একটু নড়েচড়ে বসুন। আপনাদের মগজে একটু শান দিতে চাই। যদি মগজ খুলে! সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন দুইটা জাতির মারামারি চলতাছে। বিষয়বস্তু ধরে ফেলছেন আশা করি এতক্ষণে। লঞ্চডুবির ১৩ ঘণ্টা পর কেউ বেঁচে ফিরতে পারেনা এই বিষয় নিয়ে একদল মারাত্মক নিশ্চিত। অর্থাৎ 'রানা প্লাজা' দুর্ঘটনায় কয়েক সপ্তাহ পরে পাওয়া রেশমার মতো এটাও একটা নাটক। এটা একটা ঐতিহ্যে পরিণত হইছে।
আরেক দল 'রাখে আল্লাহ মারে কে' টাইপ। প্রিন্ট বা মেইন স্ট্রিম মিডিয়াতেও যখন বলে / লেখে, অলৌকিক ভাবে ফিরে আসলেন অমুক লোক, তখন মনে চায় গাণ্ডু বইলা দুইডা গালি দেই। একটুতো জার্নালিজমের এথিকস ফলো কর!
লঞ্চ বা জাহাজ ডুবির পরে বা অন্য কোনো ভাবে পানির নিচে আটকে পড়ে এতো দির্ঘ সময় পর বেঁচে ফেরার এটাই প্রথম রেকর্ড নয়। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটছে। জাহাজ ডুবির পরে পানির নিচে একটা এয়ার বাবলের মধ্যে আটকে ৬০ ঘন্টার বেশি সময় সার্ভাইভ করছে হ্যারিসন অকেনে। আপনার অক্সিজেন এবং তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায় থাকলে জাহান্নামে গিয়াও বাঁচতে পারেন। এইখানে তো একটা জাহাজ মাত্র। জাহাজ উল্টাইয়া যাওয়ার সময় ভদ্রলোক ছিলো শিপের ওয়াশরুমে। একদম ১৮০ ডিগ্রি এঙ্গেলে উলটানোর কারনে রুমের মধ্যে থাকা অক্সিজেন বের হইতে পারে নাই। তাই সে সার্ভাইভ করতে পারছে। নাইজেরিয়ান এই ভদ্রলোক UK News-এর সাক্ষাৎকারে যা বলছিলো,
“All around me was just black and noisy. I was crying and calling on Jesus to rescue me, I prayed so hard. I was so hungry and thirsty and cold and I was just praying to see some kind of light.”
এরপরে আসেন থাইল্যান্ডের 'থাম লুয়াং' গুহায়। যার মধ্যে ১৩ আটকে পড়েছিলো ২০১৮ সালে। বৃষ্টির পানিতে পুরা গুহা ভরে গেলেও ১৮ দিন তারা বেঁচে ছিলো। কেমনে? এতো পানির চাপে তো ছাতু হওয়ার কথা ছিলো। এইখানেও এয়ার বাবল সাহায্য করছে। কিন্তু কথা ছিলো বৃষ্টির পানি পুরো সরে না গেলে তাদের বাইরে আনবে না। আনাটা হাইলি রিস্কি।কিন্তু এয়ার বাবলে অক্সিজেনের পরিমান কমে এসেছিলো। ১৮% এর নিচে নামায় তাদের তখনই একটা ডাইভিং অপারেশন করে আনা হয়।
চাইলে একটা মুভি দেখতে পারেন। The Poseidon. এইরকম এয়ার বাবলে তারাও কয়েক ঘণ্টা বাইচা আছিলো।
তো এইবার আশাকরি বুঝতে পারছেন, শ্যামবাজার ঘাটে ১৩ ঘন্টা পানির নিচে থাকার পরেও সেইম ওয়েতে একজন বাঁচতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৩৯