একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস কতটা বিরহের হতে পারে তা না পড়লে বুঝতে পারবেনা।
(আমি কেঁদেছি -চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি)
মঈদুল চৌধুরী (লাভলু)
ফেসবুক স্ট্যাটাস
লেখক,
সাবেক সভাপতি
ফেনী জেলা ছাত্রলীগ।
কানাডা প্রবাসী।
লিংক মন্তব্যে দেয়া হল। পড়বেন।
Mayeedul Chowdhury ভাইয়ের লেখা অবলম্বনে অতীত স্মৃতিচারণ যা
বর্তমান ফেণীর হাজার পরিবারের নীরব যন্ত্রণা বহিঃপ্রকাশ। আমার এই লেখা কিছুটা হলেও দুখি পরিবারের দু:খ লাগব হবে বলে মনে হয়। এখানে এমন এক সাহসী যোদ্ধার কথা বলবো যে জীবনের মায়া ত্যাগ করে আওয়ামীলীগকে প্রতিষ্ঠা করেছেন তার পারিবারি বর্তমান অবস্থান তুলে ধরার এই ব্যর্থ প্রয়াস।
২৬ মার্চ চলে গেছে এপ্রিল চলে গেছে মে আজ শেষ দিন ; জানিনা বেন্ডু ভাইয়ের কুঠির সংস্কার হয়েছে কিনা? জানিনা এই জ্যৈষ্ঠে আম কাঁঠালের সময় কেমন কাটছে দিন! বর্ষায় ঝরছে বৃষ্টি, হয়তো ভাল নেই। ভাল থাকার কথাও না! কারণ স্বামী হারা স্ত্রী আর পিতা হারা সন্তান কখনো ভাল থাকতে পারেনা।
আমিও নিজ দায় থেকে বেন্ডু ভাইকে চিনি এবং ভালবাসি বলে লিখছি। যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল আসুন সবাই মিলে বেন্ডু ভাইয়ের স্ত্রী'র পাশে দাঁড়াই তার ছোট্ট ঘরখানা একটি আধুনিক সুন্দর ঘরে রূপান্তর করি। বুঝিয়ে দিই আমরা ভালবাসতে জানি, আমাদের ভালোবাসায় প্রাণ আছে, নেই কোন শঠতা। অতীতে যারা আমাদের ভালবেসেছিল এবং ভালবেসে আমাদের জন্য রেখে গিয়েছিল এক শক্তিশালী সংগঠিত সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। যা আজ আমাদের পৌছে দিয়েছে সম্মানের উঁচু শিখরে, অথচ যাদের অবদানে আজ প্রতিষ্ঠিত এই আওয়ামীলীগ, তাদেরকে কবে ভুলে গেছি শুধু একা ভোগের মোহে। সততা আজ কাদে ঘরেঘরে, ভালোবাসা আজ প্রহসন, সামান্য কিছু পাওয়ার আশায় আজ ছুটছে গন্তব্যহীন পথে! অথচ নেই কোন বৃহৎ আবদার তাদের, তাদের পরিবারের। যারা অকাতরে দিয়েছে দেশের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জন্য।
Mayeedul Chowdhury ভাই আপনার লেখা পড়ে এত কষ্ট পেয়েছি এতটা কষ্ট! তা বলে বুঝাতে পারবোনা কারণ যাদের ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা চেয়ারে বসেছি, আজ পাওয়ারে। তাদের প্রতি এতটুকু শ্রদ্ধা ভালোবাসা দেখাতে পারিনি, দেখাতে পারিনি আহত নিহতদের পরিবারের প্রতি সামান্যতম সহানুভূতি, শ্রদ্ধাবোধ। শতশত নেতা কর্মির মৃত্যু, পুঙ্গত্ব ও জেল জলুমের বিনিময়ে এ ক্ষমতা, যাদের বলিদান আজ এ অর্থ, ঐশ্বর্য তাদেরকে নুন্যতম সম্মানটুকু আমারা দেখাইনি। ভাবতে অবাক লাগে, বাকরুদ্ধ হই। আজ যারা এম পি, উপজেলার চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র তাদের একটি স্বাক্ষরে বদলে যায় এই সব নেতাকর্মীদের পরিবারের দুখের চিহ্ন অথচ কত টাকা না আমরা অপচয় করি বিভিন্ন ভাবে। কতো ভাবে; কত টাকা হোটেল বারে ডিসকোতে এবং বিমানের টিকেটে নষ্ট করি। কিন্তু যাদের দেহ ত্যাগের, শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে আজ আমাদের ক্ষমতা তাদের প্রতি আমাদের কোন যত্ন নেই, নেই কোন সহানুভুতি, নেই কোন দায় দায়িত্ব ও কর্তব্য। অথচ সামান্যতম সহানুভুতিতে পেয়ে ধন্য হতো নিহত ও আহতের পরিবার আর বহে যেতো শান্তির সুবাতাস! প্রতিটি নি:শ্বাসে জড়িয়ে আছে আজ বঞ্চিত, ত্যাগি নেতাকর্মীদের হ্নদয়ের ছোয়া, পুঙ্গ ভাইয়ে না পাওয়ার আকুতি আর যন্ত্রনার দীর্ঘশ্বাস। ফেণী জেলার ছয়টি উপজেলায় ২৫/২৬ বছরে প্রতিপক্ষের আঘাতে মরেছে অনেকে, অনেকে পুঙ্গত্ব বরণ করেছে, অনেক জেল জলুম হুলিয়া নিয়ে এখনো অন্ধকারে দিন কাটায়। আজ তাদের রক্তের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ক্ষমতায় তারা এখনো নির্যাতিত নিষ্পেশিত, এখনো অনেকে নির্বাসনে।
ফেণীর প্রত্যেক উপজেলায় যারা যারা দলের জন্য জীবন দিয়েছেন, জেল খেটেছেন নির্যাতনে স্বীকার হয়েছেন তাদেরকে খোজে এম পি, চেয়ারম্যান ও মেয়র কাউন্সিলর, মেম্বারেরা সহায়তা করুন,(এই সময়ের মধ্যে অনেক এম পি, চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলর এবং মেম্বার হয়েছেন) দলের ভিত্তিকে শক্তিশালি করুন। অন্তত তাদেরকে বুঝান তাদের ঋন আছে দলের অভ্যন্তরে, তাতেও তারা খুশি হবে, এক সময় ফলাফল আসবে, আমি বলছি টাকা দিয়ে ভোট ক্রয় করা লাগবেনা এমনিতে ভোটে নির্বাচিত হবেন। না হয় এমন সময় আসবে কথা বলার জন্য এবংকি আপনাকে দেখার লোক থাকবেনা! এমন অবস্থা হবে আপনি আপনারা নিজেদেরকে নিজেরাই চিনবেননা, নিজেরাই অতল গহবরে অন্ধকারে পতিত হবেন ফিরে আসতে চাইলেও চোখে পথ দেখবেন না, কারণ তখন ঐ পথ আর সহজ সরল থাকবেনা, কঠিন পিচ্ছিল হয়ে যাবে দাড়াতে পারবেন না।
আসুন সবাই মিলে ভেন্ডু ভাইয়ের পরিবারের জন্য সহায়তা করি, অন্ততপক্ষে একটি পরিবারকে রক্ষা করি, পরিবারের হ্নদয়ে আলো জ্বালিয়ে আলোকিত করি, আলোকিত করি তার পরিবারের তার বংশধরদের, ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করে দিই ভেন্ডু ভাইয়ের ভঙ্গুর সংসার। যা তিনি নিজে জীবিতকালেও সুন্দর ভাবে করে যেতে পারেননি! আমার জানামতে একসময় ঢাকা মহানগর (উত্তর) এর সভাপতি আবুল বাশার ভাই ভেন্ডু ভাইয়ের ছেলের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন, যদি এখনো আমরা বলি ভাল কিছু করবেন আমার তাই বিশ্বাস। আসুন সবাই সময়ের সাথে, যাদের ত্যাগে কর্মে আজ প্রতিষ্ঠিত ফেণী জেলা আওয়ামীলীগ তাদের স্বীকৃত দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করি এতে যেমন দলের মঙ্গল তেমনি আওয়ামী পরিবারের মঙ্গল।
জয় হোক তাদের যারা নির্ভয়ে দিয়েছেন নিজের জীবন, জয় হোক তাদের যারা নিজের ক্ষতি জেনেও পুঙ্গত্বকে করেছে বরণ। জয় হোক তাদের যারা এখনো নির্বাসনে কোন অন্ধকার কুঠিরে।
লেখকঃ প্রথমকথা।
ছবিঃ ভেন্ডূ ভাই এবং তার স্ত্রী'র সাথে মঈদুল চৌধুরী সাবেক ফেনী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:২৯