somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গাছেরটা খেয়েছে এবার তলার টা ও চাই: প্রসঙ্গ শেয়ার বাজার

০২ রা অক্টোবর, ২০১১ সকাল ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেয়ার বাজারের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। গত ৯ মাস ধরে চলা ছোট-বড়-মাঝারি পতনের তোড়ে অনেকেই সব হাড়িয়ে পথে বসেছে। বিশেষত যারা মার্জিন লোন নিয়ে রাতারাতি কোটিপতি হতে চেয়েছেন তাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। ঋণ করে ঘী খেতে গিয়ে এখন তাদের মুখ পোড়া অবস্থা।

ভাবুন একবার ১:২ অনুপাতে ২০১০ এর শুরুতে ঋণ দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুল, যেখানে অন্যান্য খাতে ১:১ অনুপাতে ঋণ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। এই একই ব্যাংক গ্রাহকের ১ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা লোন দিলেও শেয়ার-মার্কেটে এলেই ঐ গ্রাহক ১ লাখের বিপরীতে লোন পেয়েছে ২ লাখ টাকা। আর বলাই বাহুল্য যে, ১ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের চাইতে ১০ গুন ঝুকিপূর্ণ সম্পদ হল ১ লাখ টাকার শেয়ার। তাই বুঝতেই পারছেন যে কী আকারের বাবল সৃষ্টি করা হয়েছিল ২০১০ এর শেয়ার বাজারে। বেলুন ফুটো হওয়ায় এখন সবার মাথাতেই হাত।

নতুন ফর্ম হওয়া এসইসি ও ডিএসসি'র শত চেষ্টা সত্যেও ঋণের ফাদে আটকে যাওয়া সপ্নবাজ বিনীয়োগকারী ও অতিব্যাবসায়ী ব্যাংক উভয়ই নিজেদের খোড়া গর্তে পড়েছে যে বাজার ২ দিন উঠে ত ৬ দিন নামে ঠিক বানর ও তৈলাক্ত বাশের অংকের মতই অবস্থা।

মরার উপর খড়ার ঘা হয়ে ডিএসসি'তে আবার ফিরে এসেছে সালমান এফ রহমান ও রকিবুর রহমান। পাঠক নিশ্চই অবগত আছেনে যে, এই দু-জনকেই ৯৬ ও ২০১০ এর পতনের জন্য দায়ী করা হয়। বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হলেও ইনাদের ব্যবসায়ীক বুদ্ধির তারিফ করতে হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে প্লসেমেন্ট শেয়য়ার, প্রেফারেন্ছ শেয়ার ও ডাইরেক্ট লিস্টিং এর মাধ্যমে এরাই হরিলুট করেছে ২০১০ এ, যা সরকারী তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ও উঠে এসেছে।

অভিযুক্ত হওয়া স্বত্যেও এরা কী ভাবে ডিএসই'র পরিচালক হলেন, তা আমাদের অর্থ ও প্রধান মন্ত্রীই জানেন। ফিরে এসেই এরা নতুন ব্যবসায়িক আইডিয়া নিয়ে হাজির হয়েছে।

Click This Link

বাজার চাঙ্গা থাকার সময় বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কেনার পর বাজার পড়ে যাওয়ায় অনেক বিনিয়োগকারীই বিপাকে পড়েন। শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় তারা তা বিক্রি করতে পারছেন না। অন্যদিকে তাদের ঋণের সুদও বাড়ছে। আবার মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর টাকাও আটকে থাকছে। এই পরিস্থিতিতে এক ধরেনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বাজারে।

এ কে আজাদ জানান, বেসরকারি ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ছাড়াও বেসরকারি খাতের বিভিন্ন সংগঠন এই তহবিল গড়তে অর্থায়ন করবে। যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কেনার পর দাম কমে যাওয়ায় বিক্রি করতে পারছেন না, তাদের কাছ থেকে সেই পোর্টফোলিও কিনে নেবে এই তহবিল। বিনিময়ে টাকার বদলে তাদের দেওয়া হবে একটি 'ইউনিট সার্টিফিকেট', যা পুঁজিবাজারে লেনদেনও করা যাবে।
'



আইডিয়াটা ভাল নিঃসন্দেহে কারন এতে অন্তর্ত ঋনে আটকে যাওয়া মার্চেন্ট ব্যাংক ও বিনীয়োগকারী উভয়েরই ঋণ মুক্তি ঘটবে। প্রস্তাবিত এই ফান্ড ইতিমদ্ধেই আগামী ২ বছরের জন্য সুদ মৌকুফের জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশে ব্যংকে। বিশেষ কোন ব্যাত্যয় না ঘটলে এরা অনুমোদোন পেয়েও যাবেন।

এবার আসুন এত ভালর মাঝে কেন আমি চিন্তিত হচ্ছি তার ব্যাখ্যা দেই। ৫ শ কোটি টাকার এই ফান্ড যদি ৩ শ কোটি টাকার পোর্টফলিও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কিনে নিতে সক্ষম হয় (এর বিপরিতে গ্রহক টাকা নয় বরং ফান্ডের ইউনিট শেয়ার পাবে) এবং বাকি টাকায় (এই টাকাই উদ্দোগতারা ইনভেস্ট করবেন) নতুন শেয়ার কিনে মূল্য সমন্বয় (এভারেজিং) করে নিতে পারে তবে বাজারে তারা একটি সাময়িক চাহিদা সৃষ্টি করতে পারবে আগামী ১-২ বছরে। আর যেহেতু এই সময়ে সুদ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না সেহেতু এই ফান্ড তাদের হাতে থাকা কোন শেয়ার মার্কেটে বিক্রি ও করবে না। ফলে অবধারীত ভাবেই দাম বাড়তে থাকবে।

ইতিমধ্যেই বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক খুদ্র বিনীয়োগকারী সরে গেছে, অবশিষ্টদের ও এই ফান্ডের মাধ্যমে ভার্চুয়ালী মার্কেট থেকে বের করে দেয়া হবে; কারন তাদের হাতে থকবে এই ফান্ডের ইউনিট, কোন শেয়ার নয়। পাঠকরা বিশেষত শেয়ারবাজারের খোজ-খবর যারা রাখেন তারা নিশ্চই শেয়ার ও মিচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটের তফাত বোঝেন। এতে যা হবে তা হলো বাজারে তখন থাকবে - ১। মার্চেন্ট ব্যংক ২। মিচ্যুয়াল ফান্ড ও ৩। আমার মত কিছু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী যারা তাদের সেভিংসের একটি অংকশ শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন।

৩য় শ্রেণীর বিনিয়োগকারী অন্তর্ত লস দিয়ে শেয়ার হাত ছাড়া করবেন না আর যেহেতু তারা শেয়ার থেকে আসা আয়ের উপর সরাসরি নির্ভরশীল নয় সেহেতু বাজার পড়ে গেলেও তারা মতিঝিলের রাস্তায় ভাংচুর-আন্দলন করতে নামবে না। আর মার্চেন্ট ব্যংক ও মিচ্যুয়াল ফান্ডের মত ইনিস্টিটিউট ও তাদের বিনীয়োগ নিরাপদ রাখার জন্য বাজারকে একাটা নির্দিষ্টা মাত্রার নিচে পড়তে দেবেনা।

ফলে আগামী ২ বছর বাজার হবে তুলনামূলক স্থিতিশীল যা সরকারের জন্য (নির্বাচন) ও বড় বিনীয়োগকারীদের জন্য সুখবর হবে করন আবার তাদের হাতে থাকা শেয়ারগুল কেনা মূল্যের দ্বীগুনের কাছাকাছি চলে আসবে বিক্রির চাইতে কেনার প্রেসার বেশি থাকায়।

বাজার থেকে আউট হয়ে যাওয়া অথবা নতুন মফিজরা তাদের সহায়-সম্পদ বেচে দিয়ে, চাই কি ১:২ লোন নিয়ে, আবার মার্কেটে ফেরত আসবে এবং বড় খেলয়ারেরা আবার তাডের হাতে থাকা শেয়ারগুল মফিজদের হাতে গছিয়ে দিয়ে সল্প সময়ের জন্য মার্কেট থেকে কেটে পড়বে।

এভাবে কি একই কাহিনী বার বার নতুন আঙ্গীকে অভিনীত হতে থাকবে ? লুটেরা শ্রেনী কি বার বার ক্ষুদ্র ও দূর্বলকে লুট করতেই থাকবে ? এর কি কোন সমাধান নেই ?

নিতীনির্ধারকদের কাছে শুধু একটাই জিজ্ঞাসা, প্রাস্তাবিত এই ফান্ড যদি ২ বছরের জন্য ঋণ মৌকুফ সুবিধা পায় তবে কেন মার্জিন লোনের খাড়ায় আটকে যাওয়া ক্ষুদ্রবিনীয়োগকারীরা তা পাবে না ? কেন তাদের ঋণের সুদ ও আসল ২ বছরের জন্য স্থগিত করা হবে না ? এড় ঝড়ের পড়েও যারা তাদের শেয়ারগুল বিক্রি করে নি, তাদের ধৈর্যের মেওয়া কেন 'উদ্ধারকারী ফান্ড' এর উদ্দোগতা ব্যাংক ও বীমা সংগঠন, এফবিসিসিআই ও বড় বিনীয়োগকারীদের পকেটে যাবে?

এই ফান্ড যদি সুদ মৌকুফ সুবিধা পায় তবে একই সুবিধা ফান্ডে অংশগ্রহনে অনিচ্ছুক ঋণগ্রস্থদের ও পাওয়া উচিত। নইলে ক্ষদ্র বিনীয়োগকারীদের ধৈর্যের সুফল আবার ও লুট হয়ে যাবে, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসইসি ও ডিএসই উভয়ের উচিত সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা। রকিবুর রহমান ও সালমান এফ রহমানের ভুত সাওয়ার হওয়া এসইসি ও ডিএসই কি তা পাড়বে ? ঘর পোড়া গরু কিন্তু সিদুর রঙ্গা মেঘ দেখলেই ভয় পায়, আমরা ও ভিত এই দুই রহমানের দৌড়ঝাপ দেখে .............


প্রথম প্রকাশ : http://dse-amateurs.blogspot.com
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ১২:১৭
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নানী-নাতির প্রেম ( ১৮+)

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:৪৬


প্রেম ও ভালবাসা প্রায় কাছাকাছি অর্থ প্রকাশ করলেও এদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য আছে বাংলা ভাষায়। সাধারণত আমরা প্রেম শব্দটি ব্যবহার করি সবচেয়ে বেশি যখন কোনো সম্পর্কের মধ্যে জৈবিক চাহিদা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং আমার ভাব্না...

লিখেছেন মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:১০

সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ জন

১৮ থেকে ২৯ বছরের ভোটারঃ ৩ কোটি ৪ লাখ ৭ হাজার (২৪.৪২%), এদের জন্ম হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রেম, ফর্সাত্ব ও ভূয়া খবর: বাংলাদেশি বিজ্ঞাপনের ‘থ্রিলার’ ট্রিলজি

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:০৭



‘বিজ্ঞাপন (Advertisement)’ শুধুমাত্র একটি পণ্য বিক্রি বা একটি সেবা প্রদান করে না। বাংলাদেশের জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনগুলো একটি চিন্তা বা ধারণা প্রকাশ করে থাকে। একটি গল্প বলবার চেষ্টা করে। প্রশ্ন হলো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

”ঈশ্বরের ভুল ছায়া” - যখন ঈশ্বরও মেনে নেন, তিনি নিখুঁত ছিলেন না।

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:১৩


"আলো সবসময় সত্য নয়। কখনো কখনো ছায়াই বলে দেয়—কী ভুল ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনায়।"

ধরুন, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপনি হঠাৎ দেখলেন—আপনার প্রতিবিম্ব মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
অথবা, নদীর জল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি ইউনুস সরকারকে সফল নাকি ব্যর্থ মনে করেন?

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



ইউনুস সাহেব মেহমান। উনি এসেছেন স্বল্প সময়ের জন্য।
নির্বাচনের পরে উনি টাটা বায় বায় খতম। উপদেষ্টাদের থাকার নিয়ম তিন থেকে ছয় মাস। ৯০ দিনের মধ্যে তারা একটা নির্বাচন দেবেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×