সাহেবকে বলে আজ একটু তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বার হলাম। নাহ আজ আর অন্য কোথাও যাব না, তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরতে হবে। দ্রুত পা চালিয়ে স্টেশনে গেলাম। বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হয়নি, ট্রেন পেয়ে গেলাম। ট্রেন থেকে নেমে কিছু রজনীগন্ধার স্টিক নেওয়ার উদ্দেশ্যে আবার একটু বাজারে ঢুকলাম। সকালে দেওয়াল থেকে শ্বেতার ফটোটা নামিয়ে ভালো করে মুছে টেবিলে রেখে এসেছিলাম। হ্যাঁ আমার স্ত্রী শ্বেতা আজ তিন বছর হল আমাকে ছেড়ে অমৃতলোকে চলে গেছে। গত দু'বছর এই দিনটিতে ছুটি মিললেও এবার অফিসে কাজের চাপ অত্যধিক বেশি হওয়ায় সাহেবকে বলতে সাহস পেলাম না। তবে একটু আগেভাগে সাহেব ছেড়ে দেওয়াতে ওর প্রয়াণ দিবস পালন করার মতো যথেষ্ট সময় পেয়ে বিষন্নতার মধ্যেও কিঞ্চিৎ আলোকচ্ছটায় খুশি হলাম।
মেন রাস্তা থেকে নেমে নাক বরাবর পাঁচ মিনিট হেঁটে গান দিকের প্রথম গলির ঠিক দুটি বাড়ির পরেই আমার বাড়ি। এই এলাকার সারমেয়দের বেশ উৎপাত আছে। রাস্তার মোড়ে মাঝে মাঝে বেশ কিছু সারমেয়কে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।দিনের বেলা খাবারের সন্ধানে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ালেও রাতে গলি ছেড়ে ওরা অন্য কোথাও যায় না। ওদের দায়িত্বশীলতার পরিচয়ে আমরা খুশি। কিন্তু মাঝে মাঝে গভীর রাতে ওদের অতি সক্রিয়তার ফলে পাড়ার সায়ন, অয়নদের মতো আমাকেও মাঝে মাঝে লাঠিসোটা নিয়ে পথে নামতে হয়। রাত দুপুরে পাঁচিলের গায়ে বা রাস্তার কোথাও জোরে জোরে লাঠি ঠুকলে ওরা বুঝতে পারে ওদের অপরাধের মাত্রা। আর তখন করুন সুরে কেউমেউ করতে করতে যে যেদিকে পারে পালিয়ে যায়। সেদিন সন্ধ্যে হতে যথেষ্ট বাকি ছিল। কাঁধে অফিসের ব্যাগ হাতে রজনীগন্ধার স্টিক নিয়ে পাড়ার গলিতে ঢুকতেই সারমেয়কুলের চিৎকার তীব্র থেকে তীব্রতর হলো। আরও একটু এগিয়ে এসে দেখলাম ওদের অত্যাচারে এক ব্যক্তি আমার বাড়ির গেটে লেপ্টে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জোরে জোরে ধমক দিতেই সারমেয়গুলো সরে গেল। ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কয়েক সেকেন্ড লাগলো চিনতে।আসলে এরকম আলুথালু বেশে বার্ধক্যের গোড়ায় পৌঁছে আমার গ্রামের মাস্টার মশাইকে এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবো- এটা কল্পনাও করতে পারেনি। আমি ওনার পায়ের ধুলো মাথায় নিতেই,
-থাক থাক বাবা থাক। দীর্ঘজীবী হও, বলে আমার মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করলেন।
-আপনি কখন এসেছেন কাকাবাবু?
-সঠিক সময়টা মনে নেই, তবে আনুমানিক বিকাল সাড়ে চারটা/পাঁচটা নাগাদ তো হবেই..
আমি হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললাম,
-এখন তো পৌনে ছয়টা বাজে। তাহলে আপনি এতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছেন?
-তাতে কি হয়েছে বাবা! আমি তো জানি তুমি কোন না কোন সময় ফিরবে।আর সে পর্যন্ত তো আমাকে একটু অপেক্ষা করতেই হত।
-বাড়ি চিনতে অসুবিধা হয়নি আপনার?
-একটু অসুবিধা যে হয়নি তা নয়। তবে তোমার চেহারার বর্ণনা দিতেই মোড়ের মাথায় চায়ের দোকানে বসা এক ভদ্রলোক সঙ্গে এসে বাড়ি দেখিয়ে দিলেন।
-বাড়ি থেকে কখন বেরিয়েছেন কাকাবাবু?
-ওসব থাক বাবা। আসলে আমি একটা দরকারে এসেছিলাম।
-আপনার দরকারি কথা আমি অবশ্যই শুনব কাকাবাবু।তার আগে হাতে মুখে জল দিয়ে নিন। আমি ততক্ষনে একটু খাওয়ার ব্যবস্থা করি।
কাকাবাবুকে নিয়ে আমি ঘরের ভিতরে নিয়ে গেলাম। সারমেয়কুলের অত্যাচার সহ্য করেও এতক্ষণ আমার জন্য অপেক্ষা করছেন বলে দুঃখ প্রকাশ করলাম। শহরের যান্ত্রিক জীবনে আমার আত্মীয়-স্বজন একেবারেই নেই বললেই চলে।শ্বেতা থাকাকালীন ওর বাপের বাড়ির লোকজন যা একটু আধটু আসতো কিন্তু ও চলে যেতেই সে সব পর্ব একেবারে চুকে গেছে। এরকম নিঃসঙ্গতার মাঝে কাকাবাবুকে পেয়ে শরীরী ভাষাতে কৃতজ্ঞতার জানান দিলাম। মুখের এক কোণে কিঞ্চিৎ হাসি এনে কাকাবাবু বললেন,
-আমাদের মত বুড়োদের জন্য পৃথিবীটা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে বাবা।শুধু পরিচিত আপনজন নয়, অবলা জন্তু কুকুরগুলোও পর্যন্ত বুঝতে পেরেছে আমরা সমাজের কতটা অপাংক্তেয়। ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই, কোথাও ঠাঁই নাই আমাদের।
-আপনি কি সব বলছেন কাকাবাবু? আমার তো কিছু মাথায় আসছে না? নিজেকে এতটা অপাঙ্ক্তেয় কেন ভাবছেন?
অদ্ভূত রহস্যময় হাসি এনে,
- না বাবা। এমনি এমনি বললাম। তুমি অবশ্য এসব কিছু নিয়ে চিন্তা করোনা।
আমি কাকাবাবুকে বৈঠকখানায় বসিয়ে খুব কম সময়ে শ্বেতার ফটোর সামনে ধুপ জ্বালিয়ে, ভাসে রজনীগন্ধার স্টিক দিয়ে চলে এলাম। লক্ষ্য ছিল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওনাকে একটু খাওয়ার ব্যবস্থা করা। খেতে খেতে উনি বলতে লাগলেন,
-আমার মা জননীকে তো দেখছি না... উনি কি বাপের বাড়ি গেছেন?
আমি ওনাকে এই মুহূর্তে আমার কিছু বলা সঙ্গত হবেনা ভেবে পাল্টা জানতে চাইলাম, ও
-তো কাকাবাবু আপনারা কেমন আছেন?
- এই রকম দিন কাটছে এই যা।নিখিলেশ যে কথাটা বলতে আজ তোমার কাছে এলাম।
-হ্যাঁ বলুন কাকাবাবু।
-আমি এবার পুজোয় আমার বউমা অর্থাৎ সপ্তর্ষির বউয়ের জন্য একটি শাড়ি কিনেছিলাম। কিন্তু বৌমা শাড়িটি নিতে অস্বীকার করায় একটু বেকায়দায় পড়ে তোমার কাছে আসা।
- বৌদি কেন নিতে অস্বীকার করেছে কাকাবাবু আমি কি জানতে পারি?
-সে অনেক কথা বাবা। বাড়ির কথা আবার তোমাকে বলবো?
-ঠিক আছে। আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলবো না। আমি আর জানতে চাইবো না। তবে আমাকে কি করতে হবে সেটা যদি বলেন..
কাকাবাবু কিছুটা আমতা আমতা করে আবার বলতে লাগলেন,
-তুমি জানো কিনা জানি না, সপ্তর্ষি কলকাতার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে।
-না জানতাম না । আসলে আমি তো বহুদিন আগে গ্রাম ছেড়ে চলে এসেছি।
-হ্যাঁ তা তো বটেই। তাহলে তো তোমার অজানারি কথা।
-ওর বেতন তেমন ভালো নয়।আকার ইঙ্গিতে বোঝায় যেন আমি আমার পেনশনের গোটা টাকাটা ওর হাতে তুলে দিই।
-ইস সে কি! সারা জীবন দুই ভাই-বোনকে কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। অথচ শেষ জীবনে এই কটা টাকার প্রতিও ওদের এতোটা লোভ! আমি ঠিক কল্পনা করতে পারছিনা কাকাবাবু।মানুষ এতটা নিচ কি করে হয়!
-তবে ছেলে কোন দিন মুখের উপর কিছু বলেনি। বৌমাই বরাবরই সে দায়িত্ব পালন করে।একার আয়ে এতগুলো পেট চালানো সমস্যার হচ্ছে বলে প্রায়ই হতাশা প্রকাশ করে। আমি তো বুঝি বৌমা কিসের ইঙ্গিত করছে। কিন্তু ধরা দেয়নি কোনদিন।
-সপ্তর্ষি দা জানে না সে কথা?
-না বৌমা ওর সামনে আবার খুব ভালো আচরণ করে।
-আপনি বলেন নি সপ্তর্ষিদাকে এ কথা?
-ভেবেছিলাম বৌমা মেয়ে তো! সে হয়তো একদিন ভুল বুঝতে পেরে শুধরে যাবে। কিন্তু মন্দ আচরণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়াতে কয়েকদিন আগে সপ্তর্ষিকে বলি সে কথা। এটা বলাতে একেবারে রুদ্র মূর্তি ধারণ করে বৌমা। সে কি বিশ্রী অঙ্গভঙ্গিতে বিলাপ করতে থাকে।আমি ওর মিথ্যাচার প্রমাণ করতে চেয়েছি বা মিথ্যাবাদী বলে সংসার ভাঙতে চেয়েছি বলে কান্নাকাটি জুরে দেয়।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমার খাওয়া পরার চিন্তা করতে গিয়ে সংসারের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম ঠিকমত পালন করতে পারে না, সেই আমিই কিনা ছেলের সামনে বউমাকে অপদস্ত করার পরিকল্পনা করেছি বলে রাগে, ক্ষোভে আমাকে অভিসম্পাত করতে থাকে।
-কি আশ্চর্য কাকাবাবু! আপনার মতো নিপাট একজন মানুষের কপালেও এমন দুর্ভোগ?
কাকাবাবু আবারো বলতে লাগলেন,
-এই অবস্থাতেও কোন ক্রমে চলে যাচ্ছিল। আগে আগে খাবার দাবার দেরিতে হলেও সামনে এনে দিত। কিন্তু ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ওসব বন্ধ করে দেয়। আমি কিছু বললে বৌমা আমার কোন কথার উত্তর দিত না। আমি বাধ্য হয়ে বেশ কিছুদিন নিজের খাবার নিজে নিতাম। কিন্তু সেটাও বৌমা সহ্য করতে পারলো না। এবার বাড়িতে রান্না করাই ছেড়ে দিল। আমি আর ভাতের অপেক্ষায় না থেকে আশপাশের দোকান থেকে শুকনো খাবার, বিস্কুট খেয়ে বেশ কিছুদিন কাটিয়ে দিলাম। ভাবতাম উপরওয়ালা যদি বুড়োটাকে তুলে নিত তাহলে চলমান নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতাম। কিন্তু উপরওয়ালাও আমাকে ভুলে গেছে। চোখের সামনে এত লোকের ডাক আসছে কিন্তু আমার কথা ওনার মনে পড়ছে না।
কিছুক্ষণ পিন পতন নিরাবতার পর কাকাবাবু আবার বলতে লাগলেন,
- জানো বাবা ভিতরে ভিতরে আমিও অস্থির হয়ে উঠেছিলাম ওদের সঙ্গে যেনতেন প্রকারে আপস করার জন্য। ইতিমধ্যে এক মাসে পেনশনের গোটা টাকাটা সপ্তর্ষির হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ও হাসতে হাসতে ফিরিয়ে দিল। নিজের ওপর চাপ অত্যধিক বেড়ে গেল। কি করব, কোথায় যাব ভেবে ভেবে দিশা পেতাম না। দেখতে দেখতে পুজো চলে এলো। পুজোকে উদ্দেশ্য করে বহু বছর ধরে চলে আসা পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনের জন্য কিছু কেনাকাটা থাকে। এই উদ্দেশ্যে বৌমার জন্য এই শাড়িটি কিনেছিলাম। কিন্তু সে পরিষ্কার জানিয়ে দেয় আমার দেওয়া কোন জিনিস গ্রহণ করবে না। দোকানে গিয়েছিলাম ফেরত দেওয়ার জন্য। কিন্তু দোকানিও না করে দিয়েছে। এমতাবস্থায় তোমার কাছে এলাম; কিছু মনে না করে এই বুড়ো বাপের শাড়িটি যদি আমার মা জননীকে দাও এই আশায়।
আমার দুই চোখ আদ্রতায় ভরে গেল। মুখে কোন শব্দ করতে পারলাম না। অনবরত ঠোঁট কাঁপতে লাগলো। আমি শাড়ি বিশারদ নয়। শ্বেতা বেঁচে থাকাকালীন ওর সঙ্গে মাঝে মাঝে কেনাকাটায় যেতে হতো। আমাকে সে যে শাড়িটাকেই দেখাতো সবগুলোই ভীষণ ভালো লাগতো। ও বিরক্ত হয়ে বলতো, এত বছরেও এখনো শাড়ি চিনতে শিখলাম না। বাস্তবে সুন্দর সুন্দর শাড়ি গুলির মন্দ বলে কিছু আমার চোখে পড়তো না। আজও কাকাবাবুর আনা শাড়িটিও একই রকম মনে হল। ভারী চমৎকার শাড়িটি।হাতে নিয়ে বুকে জড়িয়ে চোখের জল ঠেকাবার আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। চোখের জল বাঁধ মানলো না। বাধ্য হয়ে মুহূর্তে পিছন ফিরে দাঁড়ালাম। মনের মধ্যে কান্না গুমড়ে গুমড়ে উঠতে লাগল। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করে সেটাকে বাঁধা দিলাম।তবে জোরে জোরে বারকয়েক হাঁচিকে আর বন্ধ করতে পারলাম না। কাকাবাবু আমার অস্বাভাবিকত্ব বুঝতে পারলেন। জানতে চাইলেন,
-বাবা তুমি ওরকম করছ কেন? তবে কি শাড়িটি তোমারও পছন্দ হয়নি?
আমি ভেজা কণ্ঠে কোনক্রমে উত্তর দিলাম,
- না কাকা বাবু না। আসলে বিষয়টি পছন্দ অপছন্দের নয়, বলে আবার চুপ হয়ে গেলাম।
কাকাবাবু বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলাম। ভাবলাম কাকাবাবুকে এবার বিষয়টি শেয়ার করি। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। কাকাবাবুর হাত ধরে শ্বেতার ফটোর সামনে নিয়ে এলাম। তখনো প্রজ্বলিত ধুপ থেকে সাদা ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকাতে পাকাতে মৃদুমন্দ গতিতে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছিল। সঙ্গে রজনীগন্ধার মিষ্টি সুবাস গোটা ঘরের পরিবেশকে এক আবেশে ভরিয়ে তুলেছিল। শ্বেতা কোথায় আছে কেমন আছে জানিনা। তবে ঘরের স্নিগ্ধতা যে তার আত্মাকে শান্তি দিয়েছে, এমনটি ভেবে কিছুটা বিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম। আমি নতমস্তকে ফটোর সামনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ পরে আমিই আগে মুখ খুললাম,
-আজ ওর তৃতীয় প্রয়াণ দিবস কাকাবাবু। আমাদের বিয়ের বেশ কয়েক বছর পর শ্বেতা কনসিভ করেছিল। কিন্তু সাত মাসের মাথায় বাথরুমে পড়ে গিয়ে মিস্কারেজ হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। খবর পেয়ে আমি বাড়ি এসে সাথে সাথে ওকে হসপিটালাইজড করি। কর্তব্যরত ডাক্তারবাবুর হাতে-পায়ে ধরেছিলাম। ওনি চেষ্টার ত্রুটি করেননি। যদিও এত কিছু করেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হই। আমি শ্বেতাকে আর ধরে রাখতে পারিনি। আমার কথা শেষ না হতেই হঠাৎ একটা শব্দে তাকিয়ে দেখি কাকাবাবু মেঝেতে পড়ে আছেন। ছুটে গিয়ে চোখে জলের ঝাপটা দিলাম। নাহ তাতে কিছু হলো না। অগত্য দেরি না করে বাইরে কে কোথায় আছে বলে চিৎকার করাতে আশপাশের বাড়ি থেকে কয়েকজন মহিলা শিশু বেরিয়ে এলো।উপস্থিত কয়েকজনকে কাকাবাবুর চোখে-মুখে জলের ঝাপটা মারতে বলে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটলাম বাজারের দিকে অটোর সন্ধানে। সঙ্গে সঙ্গে একটা অটো পেয়েও গেলাম। কাকাবাবুকে চাপিয়ে দ্রুত নিয়ে গেলাম হসপিটালে। ইমারজেন্সিতে কর্মরত ডাক্তারবাবু কাকাবাবুর হাত ধরে অনেকক্ষণ পরীক্ষা করলেন। অবশেষে ঠোঁট বেঁকিয়ে অস্ফুটে বলে উঠলেন,
-আরেকটু আগে আনলে কতদূর কি করা যেতো।
-ডাক্তারবাবু আমি একদম দেরি করিনি। বড়জোর আধ ঘণ্টা আগে ঘটনাটি ঘটেছে।
-আপনি পেশেন্টের কি হন?
-আজ্ঞে উনি আমার কাকাবাবু হন।
-আপনার কাকাবাবু হার্ট ফেল করেছেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:-
১-উপরের ছবিটি আমার ছাত্র শ্রীমান সুজিত কুমার দাসের আঁকা।
২- মূল গল্পটি একটু বড় হওয়ায় পর্বাকারে দিতে বাধ্য হলাম। শেষ অংশটি দুই-একদিনের মধ্যেই দেওয়ার ইচ্ছা আছে। মূলতঃ মরীচিকার একঘেঁয়েমি কাটানোর জন্যই গল্পটির আগমন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:২৭