ঘটনাটো আমরা সবাই জানি যে
রেলমন্ত্রীর আত্মীয়কে জরিমানা করে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সেই টিকিট চেকারকে দুর্ব্যবহারের অপবাদ দিয়ে বরখাস্ত করা হয়েছিল। প্রকৃত তথ্য সামনে আসায় তড়িঘড়ি করে সেই আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রেলমন্ত্রী (নূরুল ইসলাম সুজন)। এবং সেই সঙ্গে টিটি কে বরখাস্তকারী কর্মকর্তা (ডিসিও)কে শোকজ করা হয়েছে বা হবে।
রেলমন্ত্রীর কথা শুনে মনে হয় ,তিনি টিটিকে দয়া দেখাচ্ছেন বরখাস্ত প্রত্যাহার করে এবং বরখাস্তের আদেশ দেয়া কর্মকর্তাকে শোকজ করার মাধ্যমে।অথচ মন্ত্রীর উচিত
বরখাস্ত টিটির কাছে নিজে ক্ষমা চাওয়া,নিজের নিউ(২য় ) স্ত্রীকে দিয়ে ক্ষমা চাওয়ানো ও টিটিকে পুরস্কৃত করা। আর শোকজ যদি করতেই হয় তবে ,নিজের নিউ স্ত্রীকে পারিবারিক ভাবে শোকজ করা (!)
মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য পত্রিকার হুবহু
রবিবার (৮ মে) দুপুরে রেল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ তথ্য জানান রেলমন্ত্রী।
এ সময় রেলমন্ত্রী বলেন, একজন টিটিইর দায়িত্বই হচ্ছে, এটা দেখা কোনো যাত্রী বিনা টিকিটে কেউ ভ্রমণ করছে কিনা। যাত্রীদের সহযোগিতা করা। ডিসিপ্লিন আনার ক্ষেত্রে একজন টিটিইর এটাই দায়িত্ব। আমি এই কথাটাই বলেছি। টিটিই বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং ডিসিওকে শোকজ করা হবে।
বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়া তিনজনের সঙ্গে সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী জানান, মাত্র ৯ মাস হলো আমার বিয়ে হয়েছে। নতুন যে স্ত্রীকে আমি গ্রহণ করেছি, সে ঢাকাতেই থাকে। তার মামাবাড়ি ও নানাবাড়ি হলো পাবনা। আমি শুনেছি তারা আমার আত্মীয়। এটা এখন ঠিক, যেটা আমিও এখন শুনেছি। এর আগে পর্যন্ত আমি জানতাম না, এরা কারা এবং আমার জানার কথাও না।
রেলমন্ত্রী বলেন, আমার স্ত্রী যদি কোনো ধরনের ভুল করে থাকে… আমার ইনভলবমেন্ট ছিল না। যেটা বলা হচ্ছে বা টার্গেট করা হচ্ছে, মন্ত্রী এই কারণে এটা ঠিক না। তবে মেসেজটা যেভাবে গেছে এটা সঠিক হয়নি।
তিন যাত্রীকে জরিমানা করায় টিটিই বরখাস্ত হওয়ার ঘটনায় মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আকতার মনির নির্দেশনা ছিল বলে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, আমিও বিষয়টি শুনেছি।
সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করার পরও টিটিই বরখাস্তের ঘটনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, নেতিবাচক ধারণাতো অবশ্যই হবে। এটা ভুলভ্রান্তি হলে মানুষ সেভাবে দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শফিকুল ইসলামকে পদোন্নতি বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হতে পারে। তাকে পুরষ্কৃত করার কথাও ভাববে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
গত ৪ মে দিবাগত রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে এ জরিমানার ঘটনা ঘটে। পরে বৃহস্পতিবার (৫ মে) বিকেলে ঈশ্বরদীর পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনের নির্দেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্ত হওয়া টিটিই মো. শফিকুল ইসলাম রেলওয়ে জংশন ঈশ্বরদীর টিটিই হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে যুক্ত।
ঘটনার পর সমালোচনার মুখে পুরো বিষয়টি তদন্তে শনিবার (০৭ মে) রেলের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে পাকশীতে আজ ওই তিন যাত্রী ও টিটিইর সঙ্গে কথা বলছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০২২ বিকাল ৪:৫৭