বিশ্বাস করুন আর নাই করুন আমি এই খবরটির ভয়ই করছিলাম। অতি উৎসাহী লোকজনের মধ্যে থেকে কিছু লোক যে তাদের বাড়াবাড়ির ফল ভোগ করবে সেটা নিয়ে আমার বিন্দু মাত্র সন্দেহ ছিলো না। আজই মাওয়া প্রান্তে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুনের মৃত্যু হয়েছে। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের ছবি পত্র-পত্রিকায় দেখছিলাম। কেউ সেতুর মাঝে মোটরসাইকেল থামিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে, কেউ কেউ ব্যক্তিগত গাড়িও পার্ক করে আছেন। কেউ আবার একধাপ সরেশ, রেলিং-এ বসে ছবি তুলছেন। বাহ!
খুশি বা আনন্দ সবই একটা সীমার মধ্যে করা উচিত, নয়তো অতিরিক্ত সবকিছু খারাপ পরিণতি টেনে নিয়ে আসে। দুই তরুণের মৃত্যুতে আমি ব্যাথিত নই, দুঃখিতও নই। সেতু খুলতে না খুলতেই নাট-বল্টু খোলার চেষ্টা করে এক গদর্ভ লোক নাকি এখন পুলিশের কাছে এ্যারেস্ট হয়েছে, একজন তো তার মূত্র বিসর্জন করে সেতু ধোয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন। এই লোকগুলো আসলে কি প্রমাণ করতে চাইছেন সেটা জানারও আমার ইচ্ছে নেই। চিরাচরিত বাঙালী লোকজন যে নিয়ম না মানার অসুখে ভুগছে আজন্ম, সেটাই বার বার প্রমাণিত হয়েছে, হচ্ছে আরও হবে। এদের জন্য কোন সমবেদনা নেই আমার।
এই তো শুরু হলো, এই গণনা আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই কয়েক হাজারে পরিণত হবে। এই মাত্র জেনেছি, সরকার নাকি সোমবার সকাল থেকে সেতুতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করেছে (সূত্র)। চমৎকার! বাঙালীর আকামের নমুনা দেখে অবশ্য সরকারও কিছুটা হতভম্ব মনে হচ্ছে। আসলেই "বাঙালীকে দাবায়ে রাখা" অসম্ভব।
বাঙালীরা শুধু দেশে নয়, পৃথিবীর সকল প্রান্তে নিয়ম ভাঙ্গার অজস্র দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আছে। ভূ-মধ্যসাগরে ডুবে মরার পরেও এই গোত্রের কিছু মানুষের যাত্রা অব্যাহত রয়েছে, আমি অবশ্য তাদের বডি কাউন্ট করা বন্ধ করে দিয়েছি, গা সয়ে গেছে। আমেরিকার মত দেশে একটা সুন্দর এলাকাকে কিভাবে যত্র-তত্র ময়লা, পানের পিক, সিগারেটের প্যাকেট ফেলে নষ্ট করতে হয় তা বাঙালীদের কাছ থেকে ইউরোপিয়ান বা আমেরিকানরা শিখেছে, শিখছে। আর বাঙালী বরাবরই নিয়ম ভাঙার ফলাফল ভোগ করবেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২২ রাত ১২:৩৭