না, সেটা যথেষ্ট শাস্তি হবে না। চলুন আমরা তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিই, তাদের সব সম্পত্তি সরকারীভাবে বাজেয়াপ্ত করে নিই। ওদের চামড়া তুলে চৌরাস্তার মোড়ে ঝুলিয়ে রাখি। আমরা ওদের রক্ত দিয়ে রং খেলবো, ওদের হাড় গুড়ো করে আমরা সার হিসেবে ব্যবহার করবো। কিন্তু এসব তো াগামীকালও করা যাবে, ঐ বাঘ নামের বিড়ালগুলো পালিয়ে যাবে কোথায়! তার আগে না হয় আমরা কতগুলো নম্বর দেখে নিই।
২৩,২২,২১,২৪,২৩,২৫,২৬,২৩,২৫,২৪,২১,২১,২৮,২২,২৩
না এটা কোনো গাণিতিক ধারা নয়, এটা হলো বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের, যাদের আমরা টাইগার সম্বোধন থেকে এখন বিড়াল বানিয়ে দিয়েছি, তাদের বয়সের তালিকা।
এবার আমি নিজেকেই একটা প্রশ্ন করি। ২১ থেকে ২৮ বছর বয়সের মধ্যে আমি নিজে কি উদ্ধার করেছি? আমি কি দেশকে একদিনের জন্যেও আনন্দের কোনো উপলক্ষ এনে দিতে পেরেছি? আমার জন্য কি বিশ্বের মানুষ আমার দেশকে নতুন করে চিনেছে? আমার বয়স ২৮, বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড়টিরও তা-ই, আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি দেশকে এমন কোনো আনন্দের উপলক্ষ আমি অন্তত এনে দিতে পারিনি। তাহলে কি অধিকারে আমি সেই সব ছেলেদের রক্ত চাইতে পারি, যারা আজ না হোক, কোনো একদিন অন্তত দেশকে আনন্দে ভাসিয়েছে? আমি কি করে সেই সব ছেলেদের কটাক্ষ করতে পারি, যাদের জন্য বিশ্ব আজ এক নামে বাংলাদেশকে চিনে? আপনিও নিজেকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখুন।
খেলায় হারজিত থাকবেই, কিন্তু তাই বলে জিতলে আনন্দে আত্মহারা আর হারলে খেলোয়াড়দের মুন্ডুপাত, এই মানসিকতা কি ঠিক? স্বেচ্ছায় কি কেউ হারতে চায়? যেই খেলোয়াড়দের আমরা দু’দিন আগেও বাঘ বলে ডাকছিলাম, আজ দেখি অনেকে তাদের বিড়াল বলছে, আমার প্রশ্ন হলো তাতে নিজের সম্মান কি কিছু বাড়ছে? এরা তো আপনার দলেরই খেলোয়াড়, এদের যখন বিড়াল বলে সম্বোধন করেন, তো আপনি নিজে কি হাতিটা হচ্ছেন?
দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ, দর্শকদের সমর্থন যেমন আছে, আকাশচুম্বী প্রত্যাশার চাপটাও সেরকম আছে। সাউথ আফ্রিকার মতো পেশাদারী মনোভাবের একটা দল যেখানে সাত সমুদ্র দুরের সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপে বার বার ভেঙ্গে পরে, যে জন্য তাদের নামই হয়ে গেছে ‘চোকার’, সেখানে উপলক্ষ বিবেচনায় আমাদের তরুন দলটির কাছে আমাদের প্রত্যাশাটি কি একটু বেশিই হয়ে যায়নি? তারপরও তারা আমাদের যা দিয়েছে, সে জন্য কি তারা আমাদের ধন্যবাদ পেতে পারে না?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১১ বিকাল ৫:৩২