১লা বৈশাখ আসন্ন অনকেরই হয়তো প্রিয়জনের সাথে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে। সেই পরিকল্পনায় একটু হাওয়া দেওয়ার জন্য এই পোষ্ট ....... যেহেতু ফটোগ্রাফি নিয়া লিখতেছি তাই আসো দেখি ক্যান্ডেল লাইটে কেমনে ফটুক তুলন যায়।
মোমবাতির আলো সাধারন অন্যান্য আলো উৎস থেকে একটু ভিন্ন প্রকৃতির। মোমবাতির আলো ১০০০-২০০০k কালার টেমন্পারেচারের হয় যা ফটোগ্রাফির সাবজেক্টে আলোকিত করে একটু অন্যভাবে সেই সাথে থাকে উষ্ণতার ছোয়া। ফলশ্রুতিতে ফটোগ্রাফ হয় নজরকাড়া, হৃদয়কাড়া ও মোহনীয়। আলো আধারির খেলায় এই উষ্ণতার ছোয়া মানুষের মনের রোমাঞ্চকে জাগ্রতকরে তার অজান্তে, এই কারণে মোমবাতির আলোয় ছবি তোলা ফটোগ্রাফারদের মাঝে দারুণ জনপ্রিয়।
জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে অধিকাংশ নতুন প্রজন্মের ক্যামেরায় ক্যান্ডেল লাইট নামের একটি সতন্ত্র মোড তৈরী করে দেওয়া হয়েছে, যা ক্যান্ডেল লাইটে ছবিকে সর্বচ্চো প্রকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। তথাপি যারা একটু আলাদা ধাঁচের ছবি তুলতে চায় তাদের জন্য ম্যনুয়েল মুডের বিকল্প নাই।
চলো নীচে কিছু বিষয়ের দিকে আলোকপাত করি যা তোমাকে ক্যান্ডেল লাইট ফটোগ্রাফির জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে। মনে রাখবে এইখানে তোমার প্রধান আলোক উৎস হইতেছে মোমবাতির আলো এবং এই আলোতেই তোমার ফটোগ্রাফের প্রকাশ ঘটাইতে হবে।
সর্ব প্রথম সঠিক রঙের জন্য তোমার ক্যামেরার হোয়াইট ব্যালেন্স ঠিক করে নাও। হোয়াইট ব্যলেন্স ঠিক না হলে ছবিতে রং ঠিকভাবে আসবে না ফলে ছবি তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাবে না।
যেহেতু মোমবাতির আলো তোমার ছবি প্রধান আলোক উৎস - তাই কোন ভাবেই ফ্লাস ব্যবহার করা যাবে না। কারণ ফ্লাস তোমার পারিপার্শিক আলো কে মেরে ফেলবে। মোবাতির আলো রহস্যময়তা বা তার অনুরণন তোমার সাবজেক্টের উপর যে উষ্ণতার ছোয়া বুলিয়ে দিয়ে যে সপ্নীল আবেশ তৈরী করে তা ধারণ করাই তোমার মূল উদ্দেশ্য - তাই প্রথম শর্ত হইলো কোনভাবেই ফ্লাস ব্যবহার করা যাবে না।
যদি মনে করো আলোর পরিমান কম তাহলে আরো ক্যন্ডেল যোগ করো তাহলে আরো আলো পাবে । যেহেতু ফ্লাস ব্যবহৃত হবে না তাই আলোর পরিমান বাড়ানো জন্য অন্য কোন উৎস বাদ দিয়ে আরো ক্যন্ডেল যোগ করো যা তোমাকে আরও বেশী সহজ করে দিবে তোমার শাটার স্পিড নির্ধারণ কে। ধীরগতির শাটার স্পিড নির্ধারণ করো তোমার ছবির জন্য, যা বেশী পরিমান আলো ধারণ করাবার পক্ষে সহায়ক। এইসময় মনে রেখ শাটার স্পিড কিভাবে তোমার ফটোগ্রাফে প্রভাব ফেলে। অনেক সময় অতি ধীর গতির শাটার স্পিডও তোমার ছবিকে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছে দিবে।
যেহেতু প্রক্রিয়াটা ধীর গতির সেজন্য ক্যামেরা শেকের আশংকা বিদ্যমান । এটা এড়াতে অবশ্যই ট্রাইপড ব্যবহার করবে যা ক্যামেরা শেকের আশংকা অনেকাংশে কমিয়ে দেবে। সর্বোত্তম পন্থা হইলো ট্রাইপড এবং সাথে সাথে ওয়ারলেস বা ক্যাবল রিলিজ ব্যবহার করা। ক্যামেরা শেক একটি ছবি অন্যতম শত্রু - যা ঝাপসা এবং আউট অব ফোকাস এর জন দায়ী।
তোমার ফটোগ্রাফির রচনা কৌশলে ব্যকগ্রাউন্ড এবং টেবিলক্লথের দিকে নজর দাও - কালার কম্পোজিশন কি ঠিক? শুধমাত্র সন্তুষ্ট হওয়া পর ছবি তোল। ছবি তে ব্যকগ্রাউন্ড গুরুত্বপূর্ণ, যদি মনমতো না হয় তাহলে ক্লোজ আপ তুলতে চেষ্টা করো বা এপারচার বাড়িয়ে দাও ( এফ নাম্বর কমিয়ে দাও) তাতে সাবজেক্ট ফোকাসে থাকবে বাকী ঝাপসা।
পারিপার্শ্বের সচল বস্তুর অবস্থান যথা সম্ভব কমিয়ে দাও অনাকাংখিত সচল বস্ত তোমার ধীর লয়ের ফটোগ্রাফিতে ভুত হয়ে দেখা দিবে
এপারচার প্রায়োরিটি মোডে ছবি তুলতে চেষ্ট করো । কি পরিমান বা কতটুকু তুমি ফোকাসের আওতায় রাখতে চাও এই মোড তোমাকে অপশান দিবে এপারচার পরিবর্তনের মাধ্যমে। শাটার স্পিড নিয়া চিন্তিত হইবার কোন কারণ নাই এইমোডে এপারচার সেট করার পর শাটারস্পিড ক্যামেরা নির্ধারন করবে ফলে কাঙ্খিত এক্সপোজার পাওয়া সহজ হইবে। যদি তুমি কম ডেপ্থ অব ফিল্ড চাও তাহলে এরাপচার বাড়িয়ে দাও - বেশী ডেপ্থ অব ফিল্ড চাও তাহলে এপারচার কমিয়ে দাও। মনে রেখ - অবশ্যই কয়েক সেকেন্ডের শার্টার স্পিড গ্রহন করা উচিত নয়।
অনেকই আইএসও বাড়িয়ে দিতে বলে - আমার উপদেশ হইলো আইএসও ততক্ষন বাড়িয়ো না যতক্ষন শার্টার স্পিড অতিধীরগতির হয়।
মিটারিং এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ - অবশ্যই স্পট মিটারিং ব্যবহার করবে। যেহেতু আলো আধারির খেলা চলবে তাই স্পট মিটারিং করতে হবে। তোমার সাবজেক্টে স্পটে নিয়ে মিটারিং করো।
ছবি তোলার জায়গায় যদি বায়ু প্রবাহের কোন কিছু থাকে তা বন্ধ করে দাও। বাতাসের প্রবাহ কমিয়েদিলে ক্যান্ডেল স্থির থাকবে ছবি সুন্দর হবে।
আলো প্রতিফলন কাজে লাগাও দেখবে ছবি আরও সুন্দর হবে।
চলে যাও তোমার প্রিয়জনে সাথে ক্যন্ডেল লাইট ডিনারে - তুলে ফেল ছবি ।
সর্বোপরি - সাবধানতার সঙ্গে আগুন নিয়ে খেলা করো ।
কিঞ্চিত আপডেট করিয়া পুনঃপ্রকাশ করিলাম
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:২২