
মিডিয়া ও সরেজমিন রিপোর্টে সব স্পষ্ট যে, সেখানকার বৌদ্ধপাড়ায় আর মন্দিরগুলোতে হামলার ব্যাপারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ-বিএনপি সহ সব দলের মোছলমান নেতা-কর্মীরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করেছে! তারা কাজটি করেছেন ইসলাম রক্ষার জন্যেই! জনৈক বিধর্মী বৌদ্ধ খোকন বড়ুয়ার ফেসবুক ওয়ালের ট্যাগকৃত একটি ছবির কারনে বাংলাদেশ থেকে-দুনিয়া থেকে ইসলাম চলে যাবে, মহানবীর(দঃ) ইজ্জত বলতে কিছু থাকবেনা, এটা সেখানকার কোন দলের মোছলমান নেতাকর্মীরাই মানতে চাননি! না মানতে চেয়েছেন? শুধু তাই না, এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে বিধর্মী বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে এ্যাকশনে গিয়ে তাদের বাড়িঘর-মন্দির পুড়িয়ে-গুড়িয়ে সম্ভাব্য জেহাদি সওয়াব হাসিলের সুযোগ মিস করতে চাননি সেখানকার সব দলের মোছলমান নেতাকর্মী, সাংবাদিক, পুলিশ কেউই! অতএব সেখান থেকে পাওয়া সবগুলো রিপোর্টের সার-সংক্ষেপ হলো, এর প্রস্তুতি নিতে প্রকাশ্যে সভা-বক্তৃতা হয়েছে, ইউএনও খবর দিয়ে এমপি, পৌর মেয়রকেও ডেকে এনেছেন! ওসি সহ পুলিশও ছিল উপস্থিত! এরপর আবার বাস-ট্রাক দিয়ে লোক আনা হয়েছে! আনা হয়েছে গান পাঊডার-পেট্রোল, বিশেষ ধরনের পাথর! এরসব কিছু নিয়ে বেশ সময় নিয়েই বেয়াদব বিধর্মী বৌ্দ্ধদের শায়েস্তা, দুনিয়া ও আখেরাতের অশেষ নেকি হাসিলের কাজ হয়েছে!
ধরুন, উত্তম কুমার/খোকন বড়ুয়া যদি ঢাকা বা নিউইয়র্ক বসে ছবিটা ট্যাগ করতেন তাহলে সেখানে কিছুই হতো না, এটা ব্যাপার না।এর কারন এখানে ২০-৮০% ফেইসবুক ইউজ করে, বিষয়টি বোঝে।
কিন্তু এই উত্তম কুমার যদি রামু বসে ফেইসবুকে ছবিটা ট্যাগ করে, যেখানে সাধারন পাবলিক দূরে থাক ইউএনও, ওসি, এমপি, এসপি, ডিসি চৌদ্দপুরুষে ফেইসবুক দেখে নাই, সেখানে ভিষন বিপদ।ইউএনও এসে বক্তিতা দিবে এই ফেইসবুক খাইলো, আমরা এটা মানতে পারি না, ওসি এসে আরেক চোট, ভাবছে ফেইসবুক রেলগাড়ী।
এবার বলুন এদের কি করা উচিত।ছাগল এমপি, নেতা না চিনতে পারে, সরকারী কর্মকর্তা হয়ে তোদেরতো চেনার কথা, ও ফেইসবুক, এইডা ব্যাপার না।মিটিং শেষ।
রামু এফবি স্ট্যাটঃ প্রকৃত পক্ষে রামুতে সব মিলাইয়া ১৫-২০ জন ফেইসবুক ইউজার আছে কিনা সন্দেহ আছে।পুরা ফেইসবুক খুজে রামু উপজেলার কোন ফেইসবুক পেইজ বা গ্রুপ পর্যন্ত পাইলাম না।উপজেলায় সরেজমিন গিয়ে দেখেন ওখানে স্কুল কলেজগুলোতে মোট ১০-১৫টি মোডেম/নেটসংযোগ, উপজেলা পরিষদে ৫-৬ টি আর সারা উপজেলায় হাতে গোনা ১০-১২ টি বাড়িতে কম্পিউটার ইন্টারনেট এবং ২০-৩০ জন ছাত্রছাত্রী মোবাইলে ফেইসবুক পর্যন্ত।আসলে এটা শুধু রামু না দেশের যেকোন গড় উপজেলার ইন্টারনেট স্ট্যাট।বিশ্বাস না হলে আরও জানুন, বর্তমানে বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা ২১০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে, অর্থাৎ বিশ্বের প্রতি ৩ জনের ১ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।তবে ভাবেন না, এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় সর্বনিম্ন।এখানে ইন্টারনেটের পেনিট্রেশন ২% নিচে।গুগলে ফেইসবুক বাই কান্ট্রি সার্চ দিলেই দেখবেন ১৫ কোটি জনগণের বাংলাদেশে ফেইসবুক ব্যবহারকারী মাত্র ২৯ লাখ যা ২০০৯ সালে ছিল ৮ লাখ।ওয়ার্ল্ড ইন্টারনেট স্ট্যাটের সাইটে গিয়ে দেখন বাংলাদেশে-ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১.৬%, তারমানে বাংলাদেশে প্রতি ৫০ জনেরও বেশি জনে একজন ইন্টারনেট ব্যবহার করে।এর মধ্যে ঢাকা শহরে প্রতি ২০ জনে একজন করে ১০-১২ লাখ, জেলা সদরে ১০০-২০০ তে একজন পাওয়াই টাফ হয়ে যাবে আর উপজেলা লেভেলে প্রতি ২০০০-৩০০০ এ একজন হয় কিনা সন্দেহ।অর্থাৎ একটি গড় উপজেলায় ৫০-১০০ এর বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী পাওয়া অসম্ভব- যা গুনে হিসাব দেখানো যাবে- যদিও একটি উপজেলার জনসংখ্যা গড়ে ৩-৪ লাখ।
এবার বলুন, কে দায়ী, কে আমাদের গ্রামগুলোকে এখনও অন্ধকার রেখে আরও বিপদজনক করেছে ? কে গত চার বছরে ইন্টারনেটকে ২% এর বেশি জনগণের কাছেও নিতে পারেনি ?
সজিব ওয়াজেদ জয় ইজ গিল্টি হেয়ার ফর ইন্টারনেট সিচুয়েশন ইন বাংলাদেশ। আজ ২০১২ সালে বাংলাদেশের ইন্টারনেট/ফেইসবুক ইউজার হওয়ার কথা ছিল ১২-১৫% অথচ আজও ১.৮%, সমাজের কর্তা ব্যক্তিরাও এখনও ইন্টারনেটের সংষ্পর্শে আসলো না।
কেউ যদি প্রশ্ন করেন সরকার কিভাবে করবে, সে পোষ্টি পড়ে পইড়েন
.........
একটা দেশে
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি গণতন্ত্র
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি নিউজ
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি শিক্ষা
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি স্বাধীনতা
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি যোগাযোগ
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি মুক্তি
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি সত্য
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি প্রকাশিত
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি খোলা
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি ভালো
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি খোজখবর
যত বেশি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট, তত বেশি ...
আর বাংলাদেশ থেকে আজও ফেবু এ্যাকাউন্ট মাত্র ২৯ লাখ, ১.৮% অব টোটাল ১৫ কোটি পপুলেশন।ছিঃছিঃছিঃ এই তাহলে ছাগলের ডিজিটাল বাংলাদেশ ? এতো ঘুটঘুটে অন্ধকারতন্ত্র।
ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে লাভ নাই, প্রশাসন ও জনগণকে ফেইসবুক সচেতন করতে হবে ... খোদ প্রশাসনের ফেইসবুক মূর্খতাই রামু ঘটনার অন্যতম কারন।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:২১