somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পঁচিশে বৈশাখ - আবারো সেই পুরনো কথা

০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে মানুষটা আজীবন ভালবেসেছেন বাংলার মাটি বাংলার জল, পদ্মার জল বিধৌত সিক্ত মাটির কাছে কান পেতেছিলেন, ভালবেসেছিলেন সেই মাটি মানুষকে, শুধু কবিতা আর গান দিয়ে নয় এমনকি আপন পুত্রকে বিদেশে কৃষি কাজ শিখিয়ে এনে - গরীব কৃষকের চাষাবাদে যাতে অজ্ঞতা মুক্তি ঘটে । তাঁর সে সব কল্যানকামিতা , তৎকালীন সমাজের ধর্মীয় গোঁড়ামীর প্রতি যার ছিল উত্থিত তর্জনী, মানুষের শুভ বোধ জাগানোর জন্যে যার ছিল আজীবন সাধনা - তাঁর কবিতায়, গানে,প্রবন্ধে, চিত্রকলায় - বহুধা বিস্তৃত সৃষ্টি সম্ভারে । আজ সেই মানুষটার জন্মদিন । পঁচিশে বৈশাখ । সংগত কারনেই বহু পুরনো অভিপ্রায় বার বার প্রকাশ করার প্রয়োজন আসে। হয়তো বলতে হবে বার বার ।
তাঁর গান বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত না হলে কিছুই আসতো যেতো না তাঁর, কনা মাত্র ক্ষতিবৃদ্ধি হতো না সেই বিশাল সৃষ্টি সম্ভারের - সমগ্র বিশ্বের অনুরাগীদের কাছে। যারা তাঁকে চিনেছে, বিশ্বব্যাপী, যারা তাঁর গানে কবিতায় এখনও বিশ্রাম খোঁজে, তাঁরা তাঁকে এ মতই রেখে দেবে। সেই বিচিত্রগামী মানুষটার আজ জন্ম দিন। যার সত্যিকার অর্থে কোন ধর্ম ছিল না, ছিল না দেশ কালের প্রতি ক্ষুদ্রতম মোহ । তাঁকে এখনও হিন্দু বানিয়ে চলছে এক শ্রেনীর রাজনীতির কীটদষ্ট মানুষ । নানান অভিধায় চলছে তাদের স্বেচ্ছায়জিত মুখাগ্নি । সেখানেই প্রমাণিত হয়, শত বর্ষ পরেও ফুলে ফলে পাতায় সজীব এই বিশাল বিটপী ।
পূর্ব বঙ্গের প্রতি তাঁর শুধু রক্তের টান ছিল না, শুধু কর্মের টান ছিল না, ছিল তার শ্যামলিমার প্রতি শিশুর মতো মুগ্ধতা । তাই এখানেই রচিত হয়েছিল সকল উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি সম্ভার।
তিনি কখনো এই মাটি ও মানুষের অকল্যান হবে সে চিন্তা করেন নি তাঁর কোন কথায়,চিন্তায়, লেখায় । তাই তিনি চান নি বাংলা দ্বিধাবিভক্ত হোক , ,তিনি চান নি ইংরেজ দের কূট কৌশলের কাছে বাঙালী পরাজিত হোক । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্টার লগ্নে সে সময়ের বিরুধিতাকারী দের সাথে তিনি কখনো একীভুত হন নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুচনার অব্যবহিত পরে ১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রনে তিনি ঢাকা আসেন এবং কার্জন হলে ১০ ফেব্রুয়ারি দি মিনিং অফ আর্ট এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি দি বিগ এ্যান্ড দি কমপ্লেক্স বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম তিনটি হল থেকে তাঁকে সংবর্ধণা জানানোর আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে রবীন্দ্রনাথ কেবল মুসলিম হলের সংবর্ধণা সভায় যোগদান করতে পেরেছিলেন। বাঙালি মুসলমান সমাজে মুক্ত বুদ্ধির চর্চা তথা বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা মুসলিম হল থেকেই এবং তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই। কিন্তু তাঁর নামে সেই পুরনো মিথ্যাচার আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে সেই ৪৭ এর প্রেতাত্মা দের স্বেচ্ছাকৃত প্রনোধনায় । পাকিস্থান আমলে আমাদের পূর্ব পুরুষরা বাংলাদেশের প্রতি, বাঙ্গালীর প্রতি ঋণ শোধে তাঁর পক্ষ হয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। আজ দৃশ্য পটের পরিবর্তন হলেও সে সময়কার মানুষদের একাংশের মানসিক সীমাবদ্ধতার কারনে এখনও চলছে একই ঘুনে ধরা ভাষায়, একই পয়ারে রবীন্দ্র বিরুধীতা । তিন তিনটা দেশের জাতীয় সঙ্গীত তাঁর লেখা থেকে উঠে এসেছে । কিন্তু বিশ্বের সচেতন মানুষ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত কে প্রশংসায় ধন্য করে, তার প্রধান কারন সেখানে উগ্র জাতিয়তাবাদ আব জিঙ্গো ইজমের ছিটে ফোঁটাও নেই, আছে শুধু ভালবাসা,মাটির প্রতি , প্রকৃতির প্রতি গভীর মমত্ব বোধ ।
শৈশব কাল থেকেই, যার কাছ থেকে সংগ্রহ করেছি সকল রকমের ক্ষুদ্রতাকে অতিক্রম করার প্রান শক্তি, সবার অধম, দীনের হতে দীন এর প্রতি শ্রদ্ধা ভালবাসা, ধর্ম, গোত্র, বর্ণ জাত পাত ভুলে অন্তরের সব দরজা জানালা খুলে দেবার অপরিসীম প্রানশক্তি, তাঁর জন্মদিনে সেই কৃতজ্ঞতা'র ঋণটুকু স্মরণ করছি ।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণপরিষদের সাথে বিএনপির সখ্যতার কারণ কি ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭


বিএনপির নেতাদের সাথে গণপরিষদের নেতাদের ঘন ঘন সাক্ষাতের বিষয়টি মিডিয়াতে প্রচারিত হচ্ছে।বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে যখন বিএনপি হাই কমান্ড থেকে পটুয়াখালী -৩(দশমিনা-গলাচিপা) আসনের নেতাকর্মীদের কাছে চিঠি দেয়া হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কি অন্ধকার?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫২



সুকান্তর একটা কবিতা আছে, দুর্মর।
"সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়:, জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।" মানুষের ভবিষ্যৎ বলা সহজ কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×