লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : সাইন্স ফিকশন উপন্যাস
সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট
কাহিনী সংক্ষেপ :
খুবই সাধারণ একজন লোক, সামান্য চাকুরি করে। হঠাৎ করেই সে একটা বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধানের কাছ থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ছিলসম্বলিত একটি চিঠি পায়। তাকে বিজ্ঞান কেন্দ্রে ডেকে পাঠান হয়েছে। সেখানে গিয়ে সে জানতে পারে তাকে একটি মহাকাশ অভিযানে মহাকাশযান গ্যালাক্সি টু তে আরো সাতজন বিশেষজ্ঞ ক্রুদের সাথে পাঠান হবে। এই মহাকাশযানটি হাইপার জাম্প দিয়ে গ্লাক্সির বাইরে চলে যাবে, ফলে সে আর কখনো পৃথিবীতে ফিরা আসবে না। ফিরে আসলেও এই চেনা পৃথিবী পাবেনা, হাইপা জাম্পের কারণে পৃথিবীতে কয়েকশো বছর কেটে যেতে পারে। এই অভিযানে তাকে নির্বাচন করা হয়েছে কারণ তার রয়েছে অসাধারণ ইএসপি ক্ষমতা, যা সে নিজেই জানে না।
সে আর নিকি দু’জন দু’জনকে খুব ভালবাসে, বিয়ে করে ঘর বাঁধার ইচ্ছে। বিজ্ঞান কেন্দ্রে যাওয়ার পর থেকে তাকে আর নিকির সাথে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি। ৭ দিন পরে যখন তাদের মহাকাশযান যাত্রা শুরু করবে তখন তাকে নিকির সাথে ফোনে কথা বলতে দেয়া হয়। অনেকক্ষণ কথা বলার পর যখন লাইনটা কাঁটে তখন তার মনে হয় সে আসলে নিকির সাথে কথা বলেনি, সে যার সাথে কথা বলেছে সেটা কোন যন্ত্র। সে আসলে একটা সুপার কম্পিউটারের সুপার প্রোগ্রামের সাথে কথা বলেছে। এটাই তার ক্ষমতা। সে কোনো কারণ ছাড়াই অনেক কিছু বুঝতে পারে।
জীববিজ্ঞানী ইনো আল্প বয়সী হাসি খুসি চমৎকার একটি মেয়ে। ইনো আসে ওর ক্ষমতা পরীক্ষা করতে। ইনো জেকেটের পকেটে তিন লাইনের একটা কবিতা লিখে নিয়ে আসে, উনি সেটা বলতে পারেন কিনা দেখার জন্য। যদিও উনি কবিতাটিতে কি লেখা আছে সেটা বুঝে যায় তবুও ইনোকে সেটা বলে না।
উনার হঠাৎ করে মনে হলো কোন একটা সমস্য হয়েছে, কোন একটা মহাশক্তি তাদের মহাকাশযানকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি তার সন্দেহের কথা ক্যাপ্টেনকে জানালেন কিন্তু ক্যাপ্টেন সেটা আমলে নিলেন না, কারণ ক্যাপ্টেন ওর ইএসপি ক্ষমতায় বিশ্বস করেন না। ঘন্টা খানেকের মধ্যে মহাকাশযানে বিপদ সংকেত লালবাতি দেখা গেল, দেখতে দেখতে সেটা মহা বিপদের ৩টি লাল আলো জ্বলে উঠলো। একপর্যায়ে প্রবল টানের কারণে মহাকাশযানটিতে বিস্ফোরণ শুরু হলো, এবং তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। বিস্ফোরণে মহাকাশযানটি ধ্বংস হয়ে গেলো।
হঠাৎ করেই উনার চেতনা ফিরে এলো ভয়াবহ অন্ধকারে। কিন্তু সে নিজেকে বুঝতে পারলো না। মহাকাশযান ধ্বংস হওয়ার সাথে সাথে তাদের সবাই মারা যাওয়ার কথা। কিন্তু সে বেঁচে আছে। কোন অতি বুদ্ধিমান চতুরমাত্রিক প্রাণি তাকে বাঁচিয়ে তুলেছে। তাকে নতুন করে তৈরি করেছে। তার সাথে সাথে মহাকাশযানের বাকিদেরও তৈরি করেছে। যদিও শুধু মাত্র ইনোর সাথে তার দেখা হওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলো প্রাণীগুলি। আসলে প্রাণীগুলি একা আবার অনেকে এক সাথে, ব্যাখ্যার অতীত চতুমাত্রিক প্রাণী।
চতুমাত্রিক প্রাণী অন্যদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি শুধু তার সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছে, কারণ তার বিশেষ ইপিস ক্ষমতা আছে। প্রাণীগুলি তাদের কৌতুহল মেটানোর জন্য তার বান্ধুবী নিকিকে তৈরি করে তার সামনে পাঠাল। নিকিকে পেয়ে সে খুবই খুসী হলো। তারপরেও সে পৃথিবীতে ফিরে যেতে চাইলো। প্রাণীগুলি বললো তার আর নিকির জন্য তারা আলাদা নতুন একটি গ্রহ তৈরি করেছে যেখানে সে আর নিকি নতুন আতি উন্নত মানব সম্পদায়ের বিস্তার করতে পারেবে।
পরীক্ষার জন্য প্রাণী গুলি তারই মতো আরো একজন তৈরি করলো, এখন নিকির সামনে একই ব্যাক্তির দুইটি কপি দাড়িঁয়ে আছে। বিচিত্র পরিস্থিতি তৈরি হলো, তারা দুজনেই আসল, আবার দুজনেই নকল। নিকি কি করবে? প্রাণীগুলি প্রস্তাব দিলো তাকে আর নিকিকে নতুন গ্রহে যাওয়ার জন্য, কিন্তু সে পুরনো পৃথিবীতেই ফিরে যেতে চাইলো। মহাকাশযানের বাকি সদস্যদের জন্য মহাকাশযানটি তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু সে মহাকাশযানে যেতে চাইলো না। প্রাণীগুলি বললো, তাকে পৃথিবীতে পাঠালে মাত্রা ভেঙ্গে পাঠাতে হবে, তাতে করে কিছু ঝামেলা হতে পারে। তার পরিচিত পৃথিবীতে কিছুটা পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। তারপরেও সে সরাসরি পৃথিবীতে যেতে চাইলো।
প্রাণী গুলি তাদের তৈরি করা নিকি আর তার আরেক কপিকে নতুন গ্রহে পাঠিয়ে দিলো নতুন মানব সম্প্রদায় উদ্ভাবনের জন্য। মহাকাশযান আবার তাদের মিশনে চললো। আর উনি নিজের পৃথিবীতে নিজের বিছানায় চোখমেলে চাইলেন। তারকাছে মনে হলো পৃথিবীতে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। ক্যালেন্ডারে তাকিয়ে দেখলো এপ্রিল মাস। আর তিনি মহাকাশে রওনা হয়েছিনে জুনের ৩০ তারিখে। অথাৎ তিনি দুমাস পিছিয়ে পৃথিবীতে এসেছেন।
রাতের ১২টায় তিনি নিকির নাম্বারে কল করলেন। ঘুম জড়ান কন্ঠে নিকি জানতে চাইলো কে বলছেন। তিনি বললেন আমি, চিন্তে পারছো না? নিকি বিরক্ত কন্ঠে বললো - আবার আপনি এত রাতে ফোন করে বিরক্ত করছেন? তিনি শুনতে পেলেন ঘুম জরান কন্ঠে কোন এক পুরুষ জিজ্ঞাস করছে, কে ফোন করেছে? নিকি বললো ঐ বদমাশটা আবার রাত দুপুরে ফোন করেছে।
পরদিন সকাল ঘুম থেকে উঠে সে বিজ্ঞানকেন্দ্রের সেই গুরুত্বপূর্ণ চিঠটি পেলো। কিছুক্ষণ পরে সে নিকি যেখানে চাকরি করতো সেখানে গেলো, তাকে দেখে নিকি বল উঠলো। আপনি কেন প্রতি বছর এপ্রিল মাসে রাত ১২টায় ফোন করে পরদিন সকালে দেখা করতে আসেন? সারা বছর আর কোন খোঁজ থাকে না!!
উনি বুঝতে পারলেন যে উনার সাথে সাথে এই গোটা পৃথিবীটাই একটা ভয়াবহ চক্রে আটকা পরে গেছে। প্রতি বছর জুনের ৩০ তারিখে তিনি একটি মহাকাশযানে করে রওনা হবেন। আবার তার ঘুম ভাঙবে এপ্রিলে, নিকিকে রাত ১২টায় ফোন করবেন, সকালে তিনি হাতে পাবেন বিজ্ঞান কেন্দ্রের চিঠি, নিকির সাথে দেখা করবেন, আবার জুনের ৩০ তারিখে,,,,,,,,,,
----- সমাপ্ত -----
=======================================================================
আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
১৯৭১ - হুমায়ূন আহমেদ
অচিনপুর - হুমায়ূন আহমেদ
অয়োময় - হুমায়ূন আহমেদ
অদ্ভুত সব গল্প - হুমায়ূন আহমেদ
অনিল বাগচীর একদিন - হুমায়ূন আহমেদ
অনীশ - হুমায়ূন আহমেদ
অন্যদিন - হুমায়ূন আহমেদ
অন্যভুবন - হুমায়ূন আহমেদ
অন্ধকারের গান - হুমায়ূন আহমেদ
আজ আমি কোথাও যাব না - হুমায়ূন আহমেদ
আজ চিত্রার বিয়ে - হুমায়ূন আহমেদ
আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ - হুমায়ূন আহমেদ
গৌরীপুর জংশন - হুমায়ূন আহমেদ
হরতন ইশকাপন - হুমায়ূন আহমেদ
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ
ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:২৩