শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
সাদা মিয়া কাদা গায়ে ত্বরা এলো বাড়িতে
রাগী বউ বাসি মুখে ভাত রাঁধে হাড়িতে।
পুকুরেতে নেমে সাদা ভাল করে ধুয়ে হাত
দহলিজে বসে বলে ‘তাড়াতাড়ি দে ভাত’।
আধাফোটা চালগুলো দহলিজে এনে দিয়ে
কোমরেতে কাপড় বেঁধে দাঁড়িয়েছে ঝাড়ু নিয়ে।
সাদা মিয়া ভাত পেয়ে চেয়ে আছে থালেতে
ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ, ঘাম মোছে ভালেতে।
চেয়ে দেখে রণমুর্তি বউ আছে দাঁড়িয়ে
ভাতগুলো না খেলে দিবে তবে তাড়িয়ে।
বউয়ের ভয়ে সাদা মিয়া খেতে করে চেষ্টা
আধাফোটা ভাত খেতে পেল ভীষণ তেষ্টা।
ভাতগুলো নাড়ে-চাড়ে চোখে ঝরে অশ্রু
জীবন নষ্ট বউয়ের জ্বালায়, ভিজে গেল শ্মশ্রু।
রাগী বউ রণমূর্তী ঝাড়ু নিয়ে এলো তেড়ে
‘ভাত যদি নাই খাবে কেন বললে দিতে বেড়ে’?
‘সব ভাত না খেয়ে উঠ যদি এক পা
পটাপট চোখে মুখে ঝাড়ু দিয়ে দিব ঘা’।
কথা শুনে সাদা মিয়া চোখ তুলে তাকাতে
ঠাস করে ভাতের হাঁড়ি ভেঙ্গে দিল মাথাতে।
গরম হাঁড়ি ভেঙ্গে গিয়ে আটকে গেল গলে তার
দৌড় দিয়ে পালিয়ে গেল বাড়ির সামনে পুকুর পাড়
ঝাড়ু হাতে পিছে পিছে এলো বউ, বাপরে বাপ!
বউয়ের ভয়ে সাদা মিয়া পুকুরেতে দিল ঝাপ।
পুকুর সাঁতরে ওপার গিয়ে পাড়ের উপর দাঁড়িয়ে
বলছে কথা বড় গলায়, হাত দুটো নাড়িয়ে
ভাঙা হাঁড়ি গলায় নিয়ে উল্টাপাল্টা দিয়ে গাল
সাহস করে বলল বউরে, ‘আজকের ভাত সবই চাল’।
ছবি ইন্টারনেট
(প্রথম আলো ব্লগে প্রকাশ – = ১৬মার্চ ২০১৩)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:০১