somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ও আমার কিছু স্মৃতি

২১ শে মার্চ, ২০১২ রাত ৯:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তখনও সবকিছু ভালমত বুঝে উঠতে শিখিনি।এখন বুঝতে পারছি সেটা
১৯৯৭ সালের দিকে। একদিন দেখলাম বড় ভাই বাসায় আসছে,দুপুরের দিকে হবে।সারা শার্ট রং এ ভর্তি। জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে??বলল বাংলাদেশ নাকি আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন ।

তখনও ক্রিকেট টিম এর কথা জানতাম না।আইসিসি ট্রফি কি তাও বুঝতাম না।আকরাম খান,নান্নু,আমিনু,পাইলট কারও কথায় জানতাম না।দেখলাম বাসায় যারা আছে,সবাই নাচতেছে।
আমিও না বুঝেই তাদের দলে যোগ দিলাম।

আস্তে আস্তে শুরু হল ক্রিকেট প্রেম।সারাদিন খেলার মাঠে পড়ে থাকতাম।
সব প্লেয়ার দের চেনা শুরু হল।লোকাল হিরে হবার কারণে আকরাম আর নান্নু ছিল আমার ফেবারিট।
নান্নুকে যখন রাজনৈতিক কারণে টেষ্ট খেলা থেকে বঞ্চিত করল খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।
বাহাতি পেস বোলার ছিলাম,তাই আকরাম খার খুব ফেবারিট ছিল।

এরপর আসল ৯৯-এ বিশ্বকাপ ক্রিকেট।
মজে গেলাম বিশ্বকাপে।এরপর স্কটল্যান্ডের সাথে বিশ্বকাপের ১ম ম্যাচ জয়।চরম স্নায়ুক্ষয়ী সেই ম্যাচে নান্নুর অর্ধশতকে মোটমুটি একটা ভালো স্কোর হয়ে গেলেও হ্যামিলটন যখন প্রায় ম্যাচটা বের করে নিয়ে যাচ্ছিল সেই নান্নু আবার উদ্ধারকর্তা।
অবশেষে বিশ্বকাপের ১ম জয়।।।।

এরপরে ত ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড় অঘটনটাই ঘটিয়ে দিলাম পাকিস্তানকে হারিয়ে।
সেই দিনের আনন্দ কি আর অন্য কোন ম্যাচে পাওয়া যাবে???


এরপর ২০০৩ বিশ্বকাপ।
মিনোজের তকমা ঝেড়ে ফেলে ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন নিয়ে গেলেও হোচট খেয়ে যায় ১ম ম্যাচে কানাডার কাছে।
এই দু:সহ স্মৃতিটা এখনও তাড়িয়ে বেড়ায়।খুব কষ্ট পেয়েছিলাম,রাগ ও হয়েছিল প্রিয় দলের এমন হারে।
শেষ পর্যন্ত কেনিয়ার কাছে হেরে সব সন্মান খুইয়ে দেশে ফেরত এসেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।।


এরপর হোয়াটমোরের হাত ধরে শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস।জয়ের অভ্যাস গড়ে উঠতে লাগল।
আসল ১ম টেষ্ট জয়।একে একে ভারত,অষ্ট্রেলিয়া,শ্রীলংকা পরাশক্তি বধ শুরু হল।কার্ডিফের সেই অবিশ্বাস্যরাত,আশরাফুলের সেঞ্চুরি সব এখনও চোখের সামনে ভেসে উঠে।
পেয়ে গেলাম সাকিব-তামিমদের মত বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন বিজ্ঞাপন।এরপর থেকে মুধুই সামনে চলা।

এরপর ২০০৭ বিশ্বকাপ।
তামিমের বিশাল বাউন্ডারি গুলো ১ম ম্যাচেই ভারতকে ছিটকে দিল টুর্ণামেন্ট থেকে।উঠে এলাম সুপার সিক্সে।
এবার ধরিয়ে দিলাম দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
তবে আয়ারল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর খুব খারাপ লেগেছিল।


এরপর এল সিডন্স যুগ।
আস্তে আস্তে জেতাটা আমাদের অভ্যাস হয়ে গেল।সাফল্য আসতে থাকল একের পর এক।কি ব্যাক্তিগত অর্জন,কি দলগত অর্জন-সবদিক দিয়ে আগের সবকিছুই ছাড়িয়ে গেলাম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওদের মাটিতে হোয়াটওয়াস,নিউজল্যান্ডকে বাংলাওয়াস।।
সাকিবের বিম্বের এক নম্বর অল রাউন্ডার হওয়া,তামিমের উইজডেন বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার হওয়া,লর্ডসের মাঠে সেঞ্চুরি
।।

সিডন্স একটা জিনিস খারাপ লাগত,সে ক্রিকেটারদের ভূলগুলে মিডিয়ায় বলে বেড়াত।আমার মনে হয় এটা বিসিবির দুর্বল অব্যবস্হাপনার ফল।


এরপর এখন স্টুয়ার্ট ল।।
সে কথাবলে কম-কাজ করে বেশি।তার এই দিকটা আমার পছন্দ।
বাংলাদেশ দলের বর্তমান পারফরম্যান্সে য়ে তার অবদান আছে সেটা আমরা হয়ত ভুলে যাচ্ছি।




একটা সময় ছিল যখন প্রতিটা ম্যাচ মানেই ছিল হার।তারপরও প্রিয় দলের খেলা দেখার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা টিভির সামনে বসে থাকতাম।একট্ বলে মিস করতাম না।দরকার হলে ক্লাস ফাকি দিতাম।কত বকা খেয়েছি।
এখন প্রায় নিয়মিতই জিতছি।কিন্তু প্রিয় দলের খেলা পুরোটা দেখার সুযোগ হয় না।তারপরও মন পড়ে থাকে খেলার মাঠে প্রিয় দলের সাথে।

কিন্তু আমরা যারা সাপোর্টার তাদের একটা জিনিস খুব খারাপ লাগে।এজন্য অবশ্য মিডিয়াও দায়ী।
দল যখন জিতে তখন আমরা গলা ফাটিয়ে চিল্লায়।কিন্তু যখন খরাপ সময় আসে তখন গালি দিতেও দ্বিধা করি না।



একটা জিনিস আমাদের মনে রাখা উচিত,জাতীয়ভাবে আমাদের বলতে গেলে কিছুই নেই।আছে শুধু এই প্রিয় ক্রিকেট টিম।এটি ১৬ কোটি মানুষকে হাসায়,কাদায়।বিশ্বের বুকে আমাদের মাথা উচু করে দাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে এই দল ।আমরা যেন এটিকে লোটা কামালদের মত লোভী মানূষদের হাতের পুতুল হতে না দেয়।




তাই অবিরত সমর্থন দিয়ে যায় প্রিয় টিমকে……..
খেলবে তোমরা এগার জন,সাথে আমরা ১৬ কোটি
জ্বলে উঠি এক সাথে


৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমুখী একটি চাওয়া

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২০


মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।

দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।

সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ

লিখেছেন জ্যাকেল , ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×