জাপানের ভুমিকম্প-সুনামী-পারমানবিক বিস্ফোরণ কবলিত এলাকার বাংলাদেশীদের বলছি - আপনারা যদি আপনাদের জায়গাকে নিরাপদ মনে না করেন তাহলে ওসাকার দিকে চলে আসতে পারেন। ওসাকাকে এখন পর্যন্ত নিরাপদ মনে করছি। গতকাল টোকিও থেকে কিছু বাংলাদেশী এখানে এসেছেন, আরো কিছু আসছেন। এখানে আমরা তাদের থাকার জন্য ওসাকা উইনিভার্সিটির কাছে ওসাকা মসজিদ ব্যবহার করছি। এখানে হালাল খাবার কেনা ও রান্না করার ব্যবস্থা আছে। এখানকার লোকাল জাপানীজরাও আমাদের সাথে আছেন, তাদের সহায়তায় আমরা এখানকার একটা স্কুল এবং একটি সিটি হলও বুক করেছি।
প্লিজ আতংকিত হবেন না বা আতংক ছড়াবেন না। । কিন্তু যারা আসলেই ঝুকির মধ্যে আছেন বা যাদের পরিচিতজন ঝুকির মধ্যে আছেন তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে দ্বিধা করবেন না।
তোমোদাচিঃ ০৯০-৩৯২০-১০৭৬ (জাপানের বাইরে থেকে ০০৮১-৯০-৩৯২০-১০৭৬)
নুতন রাজাঃ ০৯০-৬৬৭৯-৯৪৫৪ (জাপানের বাইরে থেকে ০০৮১-৯০-৬৬৭৯-৯৪৫৪)
সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন !!
আপডেট (স্থানীয় সময় ১৭.৪০, ১৬ই মার্চ)
সামুতে পোষ্ট দেখে ক'য়েক জন আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং এখানে আসছেন।
এখানে আগত বাংলাদেশীদের পাশেই একটি স্কুলে (কোরিয়ান ইন্টারন্যশনাল স্কুল) স্থানান্তরিত করা হয়েছে। মসজিদে অন্যদেশের আরো লোক আসাতে একটু গ্যঞ্জাম হয়ে গিয়েছিল। এই স্কুলে থাকা, রান্না করা, গোছল করা, ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করা সহ সব ধরনের সুব্যাবস্থা আছে। এখানে আরও কমপক্ষে ১০০ লোকের থাকার ব্যবস্থা করা যাবে।
আরো একটা ভাল খবর হলো, এখানকার "জাইকা" তে ৭০ টি রুম খালি আছে যা তারা ভুমিকম্প-ভিক্টিমদের জন্য প্রতি রাত ১৩০০ ইয়েন করে ভাড়া দিতে রাজি হয়েছে। জাইকা'র রুম গুলোতে সব ধরনের আধুনিক সুবিধা আছে। তারা অবশ্য বলেছে এম্বাসি থেকে হেল্প করার কথা লিখিয়ে আনতে পারলে তারা সেটা ফ্রি দিবে। কিন্তু আমরা সেটা করার পক্ষপাতি নই, আমরা এখনও এতটা বিপদে পড়িনি যে অন্যের করুণা নিতে হবে!
ফেস বুকে "Network of Bangladeshi people in Emergency in Japan" নামে একটি গুরুপ খোলা হয়েছে। জাপানে পরিচিত জনের সাথে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করা রইল!
Click This Link
আপডেট (স্থানীয় সময় ১১.৫০, ১৭ই মার্চ)
গতকাল রাতে আরো ৫ জন বাংলাদেশী আমাদের এখানে এসেছেন এবং সবাই ভাল আছেন। রাত্রে সবাই মিলে খিচুড়ী-মাংশ ভুনা রান্না করে একসাথে খাওয়া হয়েছে। আজ ওনারা সারাদিন ওসাকা ঘুরবেন, দুপুরে বাইরে খাবেন এবং সন্ধায় ফিরে আবার রাতের রান্না করবেন। সব নেগেটিভ জিনিসের একটা পজিটিভ দিকও থাকে, এই সুযোগে অনেক বাংলাদেশীর একসাথে ক'দিন থাকা হলো, আড্ডা গল্প হলো, আমাদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ল এবং এই সাথে ওসাকাও বেড়ানো হলো!

দুটি জিনিস বলা প্রয়োজনঃ
আমাদের (ওসাকা ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশীদের) এই উদ্যোগকে কোন ভাবেই 'ত্রানকেন্দ্র' টাইপের কিছু ভেবে বসবেন না প্লিজ! এটা জাষ্ট একটা ফ্রেন্ডলি এরেঞ্জমেন্ট; এখানে যারা এসেছেন বা আসছেন তারা কোন না কোন ভাবে আমাদের ফ্রেন্ড। আমাদের বন্ধুদের সম্মানের কথা ভেবে আমরা তাদের ফ্রি খাবারের প্রস্তাব দেইনি। তারা এখান থেকে খাবার কিনছেন এবং নিজেরা রান্নাবান্না করে খাচ্ছেন, আমরাও তাদের একজন হয়ে তাদের সাথে কাজ করছি। তবে, কেও যদি এই মুহুর্তে আর্থিক সংকটে থাকেন, কোন চিন্তা করবেন না, আমাদের একটু জানালেই হবে খাবারের টাকাটা দিতে হবে না।
প্রথমেই বলেছিলাম, দয়া করে কেও গুজবে কান দিবেন না বা গুজব ছড়াবেন না। কিন্তু আমাদের মাননীয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অলরেডী গুজবে বাতাস লেগেছে। উনার বক্তব্য জাপানে ওতটা প্রভাব না ফেল্লেও বাংলাদেশে তা খুবই ইফেক্ট করেছে - প্রতিমুহুর্তে দেশ থেকে উদ্বিগ্ন আত্বীয় স্বজনের ফোন থেকে তা ষ্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আগবাড়িয়ে দুতাবাস সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত এখানে বসবাসকারী বাংলাদেশী এবং বন্ধু প্রতিম দেশের বিপদের সময় কতটা প্রভাব পড়েছে তা সাংবাদিক মঞ্জুরুল হক আজকের এই লেখাটি পড়লে বুঝতে পারবেন।
Click This Link
আমরা বাংলাদেশ সরকার বা এখানকার এম্বাসীর কাছে সাহায্য চাওয়ার মত এতটা বিপদে এখনও পড়িনি । আমরা ভাল করেই জানি বিপদে পড়লে বাংলাদেশের চাইতে জাপান সরকারই আমাদের জন্য অনেক অনেক বেশী উপকার করতে পারবে। বাংলাদেশ সরকার এবং গণমাধ্যমের কাছে বিনীত অনুরোধ, আমাদের সাহায্যের দরকার নেই, দয়া করে গুজব ছড়াবেন না; আর জাপানীজদের কাছে আমাদেরকে অকৃতজ্ঞ জাতি হিসাবে পরিচিত করাবেন না।
আপডেট (স্থানীয় সময় ১৬.০৫, ১৮ই মার্চ)
এখানে অবস্থানকারী সকল বাংলাদেশী ভাল আছেন এবং তারাও আমাদের সাথে ভলান্টিয়ারী কাজে যোগ দিয়েছেন।
আজ সন্ধা নাগাদ একটা বাচ্চা সহ আরো ৭ জন এখানে আসছেন। একটা ফ্যামিলিকে জাইকা'তে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গতকাল সন্ধায় লোকাল জাপানীজদের সাথে আমাদের মিটিং ছিল; ওরা এলাকার কিছু খালি বাসা নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং কিছু ভাল রেচপন্সও পেয়েছে, ফাইনালী দু'এক দিনের মধ্যে জানা যাবে।
"ইবারাকি" সিটি কতৃপক্ষ বিদেশীদের সাহায্য করার জন্য একটি হেল্পলাইন খুলেছে। ওরা আমাদের সাথে কাজ করছে, কিন্তু যে কেও এই নাম্বারে ফোন করে বিস্তারিত খোজ নিতে পারেন। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাপানীজ এবং ইংলিশ দুই ভাষাতে কথা বলা যাবে।
আই সেন্টার, ইবারাকি সিটি অফিসঃ ০৭২৬৪৩২০৬৯
জাপানে বসবাসরত সমগ্র বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে এই মুহুর্তে কিছু করা যায় কিনা সে সম্পর্কে এই গ্রুপে একটি প্রস্তাব আছে। আপনাদের অংশগ্রহন কামনা করা হয়েছে।
Click This Link&ap=1
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:১২