গত রোজার ঈদের আগে একটা চিন্তা মাথায় খুব ঘুরপাক খাচ্ছিলো! সবাইকে তো দেখি হাইস্কুল আর কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে ঈদ পুনর্মিলনি অনুষ্ঠান এর আয়োজন করে। আমি আর আমার আর এক বন্ধু মিলে উদ্যোগ নিলাম এই ঈদে আমরা প্রাইমারী স্কুল জীবনের বন্ধুরা মিলে পুনর্মিলন এর আয়োজন করব। সিদ্ধান্তে আমরা এতোটাই অটল ছিলাম যে কেউ যদি টাকাও না দেয় তবু আমরা দুজন মিলে টাকা দিয়ে হলেও আয়োজনটা সফল করব এবং যে করেই হোক বন্ধুদের শতভাগ উপস্থিতি সফল করতেই হবে। এবং আমরা সফল হলাম। চারজন বাদে বাকীসব বন্ধুই আমাদের ডাকে সাড়া দিলো এবং যে যার সাধ্যমত পয়সা দিয়ে সাহায্য করলো। দীর্ঘ ১২ বছর পর অনেকের সঙ্গে দেখা হওয়ায় আমরা প্রথমত অঝরে কাঁদলাম, কেউ কেউ হাউমাউ করে কাঁদল, মেয়েদের কান্নার রেশ সারাদিনই রয়ে গেলো প্রায়! অংশগ্রহণকারী ২৯ জন বন্ধুর ভেতর কেউ এখন ঠেলাগাড়ি চালায়, কেউ দিনমজুর, কেউ পোশাক কারখানার কর্মী, কেউ আর্মি অফিসার, কেউ ভাল ভার্সিটিতে পড়ছে, এবং মেয়েদের সিংহভাগই বাচ্চার মা হয়ে গিয়েছে, একটা মেয়ের দেখলাম তিনটে বাচ্চা! খাওয়ার সময় দুদিকে দুটোকে বসিয়ে খাওয়াচ্ছে আর একটা কাঁধে, পিঠে উঠে খেলা করছে! কি সুন্দর দৃশ্য! এই যে ছবিগুলি দেখছেন, এগুলি মূলত সেদিনই কাজের ফাঁকে ফাঁকে তুলে রেখেছিলাম মুঠোফোনে। আমাদের সময়ে প্রাইমারী স্কুলটা যেখানে ছিল, সেই জায়গাটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বেশ ক’বছর হয়েছে! তারপর জায়গা পাল্টে স্কুলটাকে নিয়ে আসা হয়েছে এই সুন্দর ছবির মত চরে! ছবিগুলি উত্তরবঙ্গের একটি চর থেকে তোলা! এমন সময়ে তোলা যে সময় খা খা চর একদম শতভাগ প্রাণ ফিরে পেয়েছে!
আকাশ ছুঁয়েছে কাশ
একেই বলে সোনালী আঁশ
ক্ষেতের মাঝে চাটাম ঘর। বন্ধু জিরাইতে যায়!
চাটাম ঘরে বসে আরাম করে আকাশ দেখা যায়
এবং লাল্টুও পোজ দিত পটু!
বাজার ফেরত মানুষের জন্য অপেক্ষারত নাও।
বেলা যায়....
এবং পথিকেরা ঘরে ফেরে
দ্রষ্টব্যঃ ব্লগে ওরকম অনুষ্ঠানের ছবি দেবার অনুমতি আছে কিনা জানি না। আর থাকলেও যেহেতু অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিল, তাদের অনুমতি না নিয়ে দেয়াটা ঠিক হবে না ভেবেই পুনর্মিলন এর ছবি দিলাম না। এই ছবিগুলির উৎপত্তি কোথা থেকে তারই জানান দেবার জন্য উপরের ভূমিকাটুকু দেয়া। বিরক্ত হবেন না নিশ্চয়ই?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০