নৌকায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ (প্রথম পর্ব)
নৌকায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ (তৃতীয় পর্ব)
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
পূর্ব দিকে যেতেই মসজিদের পশ্চিম পার্শ্বে এক ডাবওয়ালার সাথে দেখা হলো। বয়স পঞ্চাশের মত হবে। এক কাঁধি ডাব নিয়ে পূর্ব দিকেই যাচ্ছেন। ডাবের দাম জিজ্ঞেস করতেই প্রতিটি চার টাকা বলল। পানি পিপাসায় গলা শুকিয়ে কাঠ। লবানাক্ত মুখের পরে আর মিঠা পানি পান করা হয়নি। ডাবওয়ালা ডাব কেটে পানি গ্লাসে ঢেলে দিল। একেক জন কাঁচের গ্লাসের তিন গ্লাস করে পানি খেলাম। খেয়ে শেষ করতে পারছি না। সেন্টমার্টিনের ডাবের ভিতর এত পানি থাকে আগে জানা ছিল না। আমরা তৃপ্তিসহকারে খাওয়ার পরও কিছু পানি থেকে গেল। ডাবের এত পানি দেখে মুকুল বলল, আগে জানলে একটা ডাব নিলেই হতো।
ডাব খেয়ে টাকা দিয়ে ডাবওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম, চাচা, আমরা থাকার জায়গা পাই নাই, কোথাও থাকার জায়গা পাওয়া যাবে?
লোকটি বলল, হোটেলে গিয়েছিলেন?
বললাম, গিয়েছিলাম, সেখানে কোন রুম খালি নাই।
বলল, তাহলে আমার সাথে আসেন দেখি চেয়ারম্যান বাড়িতে পাওয়া যায় কিনা।
লোকটি আমাদের সাথে নিয়ে এসে চেয়ারম্যান বাড়ি দেখিয়ে দিল। পাকা রাস্তার একটু উত্তরেই চেয়ারম্যান বাড়ি। চেয়ারম্যান বাড়ি গিয়ে সতেরো আঠারো বছর বয়সী এক ছেলের সাথে দেখা হলো। বললাম, এইটা কি চেয়ারম্যান বাড়ি?
ছেলেটি বলল, হ্যাঁ, কেন?
বললাম, আমরা হোটেলে সিট পাই নাই, আপনারা যদি থাকার ব্যাবস্থা করতেন তাহলে আমদের জন্য খুব উপকার হয়।
ছেলেটি বলল, যদি কিছু মনে না করেন তাহলে একটি কথা বলতে পারি?
বললাম, বলেন।
ছেলেটি বলল, আমার থাকার রুমটিই আপনাদেরকে ছেড়ে দিতে পারি, তবে শর্ত হলো, আমাকে একশত টাকা দিতে হবে।
তার প্রস্তাব শুনে খুশি হয়ে বললাম, ঠিক আছে আমরা তাতেই রাজি। চেয়ারম্যান বাড়িতে মুলী বাঁশের বেড়া দেয়া তিনটি টিনের ঘর। পূর্ব পার্শ্বের ঘরের উত্তর পাশের রুমে আমাদের থাকতে দিল।
কাঠের চৌকির উপর একটি তোষক, তার উপরে কম দামী একটি বিছনার চাদর, দু’টি ময়লা ময়লা বালিশ ও একটি কালো কম্বল আগে থেকেই রাখা ছিল। আমরা ঘরে ঢুকেই চৌকির উপর বসে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলে ছেলেটির হাতে একশত টাকা দিয়ে দিলাম। টাকা পেয়ে ছেলেটি খুব খুশি হলো। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম, চেয়ারম্যান সাব আপনার কে হয়?
ছেলেটি বলল, তিনি আমার বাবা।
একশত টাকা নিলেও চেয়ারম্যানের ছেলে তার নিজের রুম আমাদের থাকার জন্য ছেড়ে দিয়েছে। এটা জেনে তার প্রতি খুব খুশি হলাম। তাকে দুই জনেই ধন্যবাদ দিলাম। ছেলেটি আমাদের হাতে ছোট একটি তালাসহ চাবি ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল।
আসলে সেই সময়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে একশত টাকার অনেক মূল্য। দ্বীপবাসীদের অধিকাংশই মৎসজীবি। দ্বীপটি বাংলাদেশের মূল ভুখন্ড থেকে অনেক দূরে হওয়ায় তাদের অন্য কোন আয় রোজগার নেই। সারাদিনে একশত টাকা রোজগার করা তাদের জন্য কষ্টের ব্যাপার। কাজেই চেয়ারম্যানের ছেলে বিনা পরিশ্রমে রুমের ভাড়া বাবদ একশত টাকা পেয়েছে, এটা যেন তার কাছে বিশাল পাওনা।
ঘরের সামনেই পূর্ব দিকে চাপ কল ছিল। দুইজনে বালতি নিয়ে চাপ কলে পানি চেপে গোসল করে নিলাম। লবন পানিতে শরীর খসখস করতে ছিল। গোসল করায় অস্বস্তিভাব কেটে গিয়ে শরীর অনেকটা পাতলা হলো। ঘরে গিয়ে টেকনাফ থেকে কিনে আনা পাউরুটি খেলাম।
পাউরুটি খেয়ে পানি খেয়ে বসে আছি এমন সময় বিশ বাইশ বছরের একটি যুবক এসে বলল, আপনারা রাতে খাবেন কই?
বললাম, আমাদের এখানে তো আত্মীয় স্বজন নাই, কই যে খাবো, সেটাই তো চিন্তা করছি।
যুবকটি বলল, যদি আপনারা আমাকে অর্ডার করেন তবে আপনাদের জন্য ভাত রান্না করতে পারি।
যুবকটি আমাদের জন্য উপযাচক হয়ে ভাত রান্না করতে চাচ্ছে, শুনে খুব খুশি হলাম। বললাম, তরকারী কি রান্না করবেন?
যুবকটি বলল, আমাদের কাছে মুরগী আছে, যদি বলেন তো মুরগী রান্না করতে পারি।
মুকুল বলল, আমরা মুরগী খাব না মাছ খাবো।
যুবকটি বলল, কি মাছ খাবেন?
মুকুল বলল, রুপচাঁদা মাছ।
যুবকটি বলল, এখন তো প্রায় বিকাল শেষের দিকে, এই সময় রুপচাদা মাছ নাও পাওয়া যেতে পারে। যদি রুপচাদা মাছ না পাই তাহলে অন্য মাছ খেতে হবে।
আমরা যুবকটির কথায় রাজী হয়ে গেলাম। যুবকটি চলে গেল। বিকাল শেষ হওয়ার পূর্বেই আমরা দুইজন আবার পশ্চিম সমুদ্র সৈকতে দৌড়ালাম। তার কারণ, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে এসে সমুদ্রের ভিতর সূর্য ডুবে যায় এই দৃশ্য না দেখলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ভ্রমণটাই বৃথা হবে। সূর্য কিছুটা উপরে থাকতেই আমরা গিয়ে সৈকতে পৌছলাম। সমুদ্রে তখন ভাটা। অসংখ্য প্রবল পানির উপর জেগে আছে। আমি আর মুকুল এক প্রবাল থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে আরেক প্রবালে হেঁটে বেড়াতে লাগলাম। প্রবালের ফাঁকে ফাঁকে পানিতে অনেক মাছ চোখে পড়ল। ইচ্ছা হলো ধরতে কিন্তু ধরে কি করবো রান্না করার তো কোন ব্যাবস্থা নেই। মাঝারি ধরনের একটি চিংড়ি মাছ ধরে আবার ছেড়ে দিলাম। সূর্য পশ্চিমাকাশে ততক্ষণে লাল আকার ধারণ করেছে। আমরা প্রবাল ছেড়ে বালুকা বেলায় চলে এলাম। পশ্চিম দিকে দাঁড়িয়ে সূর্য ডুবে যাওয়া দেখতে লাগলাম। বিশাল গোলাকার লাল সূর্যটি দেখতে দেখতে সমুদ্রের পানির ভিতর টুপ করে ডুবে গেল। সুর্য পানির ভিতর টুপ করে ডুবে যাওয়ার দৃশ্য দেখে খুব আশ্চার্যই হলাম। জন্মের পর থেকেই সূর্য ডুবে যাওয়া দেখছি কিন্তু এরকমভাবে সূর্য ডুবে যেতে আর কোথাও দেখিনি। সূর্য ডুবে যাওয়ার দৃশ্যটি দেখে অভিভুত হলাম।
সূর্য ডুবে গেলে সমুদ্রের পাড় দিয়ে আমরা একটু দক্ষিণে চলে গেলাম। দুইজন লোক ছোট ফাঁসের ফাঁসি জাল থেকে মাথা ধরে টেনে টেনে মাছ খুলছে। চেলা জাতীয় অনেক মাছ জালে আটকে আছে। আমরা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের মাছ ছাড়ানো দেখলাম। লোকগুলোও খুব আন্তরিক। আমাদের সাথে অনেক কথা বলল। তাদের সাথে কথা বলে আমরা চেয়ারম্যান বাড়ির দিকে রওনা হলাম। ততক্ষণে কিছুটা অন্ধকার হয়ে এসেছে।
চেয়ারম্যান বাড়িতে এসে ঘর অন্ধকার থাকায় ঘরে না ঢুকে বাড়ির সামনে পেতে রাখা বেঞ্চিতে বসলাম। অচেনা অজানা জায়গায় অন্ধকারের মধ্যে কোথাও যাওয়া নিরাপদ মনে হলো না। আমাদের দেখতে পেয়ে চেয়ারম্যানের ছেলে এসে হ্যারিকেন জ্বালিয়ে দিয়ে গেল। আমরা অন্ধকার ছেড়ে ঘরে গিয়ে বসলাম।
রাত আটটা বা সাড়ে আটটার দিকে সেই যুবক ডাকতে এসেছে। বলল, আমাদের রান্না হয়েছে, আপনারা খেতে আসেন।
আমি আর মুকুল ঘরে তালা দিয়ে তার পিছনে পিছনে গেলাম। পূর্ব দিকের সমুদ্র সৈকতের কাছেই কয়েকটি টিন আর মুলি বাঁশের বেড়া দিয়ে ছাপড়া ঘর তুলেছে। তার ভিতরে একটি সস্তা কাঠের টেবিল এবং টেবিলের দুই পার্শ্বে দুইটি চার পায়া বেঞ্চি রাখা আছে। আমি আর মুকুল প্লাস্টিকের জগ থেকে পানি নিয়ে হাত মুখ ধুয়ে টেবিলের দুই পাশে দুইজন মুখোমুখি বসলাম। তারা আমাদের দুইজনকে দুটি টিনের প্লেটে ভাত দিল। আরো দু’টি টিনের প্লেটে একটি করে রুপচাঁদা মাছ দিল। কেরোসিনের লম্পের আলোতে ঝোলের চেহারা দেখে মনে হলো-- শুধু হলুদ, মরিচ আর লবন দিয়ে রান্না করেছে। আমি আর মুকুল ঝোলের চেহারা দেখে মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে ছিলাম। কিন্তু উপায় নেই, এখানে এটাই খেতে হবে, এর চেয়ে আর ভাল খাবারের ব্যবস্থা এই মুহুর্তে সম্ভব নয়। আমি টিনের প্লেট থেকে পানির মতো পাতলা একটু ঝোল পাতে ঢেলে নিয়ে খেয়ে দেখি অসম্ভব মজা হয়েছে। ঝোলের চেহারা যাই হোক, স্বাদের তুলনা হয় না। সাথে সাথেই পুরো মাছ ঢেলে নিয়ে গোগ্রাসে খেতে লাগলাম। মুকুল তখনও আমার দিকে চেয়ে আছে। আমি মুকুলকে বললাম, তরকারী খুব স্বাদ হয়েছে, খান।
আমার কথা শুনে মুকুলও প্রথমে একটু ঝোল পাতে ঢেলে নিল, ঝোল খেয়ে আমার মতই পুরো মাঝ পাতে ঢেলে নিল। ক্ষুধার্ত অবস্থায় দুইজন তৃপ্তিসহকারে খেতে লাগলাম। অর্ধেক খাওয়ার পরে বললাম, আরো মাছ আছে?
যুবকটি বলল, আর দুই পিস মাছ আছে।
ওই দুইপিস মাছও দিতে বললাম। মাছগুলো এত ভাল লাগছিল যে, ভাত রেখে পরে শুধু মাছ খেয়েছি। আমার দেখাদেখি মুকুলও একই অবস্থায় মাছ খেল।
খাওয়া অবস্থায় মনে মনে তাদের রান্নার তারিফ করতে লাগলাম। খাওয়া শেষে বিল দিতে গিয়ে অবাক হলাম। বিশাল বিশাল রুপচাদা মাছ টিনের প্লেটের এই মাথা থেকে ওই মাথা পর্যন্ত লম্বা, খেতেও সুস্বাদু, অথচ প্রতি পিস মাছের দাম মাত্র বিশ টাকা। সকালবেলা টেনাফে এর চেয়েও অনেক ছোট মাছের অর্ধেক পিস ত্রিশ টাকায় খেয়ে এসেছি। সেই তুলনায় এই মাছের দাম খুব সস্তা। দুইজনে চার পিস খেয়েছি দাম আশি টাকা, ভাত চার প্লেট ষোল টাকা, মোট ছিয়ানব্বই টাকা। এত সস্তায় ভাল খাবার খেয়ে খুশির চোটে একশত টাকার নোট বের করে দিলাম। যুবকটি টাকা হাতে নিয়ে চার টাকা ফেরত দিতেছিল। নিষেধ করে বললাম, আপনাদের রান্নায় খুশি হয়েছি, যে এই মাছটা রান্না করেছে তাকে এই চার টাকা বকশিশ দিলাম।
যুবকটি হাসি হাসি মুখে বলল, এই মাছ তো আমরা রান্না করি নাই। আমাদের বাড়িতে আমার গিন্নি রান্না করেছে।
আমি খুশি হয়ে বললাম, আপনার গিন্নিকেই এই চার টাকা বকশিশ দিলাম।
আমার কথা শুনে যুবকটি খুশি হয়ে বলল, ঠিক আছে আপনারা যদি আগামী কাল থাকেন তা হলে আপনাদের জন্য আরো ভাল করে রান্না করে আনবো।
আমি তার কথায় খুশি হয়ে বললাম, ঠিক আছে, যদি থাকি তাহলে আমরা আগেই এসে আপনাদের জানিয়ে যাবো।
ভাত খেয়ে অন্ধকারের ভিতর মিনি টর্চ লাইট জ্বালিয়ে দুইজন ঘরে চলে গেলাম। দুইজনেই বিছনায় শুয়ে শুয়ে গল্প করতে লাগলাম। রাত তখন দশটা হবে। ঘরের বাইরে এসে দেখি আকাশে চাঁদ উঠেছে। চাঁদনী রাতে ঘরে ঢুকতে ইচ্ছা হলো না। মুকুল দরজায় তালা দিয়ে বলল, চলেন চাঁদনী রাতে সমুদ্র সৈকতে বেড়াবো।
এমন চাঁদনী রাতে ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা আমারও ছিল, তাই খুশি হয়ে বললাম, কোন সৈকতে বেড়াবেন, পূবের টায় না পশ্চিমের টায়?
মুকুল বলল, পশ্চিমের টায়।
মিনি টর্চ লাইট নিয়ে দুইজনে পশ্চিমের সৈকতে রওনা হলাম। পুরো গ্রাম সুনসান। কোথাও কোন লোকজনের আওয়াজ নেই, নিরব নিস্তব্ধ। গ্রামের নিস্তব্ধতা ভেঙে আমরা দুইজন গল্প করতে করতে পশ্চিমের সৈকতে যাচ্ছি। মাঝ রাস্তায় চারজন লোকের সাথে দেখা হলো। তারা পশ্চিমের গ্রাম থেকে পূবের গ্রামে দিকে যাচ্ছে। আমাদের দেখেই একজন জিজ্ঞেস করল, আপনারা কে?
মকুল বলল, আমরা ঢাকা থেকে বেড়াতে এসেছি।
লোকগুলো আর কিছু বলল না।
লোকগুলোকে পাশ কাটানোর সময় লক্ষ্য করে দেখি তারা পশ্চিম গ্রাম থেকে নাইওরী নিয়ে পূবের গ্রামে যাচ্ছে। এত রাতেও মহিলা বোরখা পরে ছাতা মাথায় দিয়ে পর্দানশীন অবস্থায় তাদের পিছনে পিছনে যাচ্ছে। ইসলামিক নিয়মে মহিলাদের পর্দা করতে দেখেছি কিন্তু এখনকার মত এত কঠিন পর্দা করতে আর কোথাও দেখিনি। বিকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক গ্রাম ঘুরেছি কিন্তু একটি মহিলারও চেহারা চোখে পড়েনি। রাতের অন্ধকারে চলাফেরা করতেও মহিলার মাথায় ছাতা দেখে অবাক হলাম। দিনের বেলা চেহারা আড়াল করার জন্য অনেক মহিলাকে ছাতা মাথায় দিতে দেখেছি কিন্তু বৃষ্টি বাদল ছাড়া নিজেকে আড়াল করার জন্য রাতেও ছাতা মাথায় দেয় এটা এই প্রথম দেখলাম।
সমুদ্র সৈকতে তখন জোয়ার এসেছে। সমস্ত প্রবাল পানিতে ডুবে গেছে। বড় বড় ঢেউ এসে সমুদ্র তটে আছড়ে পড়ছে। শুধু সমুদ্রের শো শো শব্দের সাথে বড় বড় ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার শব্দ ছাড়া আর কিছু শোনা যায় না।
ফকফকা চাঁদনী রাতে বালুকা বেলায় হাঁটতে খুব ভাল লাগছিল। বিশাল সমুদ্রের গভীরে চাঁদের প্রতিবিম্ব দেখা যাচ্ছে। দেখতে খুব ভাল লাগছিল। দুইজনে প্রাণ ভরে গল্পে গল্পে হাঁটতে লাগলাম। এমন মনোরম পরিবেশ ছেড়ে আসতে মন চায় না। রাত বারোটা পর্যন্ত সৈকতে ঘোরাঘুরি করে ফিরতে বাধ্য হলাম। কারণ নতুন জায়গা, এখানকার পরিবেশের সাথে জানাশোনা নেই। এমন নিরিবিলি রাতের নির্জনতায় ফাঁকা সমুদ্র সৈকতে যদি কোন চোর ডাকাত আমাদের উপর হামলা করে তখন আমাদের উদ্ধার করার কেউ থাকবে না অথবা নির্জন সৈকতে মেরে ফেললেও কেউ দেখবে না। সেই ভয়ের অজানা আশঙ্কায় ভীত হলাম। আমার চেয়ে মুকুল আরো বেশি ভীত হলো। ঘরে ফিরতে মন চাচ্ছিল না, তারপরেও ঘরে ফিরে এলাম।
(চলবে--)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৮