somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পবিত্রতার সংজ্ঞা কি ?

১৮ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পবিত্রতার সংজ্ঞা কি ?
দেহ কি পবিত্র ? সে তো পচন শীল। রিসাইকেল আইটেম। তার যা কিছু আছে রক্ত, কফ,মাংশ, মজ্জা, মল মুত্র- এমন কিছুই তো নেই যার মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ আছে ? যে কোন মুহূর্তে কোন জানান না দিয়েই কোন না কোন কোষ সমুহ বন্ধ করে দিতে পারে তার নিত্য কর্ম । ছন্দ পতন হতে পারে সেই অর্কেস্ট্রার কম্পোজিশনে । অযুত লক্ষ অনু পরমানু কোষের মাঝে যে সিনক্রনাইজেশন, একে অপরকে বলছে 'মে আই হেল্প ইউ' - পরক্ষনেই তারা বন্ধ দিয়ে পারে সে সৌজন্যতার আদান প্রধান। রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে বলেছেন - 'আমার এ ঘর বহু যতন করে/ধুতে হবে মুছতে হবে মোরে'। সেই দেহ, তাকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করি। কিন্তু তার সাথে পবিত্রতার সম্পর্ক কি ?
মন কি পবিত্র ? তুমি মনের বাইরে দাঁড়িয়ে তাকে দেখতো ? প্রতি মুহূর্তে, প্রতি ক্ষনে তার মাঝে অবিরাম বিপুল ভাবনা, ঘটনাপঞ্জী, রাশি রাশি অতীত - অবয়ব নিচ্ছে। সেই সচিত্র অতীত আবার বিলুপ্ত হচ্ছে নিমিষেই। ছোট একটা দেহের ভিতর বিপুল তরঙ্গের জল রাশির মতো ভাবনার চিত্র গুলোর ফেনিল উচ্ছ্বাস । যার উপর তোমার কোন নিয়ন্ত্রন নেই। তোমাকেই বরং নিয়ন্ত্রন করছে সেই ভাবনা রাশি । তারা তোমাকে অনুরক্ত করছে, ক্ষুদ্ধ করছে, আসক্ত করছে,অবশ করছে - তোমার বর্তমান থেকে তোমাকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে হ্যালুসিনেশন বা অলীক প্রত্যক্ষ এর জগতে। পরাবাস্তবতার মাঝে কাটছে তোমার জীবনের অমুল্য সময় গুলো । যদি এর বিপরীত টা করো । তুমি সেই লক্ষ অযুত ক্রমাগত নিয়ন্ত্রনহীন ভাবনা, ছবিগুলো কে জাজ(বিচার) না করো। তুমি শুধু দূরে দাঁড়িয়ে দেখো। সেসব ভাবনার উদয় আর বিলয়ের মাঝখানে তুমি তুমি শুধু রেসপন্স করো, কোন রিয়েক্ট না করো । তাহলে দেখবে সেসব তোমাকে আর নিয়ন্ত্রন করছে না, তুমি তার পুতুল নও। তোমার নিয়ন্ত্রন তাদের হাতে নেই। দাসত্ব থেকে তোমার মুক্তি সুচিত তার সাথে সাথে। ফলে, সে ভাল মন্দ, সুন্দর কুৎসিত, পবিত্র অপবিত্র - এ রকম কোন ইমেজ(প্রতিরূপ) তৈরি করছে না। তাহলে মনও পবিত্র বা অপবিত্র কিছুই নয় । সে একটা মিরর(আয়না) । তার সব কিছুই ক্ষনস্থায়ী, ঘন অন্ধকার এভিন্যু তে বিদ্যুৎ চমকের মতো - মমেন্ট্যারী । অতীতেই তার বসবাস। সে যখন তোমাকে সেখানে সংযুক্ত করতে পারবে না - তার অর্থ দাঁড়াবে তোমার ভেতরটা সজাগ হয়েছে। তুমি তখন অবসার্ভার,তুমি তোমাকে চিনেছ । মনেও তাহলে পবিত্র বলে কিছুই নেই, তেমনি অপবিত্র বলেও কিছু নেই । এই 'পবিত্র' ভাবনার মুলে ধর্ম, তার পুরোহিত, তার পুরুষ । পবিত্র অপবিত্র না থাকলে ধর্ম গুরুর ব্যবসা থাকে না। সেটা তার একটা অনুপম হাতিয়ার । তার সাথে ফিউশন হয়েছে পাপবোধ । সেটাই পন্য । পুরোহিত বা প্রিষ্ট বা ধর্ম গুরুর কাজ সে পন্য বাজারজাত করা। তার কোম্পানিকে দেউলিয়াত্ব থেকে বাঁচানো । নারী সেখানে বড় একটা ফ্যক্টর । সে নারী সকল পাপের উৎস , সে ঋতুমতী হয়। সে অপবিত্র, তাই উপসনালয়ে সে নিষিদ্ধ । নারী নিজেই সেই অভিধাকে গ্রহন করেছে। নিজেই নিজের প্রকৃতিকে, সৌন্দর্য কে, সৃজন ক্ষমতার পাপবিদ্ধ করাকে , স্বাগত জানিয়েছে - সেই 'পবিত্র' বানী কে মেনে নিয়ে। পুরুষের ধর্মের অসদাচরণকে আলিঙ্গন করে । পুরুষের
ধর্ম তাকে করে তুলেছে নন-ফাংশনাল। গনিকালয় আর আপন শয্যা - সবখানেই একই পবিত্রতা বোধের অনুবাদ পুরুষের মাঝে। এই বোধের গ্রাসে অবরুদ্ধ মানুষের মাঝে জন্ম নিয়েছে, ভেতরের পরিচর্যার প্রতি অনীহা। বাইর কে নিয়েই সে সদা বিব্রত। তার বাইরের সাজ গোঁজ, তার দেখানো পনা, তারা আচার অনুষ্টান, তার প্রানান্তকর শো ডাউন । পরিচ্ছনতা বোধের সাথে 'পবিত্র'তা কে ট্যাগ । বিজ্ঞানের সাথে বিকারের সেতুবন্ধন। ফলে মানুষ হয়ে উঠেছে আচার নিষ্ট । বিপুল আচারের মাঝে তলিয়ে গেছে যা কিছু শুভ, যা কিছু সম্ভাবনাময়, অনুসন্ধান যোগ্য । তারই কন্সিকয়েন্স অপরিণামদর্শী জীবন । পরিনামে, মানুষ তার মনকে পরিচর্যা থেকে ক্রমে দূরে চলে এসে শরীর সর্বস্ব একটি জীবন কে শ্রেষ্ট বলে মনোনীত করেছে।
( ভাবনার সুত্রধার - গৌতম বুদ্ধ)
১০/০৫/২০১৭- ২৬৪০ বুদ্ধ জয়ন্তী
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×