একটি গির্জা কিছু স্কটিশ প্রচারক দ্বারা সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই নামের উৎপত্তি সেখান থেকেই।
১১ শতাংশ মানুষ অর্থাত প্রতি ১০ জনে একজন দারিদ্রের কষাঘাতে ভুগছেন।
১৭০৭ সালে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের আইনসভা একত্রিত হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্কটল্যান্ড নিজস্ব বিচারব্যবস্থা, নিজস্ব গির্জা, নিজস্ব শিক্ষাব্যবস্থা, এমনকি নিজস্ব টাকা ধরে রেখেছে। ১৯৯৯ সাল থেকে স্কটল্যান্ডের নিজস্ব আইনসভা রয়েছে এবং তখন থেকে দেশটি স্বায়ত্বশাসিত। অতীতে ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড চারটি আলাদা দেশ ছিল এবং তাদের মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই ছিল।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৫৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৮শ’ শতকে ‘ইউরোপে আলোকিত যুগ’ নামের যে বিরাট বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন ঘটে, তার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ছিল। আর এ কারণে আজও এডিনবরাকে ‘উত্তরের অ্যাথেন্স’ নামে ডাকা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ইংরেজি ভাষাভাষী বিশ্বে ষষ্ঠ এবং স্কটল্যান্ড-এর সবচাইতে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। পুরো পৃথিবীতে বিখ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল ডিপার্টমেন্ট। এ কলেজ থেকে ইতিমধ্যে ৬ জন নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে, যার মধ্যে ৫ জন চিকিত্সা বিজ্ঞানে এবং অপর জন রসায়ন বিজ্ঞানে। সবশেষ অনুষদটি হচ্ছে প্রকৌশল অনুষদ। এখানে মোট বিভাগের সংখ্যা ৭টি। বিশ্বে সর্বপ্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারেই আবিষ্কার হয় কার্বন-ডাই অক্সাইড।
ব্রিটেন শাসন করেছেন স্কটরা। তাদের সব আছে শুধু স্বাধীনতা নেই। আলাদা পার্লামেন্ট, পতাকা, নিজস্ব টাকা, মন্ত্রী, এমপি ও সংবিধান সবই আছে। আছে নিজস্ব ভাষা। তাদের ইংরেজিতে কথা বলার ধরণও আলাদা। স্কটস ও স্কটস গ্যালিক তাদের আঞ্চলিক ভাষা। ১৮ শতকে স্কটিশ নবজাগরণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল, যা স্কটল্যান্ডকে ইউরোপে বাণিজ্যিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং শিল্প শক্তিকেন্দ্রগুলোর একটিতে রুপান্তরিত করে। গ্লাসগো স্কটল্যান্ডের বৃহত্তম শহর। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বৃহত্তম তেল মজুদ রয়েছে এই স্কটল্যান্ডে ।
স্কটল্যান্ডও দেখার মত একটি জায়গা। স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে ঢুকতেই অন্যরকম আবেশে যেন সবকিছু ছুঁয়ে যায়। আর দশটা শহরের মতো এর পরিবেশ একরকম নয়। একটা গম্ভীর ভাব সবখানে অনুভূত হবে। এর সাথে এই শহর বেশ নিরিবিলি এ শহরটিতে ঢোকার ব্যাপারটিও একদমই আলাদা। বই ছাড়া তাতে ঢোকার কথা যেন কল্পনাই করা যায় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৮