বউকে ফোন দিয়া আহ্লাদে গদগদ হইয়া মনে প্রশান্তি লইয়া "হ্যাপী ভ্যালেন্টাইনের এর শুভেচ্ছা" কহিলাম।
উনি বলিলেন "মনে কি রং লাগছে নাকি! এই ভালবাসা দিবস মিবস আবার কি? এইগুলা বাদ দিয়া সংসারে মনোযোগ দাও।"
আবারও আহ্লাদে গদগদ হইয়া দ্বিগুন উদ্যোমে কহিলাম,
"ফাল্গুনের আগুন লাগা শুভেচ্ছা"।
তিনি বলিলেন "এইসব আগুন লাগাইন্না বাদ দাও। বয়স তো কম হইলো না। আগুন টাগুন সংসারে লাগাইলে সমস্যা ব্যাপক।"
আমিও না দইমা কহিলাম " সুন্দরবন দিবসের শুভেচ্ছা"।
কিছুক্ষন চুপ থাকিয়া তিনি আবার উচ্চস্বরে খেকিয়া উঠিলো, "দুনিয়াতে শুভেচ্ছা জানানোর আর কোন দিবস পাইলা না! আক্কেল জীবনেও আক্কেল হবেনা! তুমি রোমান্টিক না৷ এত আন রোমান্টিক নিয়া জীবনে জ্বালার এমনেই অভাব নাই। এই শুভেচ্ছা বাদ দিয়া কাচা বাজার নিয়া আসো। যত্তসব আজগুবি দিবস এর শুভেচ্ছা কইতে আসছো।"
কোন উপায়ান্তর না দেখিয়া ফোন রাখিয়া দিলাম। ভাবলাম একখানা গোলাপ লইয়া যাই।
একখানা গোলাপের দাম শুনিয়া আমার হার্ট অ্যাটাক এর উপক্রম হইলো।
মনকে প্রবোধ দিলেম এই বলে যে বউ আমার এই সব দিবস টিবস এর ধারে কাছে নেই।
বাজার করিয়া লইয়া ঘরে ঢুকতেই বউ কহিলো "ফুল আনো নাই”।
থতমত খাইয়া মুখ ফস্কে বলিলাম " এনেছি তো"।
বউ এর মুখে হাসি দেখিয়া মন পুলকিত হইলো কিন্তু পরবর্তী সিন এর কথা চিন্তা করিয়া মুখে চিন্তার রেখা উদিত হইলো।
বউ লাজুক হাসিয়া বলিলো কি ফুল?
"কপি ফুল।
বউ এর চেহারায় উত্তেজনা দেখিলাম। সে বলিলো এই ফুলের তো নামও শুনিনি।
নিরস মুখে বাজারের ব্যাগ থেকে একখানা ফুল কপি বাহির করে দিয়া বলিলাম " ফুলের কাজ শেষ হইলে এটা সব্জিরও কাজ করবে”।
বউ একটা ঝামটা দিয়া "তোমার ফুলকপি তুমিই খাও" বলে ভেতরে চলে গেলো।
আমি পেছন থেকে বলিলাম ফুল আরও একটা আছে।
বউ চকচকে চেহারা নিয়া আসিয়া কহিলো কই দেখি।
আমি আবারও বাজার এর ব্যাগ থেকে এক তোরা পেয়াজের ফুল (অনেকে এটাকে পেয়াজের কালি বা হাই ও বলে) বউ এর সামনে দিয়া বলিলাম হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে।
বউ এর আগুন ঝড়া চেহারা দেখে আর কোন উচ্চবাচ্চ করিলাম না। আস্তে করে বলিলাম "এই সব ভালোবাসা দিবস মিবস বাদ দিয়া সংসারে মনোযোগ দাও।
ডিসক্লেইমার দিয়ে দেই। না হলে তো বাসায় থাকা যাইবো না।
" ইহা আমার মাথা থেকে আসিয়াছে। আসলে এরকম কিছুই হয়নি।