তারপর,আমি আমার আপন প্রচ্ছায়াকে সাথী করে নিলাম।
সাথী, পাখির পালকের মতো যে সময়ের মাঝে ছিলো ভালোবাসার সুখ,
আজ অন্ধকারের অমানিশায়,ঝড়ের মাঝে,বিদ্যুতের চমকে-
আমি শুনি সেই পালকের ঝড়ে পড়ার গান।
আমি আমার আপন ছায়ার উপর পা রাখি।
সীমাহীন পথে ছুটে চলা নদীতে সাঁতার কাটি আমার অবারিত স্বপ্নের বৈতরনি নিয়ে।
দূর নক্ষত্রালোকের স্বাতি চেনো নিশ্চয়,
মহাকাশের এক জ্যোতির্ময় নিঃসংগ তারা।
সময়ের শুরুতেই যার প্রতীক্ষা,ভালোবাসার কাংগাল হয়ে
হাহাকার করে পৃথিবীর আকাশে আকাশে।
তারপর, সেই কান্না একসময় মেঘ হয়ে ভাসে।
সেই মেঘ তাপিত হতে হতে -
সময়ের স্রোতধারায় অবগাহন করে মহাসমূদ্রে-
যেখানে ঝিনুকের খোলসে মুক্তোর জন্ম।
ভালোবাসার সেই মুক্তোকে সাথী করে আমি আমার শিয়রের পাশে প্রচ্ছায়ার মতো রেখে দিয়েছি অনন্তকাল।
আমি আর কীবা করতে পারি,বলো।
হয়তোবা সারারাত জাগি
কখনো ভয়, কখনো সংশয়,বেদনা বিঁধুর নির্ঘুম রাত।
চোখ খুলে চেয়ে চেয়ে ক্লান্ত হয়ে যায় চোখ।
আশাহত হয়ে তবু আশা ফিরে ফিরে আসে বেদনার বন্দরে বন্দরে।
একসময় আমি সেই দুঃখের বন্দরে অন্ধকারের ভিতর থেকে জেগে ওঠি।
তারপর আঁধারের মাঝে আমি আলো খুঁজে ফিরি,
নির্জন সেই নিঃসংগ তেপান্তরে।
জেগে ওঠা আমি-
মহা বিস্ময়ে চেয়ে দেখি -ভালোবাসার প্রতিকূলে ,
বৈষয়িক জীবনের জটরজ্বালায় আটকা পড়ে আছি-
হাজার বছর ধরে মহা বিয়োগের এক অমীমাংসিত মহা সম্মোহনে।
আর জীবনের ইচ্ছেগুলো সব খসে খসে পড়ছে -
একে একে পলেস্তার মতো জীবনের ব্যাথাতুর স্পন্দনে।
আর তুমি শুধু সুখের ভেলায় সওয়ার হয়ে-
জন্মান্তরের সীমাহীন ভালোবাসা বুকে লালন করে-
,ভালোবাসার এক বিশাল সমুদ্র এসে দেখো-
জনম জনমের সব ভালোবাসা বড় বেশী মিছে,
সূর্যসংগমের সেই দূর্নিবার ভালোবাসা জোছনা হননের মাঝে-
মৌনতার বেলাভূমিতে এখন শুধু মৃত্যুর প্রতিক্ষায় আছে।
যেখানে শুধু কষ্টের নুড়ি পাথর,বেদনার উপাসনা আর দুঃখের অনল।
চৈত্রের দাবদাহে ,চিত্তের প্রশান্তি মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে আজ।
এসব ভেবে ভেবে মধ্যাহ্ন রাতের নির্জনতা আমি আরো বেশী আপন করে নেই।
অন্ধকারের বুকে এঁকে দিই ,ভালোবাসার হাজারো চুম্বন।
কিন্তু হায়রে তৃষ্না,মায়াবী তৃষ্না,বিহ্বল তৃষ্না,দিকভ্রান্ত তৃষ্না
আমার আত্মার আহুতিকে আরো উসকে উসকে দেয়।
আত্মার আহাজারিতে ,অমীমাংসিত ভালোবাসার দংশনে
আমার সম্মোহন ভাংগে।
শিয়রের পাশ থেকে সেই মুক্তোকে যুতবদ্ধ করি এবার।
তারপর, অন্ধকারের ভিতর আমি-
ছুটতে থাকি,ছুটতে থাকি,ছুটতে থাকি প্রান্তরে প্রান্তরে-
এক চির নিঃসংগ সারথির হাজার বছরের ভালোবাসা
আমি বয়ে নিয়ে যাবো আজ -
প্রিয়ার পদযুগলে-জন্ম থেকে জন্মান্তরে।