দেবীগঞ্জ তহশীল অফিস।
দেবীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে পুরানো বট গাছ।
দেবী গঞ্জ বাজার।
দেবী গঞ্জ বাজারে মুচি জুতা কালি করছে।
হঠাৎ করেই সংক্ষিপ্ত সফরে গিয়েছিলাম পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জে। ঠাকুর গাঁও যখন বাস পৌঁছে তখন রাত একটা । ঠাকুর গাঁও থেকে অটো রিক্সায় রাতেই গড়েয়ার হাট হয়ে দন্ডপাল গ্রামে চলে যাই। সেখানে আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রী যাপন করে সকাল বেলা চলে যাই দেবীগঞ্জে। হাতে সময় না থাকায় ঐ দিনই আবার ঢাকায় রওনা হই। সংক্ষিপ্ত সময়ের কারণে খুব একটা ঘোরার সুযোগ পাইনি।
করতোয়া নদীর উপর ব্রীজ।
করতোয়া ব্রীজের পূর্ব পাড়।
দেবীগঞ্জ এর নামকরণ নিয়ে দুইটি মত প্রচলিত আছে। একটি মত হলো, এ জনপদটি পূর্বে হিন্দু অধ্যুসিত ছিল। এখানে অনেক দেব-দেবীর মুর্তি পাওয়া যেত। এ সব দেব-দেবীর নাম থেকে দেবীগঞ্জ নামটি হতে পারে। অপর মতটি হলো, সন্যাসী বিদ্রোহের অন্যতম রূপকার ও খ্যাতিমান নেত্রী- দেবী চৌধুরানীর অবাধ বিচরণ স্থল ছিল এ এলাকাটি। এখানকার ঘন বনাঞ্চলে প্রবাহিত করতোয়া, তিস্তা, আত্রাই ও কুড়ুম নদীর বাঁকে বাঁকে বৃটিশদের সাথে কয়েক দফা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে বিজয়ী হন এবং এখানকার অধিবাসীদের আশা- ভরসা ও শৌর্য বীর্যের প্রতীক হয়ে উঠেন। দেবী চৌধুরানীর স্মৃতি থেকে এর নামকরণ হয় দেবীগঞ্জ। দেবী চৌধুরানীর প্রধান সহযোগী ভবানী পাঠক এর নামে নিকটস্থ আরেকটি এলাকার নামকরণ করা হয়েছে ভবানীগঞ্জ।
দেবীগঞ্জ সহ পঞ্চগড় জনপদ ছিল কোচবিহার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। ১৭১১ সালে মোঘল ও কোচবিহার রাজার মধ্যে সন্ধি হয়। রাজা রূপ- নারায়ন কোচবিহার রাজ্য সন্ধিসূত্রে লাভ করেন। ১৭৭৬ সালে মোঘলদের ফকিরকুন্তি নামক ফৌজদারী অঞ্চল প্রাচীন রংপুর জেলায় রূপান্তরিত হয়। ১৮৫৭ সালে প্রশাসনিক সুবিধার্থে তিনটি মহকুমা সৃষ্টি করা হয় এবং এর সর্ব উত্তরের মহকুমার নাম হয় তেঁতুলিয়া। এই তেঁতুলিয়া মহকুমার মধ্যে ছিল বোদা চাকলা এবং দেবীগঞ্জ জনপদ ছিল বোদা চাকলার অধীন। ১৯৮০ সালে ঠাকুরগাঁও মহকুমার আটোয়ারী থানাসহ ৫টি থানা নিয়ে পঞ্চগড় মহকুমা গঠিত হয় এবং ১৯৮৪ সালের ০১ ফেব্রুয়ারী পঞ্চগড় জেলা গঠিত হয় ও দেবীগঞ্জ উপজেলার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
সড়ক পথে-ঢাকা থেকে ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু জাতীয় মহাসড়ক পথে রংপুর পর্যন্ত এবং রংপুর থেকে ৩৫ কিলোমিটার আসলে সৈয়দপুর এবং সৈয়দপুর থেকে উত্তর মুখো হয়ে নীলফামারী জেলা এবং নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলা থেকে ০৬ কিঃমি পশ্চিম উত্তর দিকে আসলে দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ।
ব্রীজ থেকে তোলা করতোয়া নদীর দৃশ্য।
খাবার হোটেলে খাবারের মূল্য তালিকা। বাংলাদেশের অন্য কোথাও এত সস্তায় খাসীর মাংস হোটেলে বিক্রি করে কিনা জানিনা তবে দেবী গঞ্জে খাসির মাংসের দাম সব চেয়ে সস্তা মনে হলো। প্রতি পিছ খাসির মাংসের দাম মাত্র ৪০/- টাকা। মাংসের পিছের সাইজ কিন্তু ছোট নয় মোটামুটি বড়ই দেখলাম।
দলিল লেখনে ব্যস্ত দলিল লেখক গণ।
দলিল লেখক ছাউনি।
আসার পথে গড়েয়ার হাট থেকে ঠাকুর গাঁও এলাম পাগলু নামের গাড়িতে। প্রথমে বুঝতে পারি নাই পাগলু কি। পড়ে বুঝতে পেলাম বড় অটোরিক্সাগুলোকেই পাগলু বলে। ঠাকুর গাঁও এসে অটোরিক্সার নতুন নাম পেলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯