শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
ছোট্ট একটা চাকরী করি
বেতন বেশি নয়
দুইটা ঈদে বেতন-বোনাসে
বাড়তি কিছুটা হয়।
সেই আয়েতে করছি খরচ
নিজেকে রেখে বাদ
প্রত্যেক ঈদে নতুন জামায়
পাচ্ছি অনেক স্বাদ।
সন্তান মোর বড় আদরের
কচি মুখখান দেখে
নিজের জামা কেমনে কিনি
ওদের জামা রেখে?
সারা রাত্র ঘুমায় নাকো
চোখে নাই যে নিদ
দু’দিন পরে রমজান শেষে
হবে খুশির ঈদ।
সেই আনন্দে পিছু ছাড়ে না
থাকছে গলা ধরে
নতুন জামা চাই যে তাহার
রাত পোহালে ভোরে।
তার পছন্দে কিনলাম জামা
পাশের বাজার গিয়ে
কি যে খুশি, ভাষা নাই তার
জামাটা হাতে নিয়ে।
বাড়ির গিন্নি অর্ধাঙ্গিনী
সে কি থাকবে বাদ?
এই কর্তব্য ভুল হলে রে
জীবনটাই বরবাদ।
অনেক ঘুরে কিনলাম সেটি
আর্থিক সাধ্যের ভিতর
গিন্নি দেখে বড়ই খুশি
অনেক দিন অন্তর।
ছোট ভাইবোন অবুঝ মনের
তারাও করে আশা
মুখের উপর কয়না কিছু
চোখে বুঝায় ভাষা।
তাদের জন্যেও হলো কেনা
ওদের পছন্দ মতো
অল্প টাকায় অনেক কিনলে
টাকা থাকে আর কত?
তারপরেতেও দু’জন বাকী
শ্রদ্ধেয় বাবা-মা
তাদের রেখে যতই কিনি
আনন্দই হবে না।
তাদের জন্যও হলো কেনা
মা কয়, ‘বাছা ওরে,
অনেক টাকা করলি খরচ
মাস যাবে কি করে’?
মায়ের কথায় খুশি হলাম
তাকিয়ে দেখি পিছে
কাজের মেয়ে অনাথ ইতিম
দাঁড়িয়ে সিঁড়ির নিচে।
তার পছন্দের লাল জামাটা
কিনছি যখন ভাই
চোখ ফেরালাম হাতের মাঝে
তেমন টাকা নাই।
ঐ টাকাতেই নতুন জামা
কিনবো যখন আমি
দাঁড়িয়ে আছে অনেক দূরে
গরীব মামা-মামী।
মামা যে মোর সহজ সরল
বড়ই অসহায়
না চাইলেও যে প্রতি ঈদে
কিছু না কিছু পায়।
নতুন জামা কিনে দেয়ায়
খুশি হলেন মামা
এবার ঈদে আমার ভাগ্যে
হলো না নতুন জামা।
তারপরেতেও লাগছে ভালো
দিতে পেরেছি তাই
নেয়ার চেয়ে দেয়ার আনন্দে
সুখের তুলনা নাই?
ছবি ঃ গুগল
রিপোষ্ট