(চাঁদগাজী ভাইয়ের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনাপূর্বক)
চিডি লেখনের আমলে এক ব্যাডায় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিছে- “লাখোপতি হইতে চাইলে দুই টাকার ফেরত খাম এবং দশ টাকার রেভিনিউ স্ট্যাম্প দিয়ে নিচের ঠিকানায় চিডি পাডান।”
এরপর যা হওনের তাই হইছে, হাজারে হাজারে চিঠি আইসা পড়ছে। ওই লোকে সবাইরে ফেরত খামে উত্তর লিখছে, আমি যা করছি, আপ্নেও হেইডাই ট্রাই মারুন.. .. .. ..মাঝখান দিয়ে একগাদা রেভিনিউ স্ট্যাম্প বিক্রি কইরা ব্যাডায় লাখের বাত্তি জ্বালায়ে ফেল্লো।
আমি শালা কানা হরিদাস, ব্লগে দশ বছর পার কইরা ফালাইলাম, মাগার অহন পর্যন্ত ভিউয়ের লাখের বাত্তি জ্বালাইতে পার্লাম না। যেইডাই লিখি, য্যামতেই লিখি, ভিউ হয় একশ সাতাত্তুর!
একসময় আশরাফুল খেলতে নামলেই সাইত্রিশ রানে এসে আউট হয়ে পশ্চাতদেশ ঘুরাইতে ঘুরাইতে প্যাভিলিয়নে ফিরা যাইতো। আমার পোস্টের ভিউও ওইরাম একশ সাতাত্তুরে এসে গোত্তা খায়। আমার মত পুরান কোনো ব্লগারেরই এরম দুর্দশা নাই।
পুরান ব্লগারদের প্রোফাইলে ভিউসংখ্যা দেখা আমার একটা ব্যারাম, আকছারই ত্রিশ হাজার সাতশো মনে করে গুণতে গিয়া দেহি ওইডা আসলে তিন লক্ষ সাত হাজার। তখন নিজেরে পুরা ভগ্রুল ভগ্রুল মনে হয়।
একশ সাতাত্তুরের এই কুফা কাটাতে তাই ফাটাকেষ্ট চাল দিলাম। আপ্নেরাও ট্রাই মার্তে পারেন।
ইরাক আক্রমণের আগে জুনিয়র বুশ সাংবাদিক মিটে কইলো- বলিহারি সাহস এই দুম্বা খাওয়া বেকুব আরবগুলার, সাহস বাড়তে বাড়তে অহন মাস ডেসট্রাকশান ওয়েপন মজুদ শুরু করছে..... আমি বোমা ফালাইয়া এই সবগুলারে হুতায়ালামু। লগে অগো চিড়িয়াখানার হরিণগুলারেও মাইরালামু.. .. ..
ব্যাবাক সাংবাদিক আর্তচিৎকার দিয়া উঠলো- মিস্টার প্রেসিডেন্ট, হরিণগুলা ক্যান?
জুনিয়র বুশে কইলো- ওই যে, আপ্নেরা য্যানো এই হরিণগুলা নিয়াই ব্যস্ত থাহেন, এর লাইগ্যা!!
আমার গল্পে মেহজাবিনের হাসি হইলো ওই হরিণ, বুঝ্বার পার্ছেন্নি?
বিশ্ববিদ্যালয়ে হান্দাইছি মাত্র। ভালো সাব্জেক্ট পাইনাইক্যা দেখ্যা মন্টন খ্রাপ। এর ভিত্রেই অরিয়েন্টেশনের ডেট পর্ছে। প্রগ্রামের দিন সুন্দর মুন্দর দেখতে এক চেংরা প্রর্ফেসর এরাম বাতেলা ছার্লো যে মনে হইলো, এই সাব্জেক্টে পর্তে না পার্লেই জীবন বৃথা হয়্যা যাইতো। ওই ছার এক্কান গল্প কইছিল; যার মুল্কথা হইলো- ম্যালা দুরের কিছু ছুইতে মনস্থির কর্লে ওইটা ছুইতে না পার্লেও কাছাকাছি যাওনের সম্ভাবনাছে। মগর লক্ষ্য কাছের হইলে ওই পর্যন্তই সমাপ্ত, দুরে যাওনের কোন চান্স নাইক্যা। এইরাম আর্কি। আমিও ছারের বাধ্যগত ছাত্র, দুরের লক্ষ্যে ঢিল ছুর্ছি। লাখ না ছুইতে পার্লেও একশ সাতাত্তুরের কুফা কাটবো নিশ্চিত।
আহেন, এইবার এক্কান গল্প হুনি-
রাজামশায়ের ব্যাফক মন খারাপ, বহুদ্দিন কোনো নতুন বিনুদুন হয় না। মন্ত্রীরে ঘাড় ধইর্যা আইন্যা কইলেন- হয় নতুন বিনুদুন আনো, না হয় কল্লার মায়া ত্যাগ করো।
মন্ত্রী বাহাদুর হা হা করে উঠ্যা কইলো- রাজামশায়, নতুন বিনুদুনের ব্যবস্থা অক্ষুণি করতাছি। আপ্নে খালি ঘোষণা দ্যান, যে আপ্নেরে নতুন কিছু হুনাইতে পারবো, হেইডা গল্প, কোবতে, গান বা কোনো খবর হইলেও চলবো, আপ্নে হ্যারে রাজ্যের অর্ধেক আর মেহজাবিনের লগে বিয়া দিবেন।
রাজামশায় কইলো, আমি তোরে খাইছি। ব্যাডা হারামির বাচ্চা হারামি, মুচির ব্যাডায় যদি নতুন কিছু নিয়া আইস্যা পড়ে? আমি কি অর লগেও মেহজাবিনের বিয়া দিমু?
মন্ত্রী কইলো- রাজামশায়, গর্দান নিলে নিয়েন, বাট একটা চান্স দ্যান, দ্যাহেন কি করি.. ..
রাজা কইলো, ঠিকাছে। যথারীতি রাজ্যজুড়ে ঢেড়া পিটানো হইছে। এরপর মন্ত্রী বাহাদুর কোত্থেকে দুই ব্যাডারে ধইরা আনছে যার মইদ্যে একজন যে কোনো কিছু একবার শুনলেই মনে রাখতে পারে আর অন্যজনের দুইবার শুনলেই মুখস্ত।
এইদিকে ঘোষণা শুইন্যা সামু ব্লগে ধুন্ধুমার লাইগ্যা গ্যাছেগা। মেহজাবিনরে তো আর হরেদরে পাওয়া যায় না। ব্লগের ব্যাবাকে রাজদরবারে হাজির। একেকজন একেকটা গল্প-কোবতে-গান-খবর তেলওয়াত কইরা কয়, রাজামশায়, এইডা অহনো সামুতে পর্যন্ত দেইনাইক্য... ..
লগে লগে অ্যাকশন! মন্ত্রীর আনা দুই চামুন্ডার প্রথম চ্যালা কয়- এই মালতো আমি আগেই হুনছি।
আমাগো বোল্গার চ্যালেঞ্জ ছুইড়া কয়- অয় মিয়া, আবজাব কইরো না, কই হুনছো, কওতো দেহি। কইতে না কইতেই হেতে গড়গড় কইরা ওইডা কইতে শুরু করে। অর শেষ হওনের আগেই দুই নম্বরটা কয়, ঘটনা সত্যি, এইডাতো আমিও আগে হুনছি, কমু?
বোল্গারতো পুরাই ভগ্রুল! তো এম্নেই চল্তাছে। ব্যাফক বিনুদুন হইতাছে।
এমন সময় গ্যাছে আমাগো গাজীকাহু। কইলো, রাজামশায়, আমি গল্প-কোবতে বা গান পারি না, তয় আমার লগে একখান খবর আছে।
ফুরফুরা মেজাজে রাজা কইলেন- হুনাও চাঁদগাজী, তয় নতুন না হইলে কিন্তুক গর্দান যাইবোগা।
তথাস্তু বলে চাঁদগাজী তেলওয়াত শুরু করলেন-
আপনার বাবা যহন রাজা ছিলেন, তহন এক্বার একদিন টাকশাল শুন্য হয়্যা গেছিলো। মহারাজ এই বিপদ থাইক্যা উদ্ধারের জইন্যে রাজ্যবাসীরে ডাইক্যা সাহায্য চাইছিলেন এবং কইছিলেন- যে অহন আমারে দুই লক্ষ টেকা দিবো, বারো বছর পর আমি তাঁরে রাজ্যের অর্ধেক আর আমার পোলার যদি একখান মাইয়া হয়, তার লগে বিয়াও দিবো। ওইদিন আমার বাবা রাজামশায়রে দুই লাখ টাকা দিছিলো, আইজকা তার বারো বছর পূর্ণ হইছে.. .. ..
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬