বৈদিক, বৌদ্ধ, জৈন এবং ইসলাম ধর্মের মতো প্রধান প্রধান ধর্মের উৎপত্তি-স্থান থেকে বঙ্গভূমি বহু দূরে অবস্থিত, সে কারণে এই সব ধর্মের কোনোটাই তার আদি এবং অকৃত্রিম রূপে এ অঞ্চলে পৌঁছায়নি। তদুপরি, এসব বহিরাগত ধর্মের সঙ্গে স্থানীয় ধর্মীয় বিশ্বাস এবং আচারের সমন্বয় ঘটেছে। এভাবে বঙ্গদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং ইসলাম ধর্ম যেমন বঙ্গীয় বৈশিষ্ট্যপূর্ণ, তেমনি বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং সামাজিক রীতিনীতির কিছু মিল লক্ষ করা যায়। সপ্তম শতাব্দীতে চীনা পর্যটক হিউয়েন সাং লিখেছেন যে, তিনি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী স্থানীয় লোকদের ধর্মীয় দর্শন, আচার-আচরণ এবং সামাজিক রীতিনীতিতে অনেক সাদৃশ্য দেখেছেন। তিনি আরও লক্ষ করেন যে, বঙ্গীয় বৌদ্ধধর্ম মূল বৌদ্ধধর্ম থেকে অনেকটাই আলাদা।নৃতাত্ত্বিক দিক দিয়ে বেশির ভাগ বাঙালিই অস্ট্রো-এশিয়াটিক, কিন্তু দ্রাবিড় গোষ্ঠীও এর মধ্যে মিশিছে। এই দুটি প্রধান নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ছাড়া, বাঙালিদের মধ্যে তিববতী-চীনা এবং সেমেটিক রক্তেরও সংমিশ্রণ ঘটেছে।আর্যরা বঙ্গদেশে আসার আগে পর্যন্ত সামাজিক কাঠামো ঠিক কেমন ছিলো, তা জানা না-গেলেও, প্রাক-আর্যযুগে জাতিভেদ প্রথা ছিলো বলে মনে হয় না ক্ষত্রিয়দের সংখ্যা বঙ্গদেশে খুব কম ছিল। বৈশ্য এবং অন্য কোনো কোনো গোষ্ঠীর হিন্দুদের দিয়ে পরে তৈরি হয় কায়স্থ সম্প্রদায়।তত্ত্বগতভাবে বৌদ্ধ এবং মুসলমানদের মধ্যে কোনো জাতিভেদ প্রথা থাকার কথা নয়, কিন্তু বঙ্গদেশে এসে তাঁরাও এই প্রথা দিয়ে প্রভাবিত হন এবং এক ধরনের জাতিভেদ প্রথার মধ্যে পড়ে যান। সেনরাজাদের সময়ে বৌদ্ধরা শ্রেণিভুক্ত হন শূদ্র হিসেবে এবং তাঁদের বলা হতো ‘নেড়া’ (মাথা মোড়ানো)। মুসলমানরা আসার পর বর্ণহিন্দুরা সাধারণ মুসলমানদেরও গণ্য করতেন শূদ্রদের মতো। মুসলমানরা নিজেরা তাঁদের সমাজকে বিভক্ত করেন আশরাফ এবং আতরাফ এই দুই ভাগে। আতরাফ ছিলেন প্রধানত দেশীয় এবং নিম্নশ্রেণির মুসলমানরা। এই শ্রেণিভেদ প্রথা দিয়ে মুসলমানরা এতোটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে, তাঁরা মসজিদেও এটা বজায় রাখেন, সেখানে সুলতান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের জন্যে থাকতো উঁচু আসন। এ ছাড়া, আশরাফ এবং আতরাফদের মধ্যে বিবাহ হতো না, অথবা তাঁরা একত্রে ভোজনও করতেন না। বঙ্গসমাজের শতকরা আশি ভাগ অথবা তারও বেশি শূদ্র এবং গ্রামের মুসলমান। তাঁরাই ছিলেন উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি জড়িত - চাষী, শ্রমিক এবং নাপিত, জেলে, ছুতোর এবং জোলাদের মতো পেশাদার দক্ষ শ্রমিক। খ্রিস্টের জন্মের কয়েক শতাব্দী আগে মোটামুটি একই সময়ে বৈদিক এবং বৌদ্ধধর্ম বঙ্গদেশে পৌছেছিল । তারপর এই দুই ধর্ম স্থানীয় ধর্ম ও বিশ্বাসসমূহকে প্রভাবিত করেএই দুই ধর্ম এতো প্রবল ছিল যে, এদের প্রভাবে স্থানীয় ধর্মগুলো ধীরে ধীরে প্রায় লোপ পায়। তবে এই দুই ধর্মকেও স্থানীয় ধর্ম এবং আচার-আচারণ যথেষ্ট প্রভাবিত করে। যেমন, বৈদিক ধর্মে স্থানীয় অনেক দেবদেবী ঢুকে পড়েন, যাঁদের অস্তিত্ব মূল বৈদিক ধর্মে ছিল না ।ষোলো শতকের গোড়ায় চৈতন্যদেব (১৪৮৬-১৫৩৩) ভক্তি এবং প্রেমের আদর্শের ওপর স্থাপিত বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার করেন। যে জাতিভেদ প্রথা সমাজকে স্থায়ী শ্রেণীতে বিভক্ত করেছিলো এবং যা ছিলো সামাজিক নির্যাতনের প্রধান হাতিয়ার, চৈতন্যদেব তাকে পুরোপুরি অস্বীকার করেন। এই ধর্ম কেবল হিন্দু ধর্মকে ইসলামের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেনি, বরং পরবর্তী দু শতাব্দী ধরে বৈষ্ণব ও সামগ্রিকভাবে হিন্দু ধর্মচর্চায় নতুন জোয়ার এনেছিল। তাছাড়া এর প্রভাবে সহজিয়া, বাউল এবং কর্তা-ভজার মতো ভক্তিবাদী সম্প্রদায়ও জন্ম দেয়। এসব সম্প্রদায় প্রথমেই জাতিভেদকে অস্বীকার করে। তদুপরি এরা বিধিবদ্ধ ধর্মের চেয়ে গুরুভক্তি এবং নামহীন এক দেবতার ভজনাকে গুরুত্ব দেয়। বঙ্গভূমির বিচিত্র ধর্মগুলোর মধ্যে যদি কোনো মিল থেকে থাকে, তা হলো এই গোঁড়ামিবর্জিত নমনীয়তা এবং সমন্বয়ধর্মী ভক্তিবাদ।মধ্যযুগে সুফিবাদের মতো ভক্তিবাদী দর্শনের উদ্ভব এবং বৈষ্ণব, সহজিয়া, বাউল, কর্তাভজা ও সখীভাবকের মতো ধর্মীয় সম্প্রদায় আত্মপ্রকাশ করার পর সত্যপীর/সত্যনারায়ণ এবং দক্ষিণ রায়/বড় খান গাজীর মতো লৌকিক দেবতার দেখা মেলে। এবং সাহিত্যেও একটা সমন্বয়বাদী ধারার সৃষ্টি হয়। এই সাহিত্য ছিল বাঙালিত্বের ধারণাপুষ্ট। এ রকম এক অর্থে ধর্মনিরপেক্ষ ধর্ম এর আগে কখনও বঙ্গীয় সমাজে ছিল না। এই ক্রান্তিলগ্নে দেব-দেবীরাও মানুষের বেশে দেখা দিতে আরম্ভ করেন
বাংলার সৌন্দর্য
মত প্রকাশ মানে সহমত।
আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।
এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্নমর্যাদা!
রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাঁঠালের আমসত্ত্ব
কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে
এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে । ...বাকিটুকু পড়ুন
কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন