প্রথমেই বলে নেই যারা প্রেম পিরিতির গান বইলা ভাবতেছেন কষ্ট কইরা একটু ভাল করে শুনার চেষ্টা করে দেখতে পারেন গানটা আবারো। শাহ আব্দুল করিম সাধারণত সহজ সাবলীল ভাষায় গান লেখার চেষ্টা করেছেন সব সময়েই। এই গানেও সেইরকমই সহজ ভাষায় সব কিছু তুলে ধরা শুধু বুঝার ভুল হয় অনেকের। এর বেশি কিছুই না।
"রঙ্গীলা বাড়ই রে তুমি নানান রঙ্গের খেলা খেল
আমি তোমার প্রেমের পাগল তোমায় বাসি ভাল"
রঙ্গীলা বাড়ই এইখানে সৃষ্টিকর্তা। যদি কারো সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস না থাকে সেই ক্ষেত্রে ভিন্ন ব্যাপার। বাড়ই বলতে সৃষ্টিকর্তাকেই বুঝানো হয় আর রঙ্গীলা বলার কারণ তার সকল কর্ম রঙ্গীন। সাদামাটা কিছুই না। শুধু মানুষের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি তা।
"তোমার কর্ম তুমি কর মিছা দোষী আমি
পুরাইতে তোমার বাসনা দেশ বিদেশে ভ্রমি
আমার ঘরে থাক তুমি তোমার ভাবে চল
রঙ্গীলা বাড়ইরে তুমি নানান রঙ্গের খেলা খেল"
এই কথার দিকে দেখতে গেলে আবারো সেই আগের কথায় মানে সকল বাউল তত্ত্ব র মূলে চলে যেতে হয়। সৃষ্টিকর্তার বাস সকল সৃষ্টির মাঝে। আমার দেহের ঘরেই আমার স্রষ্ঠার বাস। তার কথাতেই চলি তার কথাতেই সকল কর্ম সাধন। আমার ঘরে থাকার পরেও তাকে চালনার ক্ষমতা আমাদের নাই।
"করাও কি করি আমি ভাবি দিবানিশি
লোকে বলে কাগায় ধান খায় ব্যাঙ্গের গলায় ফাসী
তোমার লাগি কুল বিনাশী বিফলে দিন গেল"
কি করে স্রষ্টা তার নির্ধারিত সকল কিছুই আমাদের দিয়ে করাচ্ছেন তার চিন্তা ভাবনা করে কখনোই কোন কূল কিনারা করা যায়না সাধারণত। আমরা।যআআ কিছুই করতে চাইনা কেন আসলে যা হবার তাই হবে। "We can only wish but cann't change our fate" যত কিছুই করিনা কেন দিন শেষে সেই একই জায়গায় ঘুরে ফিরে এসে ঠেকতে হয় সবাইকে।
"যাক না জাতি হোকনা ক্ষতি দুঃখ নাইরে আর
সত্য করে কও রে বাড়ই তুমি নি আমার
তোমার প্রেমে আব্দুল করিম মরে যদি ভাল"
স্রষ্টার সাথে সম্পর্ক প্রত্যেক সৃষ্টির একটি প্রেমময় সম্পর্ক। তাতে জাতি কুল মান কোন কিছুরই বাধা থাকেনা। বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিমও তাই চেয়েছিলেন সব সময়ে। স্রষ্টার সাথে তার সেই সম্পর্কের মাঝে কোন বাধা বিপত্তিকেই কোন বাধা মনে করেন নি কখনোই।
এতক্ষন তো বিশ্লেষণের অপচেষ্টা টুকু করলাম আস্তিক বা স্রষ্টার প্রতি যাদের বিশ্বাস আছে তাদের জন্যে। কিছুটা অন্য ভাবে চিন্তা করি এখন। "রঙ্গীলা বাড়ই" পুরা ব্যাপারটা আরর কিছুইনা Other then our mind. আমাদের মন বা দেহের ভিতরে যেই আত্মার বাস তাই বাড়ই আর আমি এইটুকু শতভাগ সঠিক সম্ভবত যে কারো মনই সাদাকালো নয়। একটা দেহের ভিতরে একটা মনের বাস। সেই মন দেহকে চালনা করে। দেহ মনকে নয়। সকল দোষ এই বেহায়া মনের। তার আদেশে কর্মফল ভোগ করে বেচারা দেহটা। মনের সকল আশা আকাঙ্ক্ষা পূরনে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে দেহটা। তারপরেও মন ক্ষান্ত দিচ্ছে না। যতক্ষন না নশ্বর দেহ হাল ছেড়ে দিচ্ছে। সব কিছুর পরেও সেই মন বা মনের ভিতরে বাস করা মনের মানুষ যদি দেখা দেয় কারো কাছে সেইখানেই মানব জীবনের সার্থকতা।
আই থিংক এনাফ ফর টুডে গাইজ। যারা এত বড় প্যাচাল ধৈর্য্যের সাথে পড়ছে সবাইরে নোবেল দেওয়ার জোরদার দাবী জানাই


সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৬