২৫ তারিখ ভাল ঘুম হয়নি।
রাত ১০.৩০ থেকে আমার অফিস। সকাল ৭.৩০ পর্যন্ত।
কিভাবে সারা রাত জেগে সার্ভিস দিব ভাবছি।
মাগরিবের নামাযের পরে আসলে ঘুমানোর সময় থাকেনা।
ঘুমালাম না। ৮টার মধ্যে নামায পরে খেয়ে ছুটলাম অফিস পানে।
MaHi Uddin কে ফোন দিয়ে বের করলাম। আড্ডা মারলাম ১০.১৫ পর্যন্ত।
এর পরে অফিস শুরু।
ঘুম পাবে ভেবেছিলাম। কিন্তু সাথে কিছু চমৎকার মানুষের শিফট পরায়। রাতে আর পেল মা।
২টার আগে মেজাজ বিগরে গেল। ফাও আলাপ করে ১৪ মিনিট কল নিলাম।
ভাবলাম ব্রেক নেয়া দরকার।
ব্রেকে ফোন এ দেখলাম একটা মিসকল, আসলে ফোন ছিল। কিছুক্ষন আগেই দিয়েছে। ব্যাক করে ১০ মিনিট কথা বললাম।
আবার অফিস।
৫টার পরে নামায পরে আসলাম।
৭.৩০ বাজার সাথে সাথে লগ আউট। এবার বাসায় গিয়ে খেয়ে ঘুম।
একটা বাস আসলো, চা খেতে চেয়েছিলাম। খেলাম না, আগে যেতে হবে। নাহলে আজিমপুরে আসতে দেরি হবে।
একটা সিটও পেয়ে গেলাম। বিশ্ব রোড থেকে একটা মেয়ে উঠল বাসে। বাসে সিট নেই। ভীর। মেয়েটা আমার পাশেই দাঁড়ানো।
ঘুম ঘুম চোখে দেখলাম তার দাড়াতে একটি কস্টই হচ্ছে। তাছারা আশে পাশে যারা দাঁড়ানো তারাও আন ইজি ফিল করছে।
আমি আমার সিট টা ছেড়ে দিলাম। বসতে বললাম।
মেয়েটা ভদ্রতার খাতিরে একবার বলল, না ঠিক আছে।
কিন্তু আমি তার পরেও তাকে বসালাম।
ধন্যবাদ দিয়ে বসলো।
বানানি আশার পরে আমি তার পেছনে সিট পেলাম।
তার পাশে একটা লোক। কিছু একটা বলছে মেয়েটা ওই লোকটাকে।
তার পরেই আমাকে বলল, ভাইয়া আপনি সামনে আসুন। ওই লোকটা ও সিট ছেড়ে দিল।
সে বলল আপনি বসেন এইখানে আমি আপনার সিটে বসি।
সিট চেঞ্জ করলাম।
পাশে বসে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কথায় যাবেন?
--নিলখেত। আপনি?
--আজিমপুর।
কিছুক্ষন চুপচাপ, এর মাঝে আমি একটা ফোন করলাম। সকালে ফোন দিব বলেছিলাম।
একটু পরে আমি বললাম আপু, আমি যদি ঘুমিয়ে যাই, খোচা মেরে তুলবেন। কেমন?
--কেন?
--ঘুমিয়ে গেলে মাথা কাত হয়ে আপনার উপর পরলে সেটা ভাল হবে না। তার চেয়ে আপনি জাগিয়ে দিলে অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা হবে না।
--ভাইয়া রাতে ঘুম হয়নাই?
--না। সারা রাত জেগে ছিলাম।
--কেন?
--অফিস ছিল?
--সারা রাত কিসের অফিস।
--জন সেবা করি।
-- শীত বস্র বিতরন করেন নাকি?
--আরেহ নাহ ধুর। আমি একটা কল সেন্টারে জব করি। কাল সারা রাত ছিল।
--ওমা তাই নাকি। কিসের?
--কোম্পানির নাম ডিজিকন।
--আপনাদের সার্ভিস টা কি? আপনাদের ফোন দেয় কারা।
--জানালাম। (অফিসিয়াল কিছু নিয়ম নীতির কারনে ক্লায়েন্টের নাম ফেবু তে দেয়া হল না)
--ওমা তাই। (এটা বলে ফ্রী ফ্রী কয়েকটা সার্ভিস নিল। এটা কিভাবে ওটা কিভাবে)
--আমি এক এক করে উত্তর দিলাম। এবার সে নেটওয়ার্ক এর সমস্যা এর কথা বলল। তাকে বললাম এটা কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে নিতে হবে।
--ভাইয়া কিসে পড়েন?
--মাস্টার্স শেষ।
--ওহ। ফেসবুক ব্যবহার করেন??
--জি একটু একটু করি।
--কিছু মনে না করলে আইডি টা বলবেন?
--সুন্দরী মেয়ে চাইলে ডিরেক্ট না করা যায় না। আমারও দিতে ইচ্ছেই করল। দিলাম।
--স্মার্ট ফোনটা বের করে খুজে বলল। কোনটা?
--দেখালাম।
--ফ্রেন্ড রিকয়েস্ট দিলাম।
--হু। আচ্ছা। নামটা কি আপনার?
--অবনি।
---সে কি যেন পরতে শুরু করল।
আমি আরেকটা ফোন দিলাম। ওর সকালে উঠতে হবে। তাই।
--ভাইয়া, এই লেখা গুলো কি আপনার?
--কোনটা?
--ফেসবুকে যেগুলো দেয়া।
--হু সামান্য লেখালেখি করি। সময় হয়ে ওঠে না।
--আপনি তো চমৎকার লেখেন।
--ধন্যবাদ।
--একটা রিকয়েস্ট করি?
--করুন?
--আপনার সাথে দেখা হওয়ার পরে থেকে এই পর্যন্ত যা যা হল তা আপনি লিখতে পারবেন?
-- কেন? (মনে হচ্ছে আমি লিখেছি এটা তার বিশ্বাস হচ্ছে না, পরীক্ষা চাইছে)
--জাস্ট দেখব কিভাবে উপস্থাপন করেন।
--সন্দেহ করছেন লিখতে পারি কিনা?
--না না ভাইয়া ছিছি। আসলে আমাকে নিয়ে লিখলে ভাল লাগবে।
--ওকে আজ পাবেন।
বাসের ভাড়া নিতে আসলো। আমি ২ জনের ভাড়া দিলাম। অবনি কিছুতেই তার ভারা দিতে দিবেনা।
তুমি আমাকে ভাইয়া বললে না? ছোট বোনের ভারা আজ আমি দিলাম।
অবনি আর কোথা বাড়াল না।
--সকালে খেয়েছেন?
--না, বাসায় গিয়ে খাব। চা খেতে চেয়েছিলাম। বাস চলে আসার কারনে আর খেতে পারিনি।
--অবনি একটা বিস্কিট বের করলো। খেতে বলল।
আমি না করলাম, সে প্যাকেটা ছিরে জোর করে আমার হাতে দিল।
--ছোট বোন বললেন না, খেতে হবে।
তাকে নিতে বললাম, সে খেয়ে এসেছে, তবুও খেল।
আমার একটু খিদে পেয়েছিল। অনেক গুলো খেলাম।
আর না বলে তাকে দিলাম।
ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে আমার দিকে এগিয়ে দিল।
বাস যে কোন ফাকে নিউ মার্কেট চলে আসলো। টের পেলাম না।
নীলক্ষেতের সিগন্যালে বাস দাঁড়ানো। সে নামবে। আমি সাইড দিলাম।
বের হয়ে যাওয়ার সময় বায় বললাম। হাসি দিল একটা।
গেটের কাছে গিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, একটু এখানে নামবেন?
কথা না বাড়িয়ে উঠে পরলাম।
নামলাম। সে কাকে যেন বলছে আমি নেমেছি তুই এসে ফোন দিস। ফোন রেখে আমার দিকে তাকাল।
--আপনি না চা খেতে চেয়েছিলেন, আসুন চা খাই।
--চা খাওয়া যায়।
--বিলটা আমি দিব।
--সে দেখা যাবে।
--না না, আমি দিব।
এখানে ভাল কোন দোকান খোলা দেখতে পেলাম না।
একটা টোঙ এর মত দোকান খোলা।
২ কাপ চা দিতে বললাম।
--কোথায় যাবে এখন??
--এক ফ্রেন্ডের বাসায়।
কোথায় বাসা। পাশেই। কিছুক্ষনের মধ্যেই আসবে। ও বাইরেই আছে। ৫ মিনিট লাগবে বলল।
--দাওয়াত?
--না প্রাক্টিক্যালের কিছু কাজ আছে।
ও আচ্ছা।
চা দেয়া হল।
--তুমি কোথায় থাক?
--নিকুঞ্জ তে।
--ভাই বোন কয়জন?
--আমার একটা ছোট বোন আছে।
--বাসায় কে কে থাকেন?
--আব্বু আম্মু আর আমরা।
তার ফোন বেজে উঠল।
চা টা কোথায় রাখবে খুজছে, আমি বললাম আমার হাতে দাও।
আমি ২ হাতে ২ কাপ ধরে দাঁড়ানো। সে ফোনে বলছে ২মিনিটের মধ্যে আসছি দাড়া।
ফোন রেখে চা নিতে নিতে বলল চলে এসেছে।
দ্রুত চা শেষ করল। বুঝলাম এবার বিদায়ের পালা।
বিল আমাকে দিতে দিল না।
সে বলল ঠিক আছে ভাইয়া থ্যাঙ্ক ইউ সময় দেয়ার জন্য।
আমি বললাম এগিয়ে দেই।
হেসে মাথা কাত করে সম্মতি দিল।
তার ফ্রেন্ড কে দেখে পরিচয় করিয়ে দিল ভাইয়া বলে।
মেয়েটা সালাম দিল।
আমি উত্তর দিয়ে ওদের বিদায় দিলাম।
গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারতো।
বাসায় এসে ফ্রেন্ড রিকয়েস্ট গ্রহন করলাম।
নাস্তা খেয়ে ঘুমালাম। ২ টায় উঠে নামায পরে ফেসবুকে লগিন করে দেখলাম অবনির একটা মেসেজ।
৪.৩০ এর পরে কি ফ্রী আছেন? থাকলে জানান। আমি আর জাহান (অবনির ফ্রেন্ড) ফুস্কা খেতে বের হব।
আমি আসব কি?
সাথে সাথেই উত্তর এক।
সময় থাকলে আসুন।
নাম্বার টা চাইলাম না, যদি না দেয়।
--কোথায় থাকব?
যেখানে চা খেয়েছি ওখানে। শার্প ৪.৩০।
ফেবুতে যোগাযোগ করে একটু আগেই বের হলাম।
ওড়াও আসলো।
৫. ২৫ পর্যন্ত থাকল।
জাহান কে বিদায় দিয়ে অবনিকে বাসে তুলে দিলাম।
বাসে ওঠার আগে বলল। চমৎকার একটা দিন পার করলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে।
--তোমাকেও ধন্যবাদ। তোমার সুন্দর সময় আমার সাথে কাটানোর জন্য।
--আপনি সুন্দর করে কথা বলেন। অবশ্য লেখক মানুষ। সুন্দর করে কথা বলবেন এটা স্বাভাবিক।
--আরে ধুর কিসের লেখক। সময় পার করি।
বাস ছেড়ে দিচ্ছে। সে উঠে বায় বলল। আমিও বায় বলে বাসায় আসলাম।
মাগরিবের নামাযটা পরেই লেখাটা লিখে শেষ করলাম। কিছু অংশ ৩ টায় লেখা ছিল।
(অনুরোধে লেখা।)
লেখাঃ ২৬ নভেম্বর ২০১৬