গত পরশু রাতের ১টা ৪০এ ক্যাম্পাসের এক বান্ধবীর (একাডেমিক দিক থেকে সিনিয়রের) কল রিসিভ করলাম। ওপাশ থেকে ভয়ার্ত গলায় ও বলল, দোস্ত একটু ঝামেলায় আছি। একটু সাহায্য কর। ভাবলাম ওর পরিবারের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলো কিনা! IEDCR'র নাম্বার লাগবে নাকি! কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করাতে ও বলল ওর তলপেটে প্রচুর ব্যথা হচ্ছে। তবে মিন্সট্রুয়াল ঝামেলা নয়। ঘুমিয়েছিলো, সাডেনলি ও ফিল করতে পারলো যে ও বিছানাতেই মুত্র বিসর্জন করেছে। তবে ফিল করতে পারেনি। বেডশিট একবার চেঞ্জ করে ফেলেছে। দশ মিনিটের মধ্যেই ঘটনা আবার ঘটলো। সঙ্গে তলপেটে প্রচুর ব্যথা। এর পর থেকে ইউরিনারি ব্লাডার থেকে বারবার ব্লাড-রেড ইউরিন বের হচ্ছে। আমি বললাম আমি ডক্টর না। এটাতো গায়নিকলজিক্যাল ঝামেলা মনে হচ্ছে। কী করতে পারি? আন্টি-আঙ্কেলকে জানালে হয়না? ওর উত্তর আরো হরিফিক। বললো বাবা-মা এসব বিষয়ে ফ্রি না। বড়বোন বাসায় নেই। ওর মাকে জানাতে পারে, তবে লজ্জা লাগছে। বুঝলাম না কী করবো। ধরিয়ে দিলাম একজন গায়নেকলোজিস্টের নাম্বার। বললাম কনফারেন্সে কল করতে। আমার ফোনে টাকা নেই। পরিচিত ডক্টর সে। যাতে করে সে রেগে না যায়। তাই হলো। প্রথমে আমি ডক্টরকে বললাম আমি রাফিন জয়। তারপর বন্ধুকে বললাম তুই কথা শেষ হলে আবার কল করিস আমায় (ডক্টর আর পেশেন্টের মাঝে থাকাটা মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়।) আমি ফোন রেখে দিলাম। ডক্টর আর ওর মধ্যে কথা হওয়ার পর ডক্টর নিজে ওর মার নাম্বারে কল করে জানিয়েছে। তারপর শুনলাম ওকে নিয়ে নাকি সেই রাতেই হসপিটালে যেতে হয়েছে। এখন সে সুস্থ আছে।
ভয়ঙ্কর বিষয় এটাই যে, শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে বা একটা নিয়মিত ন্যাচারাল সার্কেল অথবা শারীরিক জটিলতা সম্পর্কে সার্বিকভাবে বাঙালি পরিবার কতোটা স্টিগমাটাইজড! এই বিষয়ে কেউ স্টাডিও করতে চায়না।
[বিঃদ্রঃ পোস্ট লেখার জন্য ওর কাছে পার্মিশন নিয়েছি। তবে প্রাভেসি কন্সার্ন থাকায় নিজে থেকে নাম প্রকাশ করছিনা।]
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১২