somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যে যে বিষয়ে দাসখত দিয়ে আসতে পারেন

১০ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারত সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কাউন্টার পার্ট মনমোহন সিং এর সাথে বৈঠকের শুরুতেই আগ বাড়িয়ে বলতে শুরু করলেন, আপনাদের চামচামি করে আমার জীবন উৎসর্গ হোক। এই দেখুন আমি আপনাদের কত উপকার করার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এই বলে তিনি উপকারের ফিরিস্তি বর্ণনা শুরু করলেন।

১। ট্রানজিটের নামে বাংলাদেশকে আপনাদের দেশের করিডোর বানানোর ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আপনারা সেভেন সিস্টার্স-এ যাওয়ার জন্য আমাদের ভূমি ব্যবহার করবেন। তা না হলে আপনাদের স্বাধীনতাকামী গেরিলাগোষ্ঠির অ্যামবুশের মুখে পড়তে হবে। বিনিময়ে নেপাল,ভুটান ও চীনের সাথে বাণিজ্যের জন্য আপনাদের ভূমি আমাদের ব্যবহার করতে দিতে হবে না।

২। টিপাইমুখ বাঁধ হলে আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না। বরং আমাদের অনেক উপকার হবে। অতএব, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এ নিয়ে যতই হৈ চৈ, আন্দোলন হোক না কেন আপনাদের কাজ আপনারা করে যান। বাকিটা আমি দেখব।

৩। ঐতিহাসিক পানিচুক্তির নামে যে আইওয়াশের চুক্তি করেছি, তাতে আপনাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। অতএব, প্রয়োজনমতো পানি ছেড়ে কিংবা প‌্রত্যাহার করে আমাদেরকে পানিতে মারুন কিংবা বাংলাদেশ মরুভুমিতে পরিণত করুন সেটা একান্তই আপনাদের ইচ্ছা। আমার দেশের জনগণ এবিষয়ে প্রতিবাদ করলে কঠোর হস্তে দমন করব।

৪। আপনাদের সাথে আমাদের ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি থাকা সত্বেও(প্রায় তিনশ কোটি ডলার) আরো ব্যাপকহারে সীমান্তে চোরাচালান করুন। যেন আপনাদের পণ্যে আমাদের বাজার সয়লাব থাকে। এতে আমাদের দেশের শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে অসংখ্য শ্রমিক না খেয়ে মরুক কিংবা পেটের দায়ে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ুক তাতে আপনাদের এবং আমার কিছুই যায় আসেনা। প্রয়োজনে বাজার থেকে সমস্ত দেশীয় পণ্য প্রত্যাহার করে আপনাদের পণ্যের অবাধ সুযোগ করে দেয়া হবে।

৫। আমাদের দেশের কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের আপনারা জামাই আদরে রাখেন কিংবা এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আরও বড়লোক হওয়ার সুযোগ করে দেন এবং সেইসাথে আপনাদের দেশে থেকে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ করে দেন তাতে আমার কোনো ক্ষতি হবে না। আমি কখনো বলবো না যে এসব সন্ত্রাসীদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠান। তবুও আমরা আপনাদের হাতে বিনা শর্তে উলফা এবং অন্যান্য গেরিলা নেতাদের তুলে দেব।

৬। আপনাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় যতই সংখ্যালঘু নিহত হোক না কেন সেটা একান্তই আপনাদের ব্যাপার। কিন্তু আমাদের দেশে একজন সংখ্যালঘু নির্যাতিত হলেই আপনারা ইচ্ছামতো নাক গলাবেন। এজন্য আপনাদের যে সকল দালাল আমাদের দেশে আছে তাদের সবরকম সহযোগিতা করব। প্রয়োজনে শাহরিয়ার কবির গংদের এ বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। যেন তারা এ বিষয়ে কাল্পনিক ডকুমেন্টারি তৈরি করে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশের দুর্নাম ডেকে আনতে পারে।

৭। আপনাদের সাথে আমাদের কোনো সীমান্ত সমস্যা নেই। নির্দ্বিধায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করুন। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাধা দিলে ফটাফট ফেলে দিন। বিএসএফ প্রতিনিয়ত যে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা করে তা চালু রাখুন। আরে, প্রতিবেশী দেশের মানুষদের উপর শূটিং প্র্যাকটিস করবে না তো আমেরিকার মানুষদের উপর শূটিং প্র্যাকটিস করবে!! সেই সাথে অপহরণ, নারী নির্যাতনও চালাতে পারে।

৮। আপনাদের গোয়ন্দা সংস্থা রিসার্চ এন্ড এ্যানালাইসিস উইং(র) কে আমাদের রাষ্ট্রীয় গোপন ও স্পর্শকাতর বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সরবরাহ করব। প্রয়োজনে ঢাকায় এই সংগঠনের হেড অফিস করে দিব। যেন বাংলাদেশকে দিন দিন আপনারা আরও পঙ্গু করে রাখতে পারেন।

৯। আপনাদের এখানে কোনো সন্ত্রাসী হামলা হলে সাথে সাথে এর দায়ভার আমাদের উপর চাপিয়ে দিবেন। কারণ হুজি, জেএমবি এই সংগঠন কেবল আমাদের দেশেই আছে। আপনাদের সেনাবাহিনীর কোনো কর্ণেল এরকম অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও এর দায় আমাদের উপর বর্তাবে।

১০। জাঁহাপনা, বাংলাদেশকে মনে করুন আপনাদের একটা প্রদেশ। আর আমি না হয় সেই প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী কি কখনো কেন্দ্রের আদেশ অমান্য করতে পারে। আপনারা শুধু এইটুকু দেখবেন যেন আমি আগামীবার আবার ক্ষমতায় আসতে পারি।

এই বলে হাসিনা থামলেন। ঠিক তখনই মনমোহন সিং তার আসন থেকে উঠে এসে খুশিতে গদগদ হয়ে হাসিনার পিঠ চাপড়ে দিলেন। অতঃপর আমাদের প্রধানমন্ত্রী সলজ্জভাবে মনমোহন সিং এর পদধূলি মাথায় মাখতে লাগলেন।
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এসব লুটপাটের শেষ কোথায়!

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:১৮

আধা লিটারের পানির বোতল দোকানদার কেনে সর্বোচ্চ ১২.৫০ টাকায় আর ভোক্তার কাছে বিক্রি করে ২০ টাকা। এগুলো কি ডাকাতি না?

গোপন সূত্রে যতটুকু জানা যায়,
প্রাণ ৮.৫ টাকা কেনা
ফ্রেশ ১০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। চারুকলায় আগুনে পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৪৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্‌যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফ আগুনে পুড়ে গেছে। এর মধ্যে একটি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও আরেকটি শান্তির পায়রা।



আজ শনিবার সকালে চারুকলা অনুষদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৬

ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা
March for Gaza | ঢাকা | ২০২৫

বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
আল্লাহর নামে শুরু করছি
যিনি পরাক্রমশালী, যিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী,
যিনি মজলুমের পাশে থাকেন, আর জালেমের পরিণতি নির্ধারণ করেন।

আজ আমরা, বাংলাদেশের জনতা—যারা জুলুমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডক্টর ইউনুস জনপ্রিয় হয়ে থাকলে দ্রুত নির্বাচনে সমস্যা কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৪১



অনেকেই ডক্টর ইউনুসের পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলছেন। এর জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় নির্বাচন। আদালত যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বহাল করেছে সেহেতু ডক্টর ইউনুস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডিসেম্বরে নির্বাচন : সংস্কার কাজ এগিয়ে আনার পরামর্শ প্রধান উপদেষ্টার

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৪৯


ড. ইউনূস সাহবে কে বুঝি পাঁচবছর আর রাখা যাচ্ছে না। আজ বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সাথে মত-বিনিময়ের সময় ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন কে সামনে রেখে তিনি দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কারের এগিয়ে আনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×