নবাব আলী ইয়ার জং ভারতের হায়দারাবাদ ( বর্তমানে যেটি তেলঙ্গানা রাজ্য )অধিবাসী ৷ ভারত স্বাধীনের পূর্বে তিনি ছিলেন হায়দারাবাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তবে এর পূর্বে তিনি ওসমানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভারত স্বাধীন হবার পর তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ও ভিসি ছিলেন ৷ তিনি যুক্তরাজ্য মিশর সহ বিভিন্ন দেশে ভারত সরকারের রাষ্ট্র দূত হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন ও করেছেন ৷ ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় মহারাষ্ট্রের গর্ভনর হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন ৷ তিনি মহারাষ্ট্রের গর্ভনর দ্বায়িত্ব পালন করার পরেও সোচ্চায় বাংলাদেশ এইড কমিটির পেট্রোন ইন চীফের দ্বায়িত্ব পালন করেন ৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সরকারের ভ্রাম্যমান কুটনৈতিক প্রতিনিধি নুরুল কাদিরকে মুক্তিযুদ্ধ কালিন সরকারের মন্ত্রীগন বাংলাদেশের পক্ষের জনমত গড়ে তুলতে মহারাষ্ট্রে প্রেরন করা হলে তিনি সেখানে গিয়ে তিনি প্রথমেই নবাব আলী ইয়ার জং এর সাথে সাক্ষাত করেন ৷ এবং নবাব সাহেব কে একটি ছবির এলব্যাম দেখান যেটি দেখে তিনি এত বেশী ব্যথিত হন যে তার চোখে পানি চলে আশে ৷ পরবর্তিতে নবাব সাহেবের একান্ত প্রচেষ্টায় ও তার সহায়তায় সেখানে তিনি সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উর্দু নিউজ পেপার এসোসিয়েশন ও প্রভাবশালী সাংবাদিকগনকে বাংলাদেশের জনগনের মুক্তির সংগ্রামের যৌক্তিকতা সম্পর্কে অবহিত করেন ও তারা সেটি মেনে নেই ও বাংলাদেশ পক্ষে অকৃত্রিম ভাবে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করতে লাগে ও আর্থিক সহায্যে সংগ্রহ করেছেন ৷ আর পাকহানাদার বাহিনী কর্তিক মুক্তিকামী জনগনের উপর নির্যাতনের পূর্নচিত্র তুলে ধরে ছিলেন আর মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পাকিস্তান সরকারের অপপ্রচারগুলোর ভুলপ্রমানিত করেছিন ৷ নবাব আলী ইয়ার জং বিভিন্ন সময় নুরুল কদিরকে বিভিন্ন কুটনৈতিক ও রাজনৈতিক পরামর্শ প্রদান করেছিলেন নুরুল কাদির তার প্রতিটি বাস্তবায়ন করেছিলেন এবং সেগুলোর প্রতিটি সফল হয়েছিল ৷
মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশ সরকারের ভ্রাম্যমাণ কুটনৈতিকের ইন্দীরা গান্ধীর সব থেকে প্রভাবশালী সহকারী পি এন হাসকারের সাথে সাক্ষ্য :
সরকারের ভ্রাম্যমাণ কুটনৈতিক প্রতিনিধি নুরল কাদির নবাব ইয়ার আলী জং সাহেবের সাথে পুনের গর্ভনর হাউসে অবস্থান করা সময় তিনি তাকে তার ভিজিটিং কার্ডের পিছনে নুরুল কাদিরের নাম ও তার পদবী লিখে দেন আর বলেন বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রাম বর্হিবিশ্বে ব্যপক ভাবে রাজনৈতিক সর্মথন আদায় করতে হলে ইন্দীরা গান্ধীকে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি দেশের মধ্য অন্তত চারটিতে সফর করে এই ব্যাপারে আলোচনা করতে হবে এবং পি এন হাসকারকে এই ব্যপারে রাজী করতে পারলে ইন্দিরা গান্ধী তা অবশ্যই করবেন আর নবাব সাহেব বলেন এই কার্ডটি দেখালে পি এন হাসকার তার সাথে মুক্তিযুদ্ধে ব্যপারে অন্তত তিরিশ মিনিট আলোচনা করবে ৷ এর পর তিনি পি এন হাসকারকে টেলিফোন করে নুরুল কাদিরের ব্যপারে কথা বলেন ৷ আর ছবির এ্যালবামটি পি এন হাসকারকে দেখতে বলেন ৷ এরপর পি এন হাসকারের সাথে নুরুল কাদির দেখা করতে দেখা করতে গেলে তিনি তার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেন ও বাংলাদেশ মুক্তিকামী পক্ষে রাজনৈতিক সমর্থন আদায়ের জন্য ইন্দিরা গান্ধীর বিদেশ সফর সম্পর্কে গুরুত্ব বোঝান এবং ছবির অ্যলবামটি তাকে দেখালে তিনি তার পাশের ঘরে ইন্দিরার গান্ধীকে দেখাতে যান এবং ফিরে এসে বলেন ইন্দিরা গান্ধী এই ব্যাপারে রাজী হয়েছেন ৷
এর কিছুকাল পর আফগানিস্তানে যাওয়ার আগে পি এন হাসরকারের সাথে দেখা করাতে গেলে সে সময় তিনি বলে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের মুসলিম নেতারা উর্দু সংবাদ পত্রগুলো বাংলাদেশের পক্ষে এবং ধর্মীয় নেতাদের অনেকে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিকে টেলিফোন করে বাংলাদেশেকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য অনুরোধ করেছিলেন ৷ (সুত্র : দুশো ছেষট্টি দিনে স্বাধীনতা ,লেখক: মুহাম্মদ নূরুল কাদির)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:০১