বিএম ডিপোর দূর্ঘটনাটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বড় দুর্ঘটনা হলেও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এর চেয়ে আরো বড় ভায়াবহ দূর্ঘটনা বিভিন্ন দেশে অহরহ ঘটছে। তবে আমাদের দেশের সমস্যা হচ্ছে দূর্ঘটনার সময় অনেক হৈচৈ হলেও পরে সবাই ভুলে যায়। কেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল, কিভাবে ভবিষ্যতে প্রতিরোধ করা যাবে, আবার দূর্ঘটনা ঘটলে কিভাবে উদ্ধার কাজ চালানো যাবে, ক্ষয় ক্ষতি কিভাবে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা যাবে তা নিয়ে তেমন কোন কাজ হয় না।
আমাদের দেশে এখনো ১০ তলার বেশি উচ্চতায় কোন ভবনে আগুন লাগলে তা নেভানোর ব্যবস্থা নেই। বড় কোন লঞ্চ ডুবে গেলে তা উদ্ধারের কোন ব্যবস্থা নেই। বড় কোন ভবন ভেঙে পড়লে ১ মাসেও পুরোপুরি উদ্ধারের সক্ষমতা নেই।
এই যে নেই, তা নিয়ে কোন কাজ হচ্ছে বলে বছরের বছর কোন দৃশ্যমান কাজ হচ্ছে না। আল্লাহ না করুক, এই বিস্ফোরনে বড় কোন ভবন ভেঙে যদি ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যেত, তা আবার চালু করতে নূন্যতম ৭ দিন লাগত। পোর্ট, আমদানী রপ্তানী বন্ধ হয়ে যেত।
আমাদের কোন বিকার নেই।
বড় কোন ভূমিকম্পে যদি ঢাকার ৩০০-৪০০ বাড়ি ভেঙে পড়ে, হাজার হাজার মানুষ তবে ভাঙ্গা ভবনের নিচে না খেয়েই মারা যাবে। হয়ত লাশের গন্ধে শহর দীর্ঘদিনের জন্য পরিত্যাক্ত করা লাগতে পারে। একটা ভবন উদ্ধারেরই সক্ষমতা আমাদের নেই, শত শত ভবন ধংশ হলে অবস্থা ভয়াবহ হবে।
আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি যাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি দেখা দরকার, তারা তাদের কাজ ঠিক ভাবে করেন না। টাকা নিয়ে অনুমিতি দিয়ে দেন। নিয়মিত পরিদর্শন করেন না। দুর্ঘটনা ঘটলে সেসব বড় কর্তারা টিভিতে মতামত দেন, আর সাধারন কর্মিরা প্রান দেন।
বলা হচ্ছে ডিপোতে রাসায়নিক রাখার অনুমতি ছিল না। তারপরেও রেখেছে।
কিসের অনুমতি নিয়েছে, কি করছে, অনুমতির বাইরে কিছু করছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি কখনে চেক করে দেখে না। এজন্য এদের কখনো দায়ি ও করা হয় না।
আমরা এত উন্নত হয়েছি, দেশ কানাডা সিংগাপুর হয়ে গেছে, তবে দেশের আইন কানুন নিয়ম শৃংখলা ঠিক হয় নি। হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চলছে, কয়েককোটি টাকা খরচ করে কয়েকটা উচু ক্রেন, বা ভাসমান ক্রেন আমরা কিনতে পারি না।
কবে আমাদের বোধোদয় হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:৪৬