প্রিয় এবং অপ্রিয় ব্লগারগন, আশা করি সবাই ভাল আছেন। চলে এলাম মাসের আরেকটি ব্লগার'স ইন্টারভিউ নিয়ে । আজকের ইন্টারভিউয়ে উপস্থিত আছেন সামু ব্লগের বর্তমান মডারেটর কাল্পনিক_ভালোবাসা । সময় বের করে ইন্টারভিউয়ের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য ব্লগার এবং মডারেটর কাল্পনিক_ভালোবাসাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
তাহলে আর দেরি না করে আজকের ইন্টারভিউ শুরু করা যাক !
অপুঃ কেমন আছেন?
কাভাঃ ধন্যবাদ অপু। আলহামদুলিল্লাহ! আমি ভালো আছি।
অপুঃ সামু প্লাটফর্মে আমরা সবাই ব্লগার । একসময় আপনি নিজেও ব্লগার ছিলেন । ছিলেন বলছি কেন, এখনও আছেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে মডারেটর হওয়ার আগের কাভা আর মডারেটর হওয়ার পরের কাভা, এই দুই কাভার ভেতরে আপনি কোন কাভাতে ব্লগিং করে স্বস্তি ও শান্তি পেতেন বেশি?
কাভাঃ আমি মডারেটর হবার ঠিক পরবর্তী সময়গুলোতে তেমন কোন সমস্যা হয়েছে বলে মনে হয় না। আমরা সবাই একে অন্যের ব্লগিং ধারার সাথে পরিচিত ছিলাম, একে অপরের প্রতি সম্মানবোধ ছিলো ফলে যৌক্তিক আলোচনার ক্ষেত্রে কখনও কোন সমস্যা হয় নি। সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে, গত এক দুই বছরে বিষয়টি নিয়ে বেশ জলঘোলা হয়েছে। ফলে একজন ব্লগার হিসাবে ব্লগিং করার যে স্বাধীনতা সেটা এখন আর পাই না।
অপুঃ ব্লগ এবং মডারেশন প্যানেল নিয়ে ব্লগারদের অভিযোগের শেষ নেই । এই অভিযোগ থাকা নিয়ে আপনার ব্যক্তিগত এবং সামুর আনুষ্ঠানিক মনভাব কী?
কাভাঃ ব্লগ এবং মডারেশন নিয়ে অভিযোগ থাকা একটি স্বাভাবিক চলমান প্রক্রিয়া। বিশেষ করে সামহোয়্যারইন ব্লগের মত একটি কমিউনিটি ব্লগে যেখানে নানা মতাদর্শের, চিন্তাধারার মানুষের সমাগম সেখানে সার্বিকভাবে সকলের সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব নয়। মডারেটর হিসাবে নিরপেক্ষ থাকার চাইতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাকে আমি বেশি গুরুত্ব প্রদান করি।
অপুঃ আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ কিভাবে জানাবো? অর্থাৎ কোন ব্লগার যদি মনে করে আপনি অযোগ্য বা দায়িত্বজ্ঞানহীন বা এক পেশে তাহলে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর কী উপায় আছে।
কাভাঃ এই বিষয়ে ইতিপুর্বে অনেকবার বলা হয়েছে। তারপরও আবারও বলছি, সামুর অফিসিয়াল ইমেইল ঠিকানায় মডারেশন বা মডারেটর সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ জানানোর সুযোগ হয়েছে। এই অফিসিয়াল মেইলটির সাথে ব্লগ পরিচালনার সাথে জড়িত সকলের সকলে এক্সেস রয়েছে বা এখানে কোন মেইল পাঠালে তা সকলের কাছেই যায়। যদি কোন অভিযোগ আসে সেই ক্ষেত্রে মডারেটরকে জবাবদিহীতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আনুষ্ঠানিক তদন্তে যদি মডারেটর বা ব্লগ টিমের কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণিত হয় তখন সামহোয়্যারইন ইন নেট লিমিটেডের নিজস্ব কোড অফ কন্ডাক্ট এর মাধ্যমে উক্ত ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়।
অপুঃ ব্লগ কর্তৃপক্ষ কি সকল ব্লগারকে সমান চোখে দেখার চেষ্টা করে নাকি ক্ষেত্র বিশেষে কারো কারো প্রতি একটু বেশি রুঢ় আচরণ কিংবা কারো প্রতি একটু বেশি সদয় আচরণ করে? যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে এর পেছনে কি ইচ্ছাকৃত কোন কারণ থাকে নাকি পরিস্থিতির কারণে এমনটা করতে হয়? এই প্রশ্নটা করার কারণ হচ্ছে ব্লগের কারো কারো মতে কোন ব্লগারের প্রতি কর্তৃপক্ষে পদক্ষেপ নিচ্ছে আবার অন্য কারো কারো প্রতি কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না !
কাভাঃ ব্লগ কর্তৃপক্ষ তো সকল ব্লগারকেই একই চোখে দেখেন। তুমি হয়ত বলতে চাইছ যে মডারেটর কি সবাইকে একই চোখে দেখে কি না? না সকল ব্লগারকে মডারেটর একই চোখে দেখেন না তবে নীতিমালা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সকলকে একই চোখে দেখা হয়। অনেক সময় আমরা ব্লগের পরিবেশ, পরিস্থিতি বুঝে কিছু স্ট্র্যাট্রেজি গ্রহণ করি এবং সেই ভাবে আমাদের কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করি। এই সকল স্ট্যাট্রেজির কারনে অনেকেই মনে করেন যে কোন কোন ব্লগার হয়ত বেশি সুবিধা পাচ্ছেন বা কারো ক্ষেত্রে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অনেক ব্লগার আছেন যারা ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে ব্লগ সংক্রান্ত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহনে ইনফ্লুয়েন্স করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমরা এই ক্ষেত্রে শতভাগ নিজস্ব নীতিমালা অনুসরণ করি। ফলে অনেক ব্লগার ব্যক্তিগতভাবে মডারেটরকে মাঝে মাঝে অপছন্দ করেন বা ক্ষুব্ধ হন।
অপুঃ বর্তমানে নিয়মিত ব্লগারের সংখ্যা কম । তার মানে হচ্ছে পুরো ব্লগের উপরে চোখ রাখার ব্যাপারটা এখন আগের থেকে আরও সহজ নয় কি?
কাভাঃ ব্লগে প্রকাশিত কন্টেন্টের উপর চোখ রাখা আমাদের জন্য সব সময়ই বেশ চ্যালেঞ্জ। আমরা সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট প্যাটার্ন অনুসরণ করে প্রাথমিকভাবে পোস্ট বা কন্টেন্টটি যাচাই করি। পরবর্তীতে আমরা সেই সকল পোস্টে আবার ফিরে আসি এবং চুড়ান্তভাবে পোস্টটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আগে এই কাজটি কয়েকটি ধাপে কয়েকটি গ্রুপ মিলে করা হতো। বর্তমানে সর্বসাকুল্য আমরা তিন থেকে চার জন বা অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাকে একাই বিষয়টি পর্যবেক্ষন করতে হয়। তবে আগের তুলনায় এখন চ্যালেঞ্জ অনেকখানি কম, প্রেসারও কম। তবে সকল মন্তব্য পর্যবেক্ষন করা বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
অপুঃ সামুর নিয়মিত ব্লগারদের ব্যাপারে একজন সাধারণ ব্লগার এবং সামুর একজন মডারেটর হিসাবে আপনার মনভাব কী? এদেরকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
কাভাঃ একজন সাধারণ ব্লগার হিসাবে আমার মনে হয় - আমার সহ ব্লগারদের মধ্যে একটা বড় অংশ কিছুটা গা বাঁচিয়ে ব্লগিং করতে পছন্দ করেন। যৌক্তিক সমালোচনা করাকে মনে করেন - ‘অযাচিত ক্যাচাল’ অথবা ‘থাক না যে যার মত ব্লগিং করুক- আমার কি।’ এতে যা হচ্ছে যিনি ভুল করছেন তিনি নিজেকে শুধরাতে পাচ্ছেন না এবং ভুলকে ঘিরেই তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। ফলে ব্লগিং একঘেয়েমিতে পরিনত হয়েছে অথচ আগে আমরা রাত জেগে ব্লগ পড়তাম, ব্লগে পোস্ট করার জন্য পড়াশোনা করতাম। এখন এই সবই অতীত।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের নতুন ব্লগারদের মধ্যে অনেকেই ব্লগিং বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারনা রাখেন না। ব্লগে সৃজনশীল বিষয়ে লেখা, আড্ডা, আলোচনা, সমালোচনা ইত্যাদি যেমন চলবে তেমনি কমিউনিটি ব্লগে নাগরিক সাংবাদিকতাও চর্চা হবে। এখন অনেক পোস্ট আসে যার পুরোটা পড়ার মত ধৈর্য্য থাকে না। দুই একটা লাইন পড়লেই বুঝা যায় সেখানে কি হতে যাচ্ছে। তাও আমাদেরকে চোখ রাখতে হয়। জানা আপা অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি ব্লগে চোখ রাখেন। হাস্যকরভাবে এখনও মাঝে মাঝে আমাদের ডাটাবেইজ হ্যাক করার চেষ্টা হয়। এই অপচেষ্টাটি দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে এবং এটা হাস্যকর যে - এখনও সামহোয়্যারইন ব্লগকে ঝুঁকি হিসাবে দেখা হয়।
অপুঃ আপনার কি মনে হয় যে আমাদের সামুর বর্তমান ব্লগাররা সমাজের কোন ইতিবাচক পরিবর্তনে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে বা পারবে? সেটা হতে পারে লেখার মাধ্যমে কিংবা অন্য যে কোন ভাবে?
কাভাঃ বর্তমানে সামহোয়্যারইন ব্লগে অনেক গুনী ব্লগার আছেন যারা চাইলে অবশ্যই সমাজের যে কোন ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য ভুমিকা রাখতে পারেন। তাদের সেই সামর্থ্য, যোগ্যতা এবং নেটওয়ার্ক আছে বলে আমার বিশ্বাস। পাশাপাশি আমাদের অনেক ব্লগারই কিন্তু নিজ উদ্যোগে সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যেমন আমাদের একজন ব্লগার আছেন যিনি বিষমুক্ত কৃষিপন্য নিয়ে কাজ করেন, তার নিজস্ব অঞ্চলের কৃষকদেরও সাহায্য করেন। আরেকজন ব্লগার তরুন তরুনীদের শিক্ষা সংক্রান্ত কাজে বিভিন্ন অবদান রাখছেন।
অপুঃ যে কোন রাজনৈতিক দল (যেমন আওয়ামীলীগ, বিএনপি) সম্পর্কে ব্লগ কর্তৃপক্ষের মনভাব কেমন? কোন কোন ব্লগার মনে করেন যে সামু হয়তো কোন নির্দিষ্ট দলের প্রতি একটু সদয় মনভাব পেষণ করেন । এটা কতটুকু সত্য?
কাভাঃ সত্যি বলতে আনুষ্ঠানিকভাবে আলাদা কোন মনভাব নেই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দুটো দল ছাড়া অন্য কোন দল তেমন শক্তিশালী নয়। ফলে এই দেশের মানুষের ভাগ্য, বড় কোন পরিবর্তন না হলে বা মানুষ সচেতন না হলে এই দুটো দলের মাধ্যমেই লেখা হতে থাকবে । আমরা প্রত্যাশা করি - এই দুটো দল নিজেদেরকে সময়ের সাথে সাথে আপডেট করে শুধুমাত্র বাংলাদেশের স্বার্থ কেন্দ্রিক রাজনীতি করবে।
অপুঃ সামুর সৃষ্টির শুরুর থেকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের কাজ করে এসেছে । বর্তমান সময়েও এসে সামুর সেই অবস্থান কেমন হয়েছে? আগের মতই আছে নাকি কিছু পরিবর্তিত হয়েছে। প্রশ্নটা আরও সহজ করে যদি করি তাহলে স্বাধীনতার স্বপক্ষের ব্যাপারে সামুর কেমন মনভাব পেষণ করে ?
কাভাঃ এক কথায় - আপোষহীন। সামহোয়্যারইন ব্লগ নীতিগতভাবে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন দল বা সংঘঠনকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে না। এই ধরনের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সামহোয়্যারইন বেশ প্রতিকুল একটি প্ল্যাটফর্ম।
তবে আমার মনে হয় আপনার প্রশ্নের লুকায়িত অংশ হচ্ছে - স্বাধীণতার স্বপক্ষের শক্তি হবার জন্য আমরা কি কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি কি না? এর জবাব হচ্ছে - না। আমরা বিশ্বাস করি না যে, স্বাধীনতার স্বপক্ষ হবার জন্য কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থক করার প্রয়োজন আছে। তবে আমাদের দেশের অপরাজনীতি এটা স্টাবিশ করার চেষ্টা করে যে - স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি মানেই একটি নির্দিষ্ট দলের ঝান্ডাবাহক। যারা এমনটা বলেন- আমি তাদের মানসিক পরিপক্কতা নিয়ে সন্দেহ করি।
অপুঃ দেশে চলমান ভারত বয়কট আন্দোলন নিয়ে সামু কর্তৃপক্ষের অবস্থান কী? এছাড়া আমাদের ব্লগেই ভারতের ব্যাপারে তীব্র বিদ্বেষ মনভাব দেখা যায় অনেকের ভেতরে ! এই বিদ্বেষের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের অবস্থান কেমন ?
কাভাঃ প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমাদের কোন নিজস্ব কোন অবস্থান নেই। আমরা এটাকে ব্লগারদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছা হিসাবেই দেখছি। আমাদের ব্লগে অনেক ভারতীয় বাঙালি ব্লগিং করেন। ফলে বিষয়টিকে আমরা যৌক্তিক সমালোচনার পর্যায়ে দেখতে চাই। আমরা সর্তক থাকি ধর্মীয় মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে। কোন দেশকে যেন আমরা শুধুমাত্র ধর্মের কারনে ঘৃণা না করি। আমরা এই ধরনের কোন অপচেষ্টা দেখলে উক্ত ব্লগারের ব্লগিং সুবিধা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিবো।
অপুঃ যে অভিযোগটা বোধকরি একেবারে শুরু থেকেই সামু কর্তৃপক্ষ শুনে আছে সেইটাই আবার করি । অনেক ব্লগার অভিযোগ করেন যে ধর্মীয় পোস্টে কিংবা ধর্ম কে কটাক্ষ করে করা মন্তব্যের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন না। এই অভিযোগের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষে মনভাব কেমন ? এছাড়া এটি কিভাবে নিয়ন্ত্রন সম্ভব বলে আপনি মনে করেন?
কাভাঃ দেখো অপু, ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত চর্চা এবং বেশ স্পর্শকাতর একটি বিষয়। যখন ধর্ম প্রচার শুরু হয় তখন কিন্তু ধর্ম প্রচারকরা মানুষের প্রচলিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধেই কথা বলে আজকের ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সেই সময়ের ইতিহাস পড়লে তুমি দেখবা সত্য হোক মিথ্যে হোক - ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বললেই ব্যাপারটাকে স্বাভাবিকভাবে কেউ দেখে না। আমাদের নীতিমালা অনুসারে আমরা এখানে সকল ধর্ম ও মতামতের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করি। এই ব্লগে একজন ধার্মিক যেমন তার বিশ্বাস সম্পর্কে বলতে পারবেন তেমনি একজন অবিশ্বাসীও বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারবেন। যদি কুৎসিত কোন মন্তব্য থাকে বা পোস্টের ভাষা যদি যৌক্তিক সমালোচনার ক্ষেত্রকে বিনষ্ট করে তাহলে আমরা তা নীতিমালার আওতায় আনি। এটাই আমাদের স্ট্যান্ড। অনেকেই মনে করেন ধর্ম নিয়ে ক্যাচাল পোস্ট ব্লগ থেকে ইনিশিয়েট করা হয় - এটা মুলত যুক্তির অভাব এবং অন্ধত্ব থেকে বলা। এর সাথে সত্যের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা প্রত্যাশা করি - যারা অপপ্রচার করবেন তাদের অপপ্রচার গুলো সঠিক যুক্তি দিয়ে কেউ খন্ডন করবেন। আপনি লক্ষ্য করবেন, শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে পাল্টা যুক্তি না দিয়েই অভিযোগ করা হয়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে পাল্টা যুক্তি দিতে সমস্যা কোথায়? দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে - সমস্যা আমাদের জানায়, জানার আগ্রহে। আপনি যখন কারো বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন - তখন বিশ্বাস সঠিক হলে আমার আহত হবার কোন কারণ দেখি না। তবে আমার বিশ্বাস যদি ঠুনকো হয়, যদি অন্যের কটু কথায় আমার বিশ্বাস ভেঙে পড়ার মত উপক্রম হয় তাহলে বিষয়টি চিন্তাজনক।
অপুঃ একটা হাস্যকর প্রশ্ন করব, আপনি কি ব্যক্তিগতভাবে ধর্ম চর্চা করেন? অর্থাৎ সামহোয়্যারইন ব্লগকে অনেকেই ধর্ম বিদ্বেষী প্ল্যাটফর্ম হিসাবে চিন্তা করে। তার মডারেটর হিসাবে আপনার কি ধর্মীয় কোন অবস্থান আছে?
কাভাঃ প্রশ্নটি আসলে হাস্যকর না বিরক্তকরও বলা যায়। কিছুদিন আগেও এই নিয়ে আমাকে কথা বলতে হয়েছে।আমি ব্যক্তিগতভাবে ধর্ম বিশ্বাস করি, চর্চা করি এবং ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করি। এটা আমার পছন্দের বিষয়। আমি ধর্মীয় গোঁড়ামি, অন্ধত্ব পছন্দ করি না এবং সমর্থনও করি না। আমাদের দেশের মানুষ যদি ধর্ম নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেত, তারা নিজেদের অনেক ভুল থেকে বের হয়ে আসতে পারত।
ও হ্যাঁ! আর যারা সামহোয়্যারইন ব্লগকে যারা ধর্ম বিদ্বেষী প্লাটফর্ম হিসাবে চিন্তা করেন - তাদের দ্বারা তাদের ধর্ম বা আদর্শ যেটাই তারা ধারণ করুক না কেন তা মোটেও নিরাপদ নয়। কারণ মুর্খ মানুষ যখন কোন আর্দশের জয়গান গায় তখন সেটা বিপদজনক দিকে যায়।
অপুঃ বাংলা ব্লগিং কোন দিকে গেছে বলে আপনার মনে হয়? এটি কি এগেছে নাকি আগের থেকে পিছিয়েছে ? গ্রাফ কী উর্ধমুখী নাকি নিন্ম মুখী?
কাভাঃ অপু, তুমি বলছিলা মজার ইন্টারভিউ নিবা ভাই! এখন তো দেখি সবই বোরিং গৎবাঁধা প্রশ্ন করতেছ। এই সব কম বেশি তো ব্লগে বলেছি। আমি তো ভেবেছি তুমি আমাকে ইন্টারেস্টিং কিছু প্রশ্ন করবা। যেমন, কাভা, আপনার প্রেমিকা কয় জন! সুন্দ্রী ব্লগারদের আপনি কোন বিশেষ সুবিধা দেন কি না?
অপুঃ হা হা হা। আসছি আসছি, সেই সব প্রশ্নে আসছি। আর অল্প দুই একটা প্রশ্ন করব। তারপর আসল ইন্টারভিউ শুরু করব। এখন বলুন বাংলা ব্লগিং কোন দিকে গেছে বলে আপনার মনে হয়? এটি কি এগেছে নাকি আগের থেকে পিছিয়েছে ? গ্রাফ কী উর্ধমুখী নাকি নিন্ম মুখী?
কাভাঃ বাংলা ব্লগের প্রতি মানুষের আগ্রহ এখনও অদম্য। কিন্তু নানাবিধ কারনে আমরা এই ব্লগিং বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি নাই। সামহোয়্যারইন ব্লগ যদি বন্ধ না করে দিতো, তাহলে আমরা হয়ত এতদিনে প্রযুক্তিগতভাবে আরো এগিয়ে যেতে পারতাম। যেখানে মানুষের অংশগ্রহন আরো বেশি হতো। সেই হিসাব বিবেচনা করলে গ্রাফ নিম্নমুখী। তবে এই সামহোয়্যারইন ব্লগই যদি সকল বাঁধা পেরিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারে তাহলে এই গ্রাফটি নিঃসন্দেহে উর্দ্ধমুখী হবে।
অপুঃ কেবল মাত্র আর্ধিক কারণে সামু কি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে ভবিষ্যতে? এই পর্যন্ত কতবার সামু হ্যাকের চেষ্টা করা হয়েছে?
কাভাঃ হ্যাঁ। যথেষ্ঠ সম্ভবনা রয়েছে এবং হয়ত দ্রুতই ঘটতে পারে সেটা। কারন সব কিছুর একটা শেষ আছে। জানা আপা এই ব্লগটি টিকিয়ে রাখার জন্য যা করেছে সেটা অবিশ্বাস্য। যেদিন এই প্রচেষ্টা থেমে যাবে, সেদিনই সবাই ফাইনাল পোস্ট পাবে।
অপুঃ আপনারা কি একটি ফান্ড তৈরীর জন্য ব্লগারদের কাছে সাহায্য চাইতে পারেন না বা সাবস্ক্রিপশন পদ্ধতি চালু করতে পারেন না?
কাভাঃ দেখো অপু সামহোয়্যারইন ব্লগের একটি বিশাল জনপ্রিয়তা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান চেয়েছে বিনিয়োগ করতে কিন্তু একটি বিকল্প ধারার সংবাদ মাধ্যম বা কমিউনিটি ব্লগ যা বাংলা ভাষায় নাগরিক সাংবাদিকতার আঁতুড় ঘর সেখানে শর্ত থাকে যা হয়ত মাথা উচু করে বা আপোষহীনভাবে চলার মত উপযুক্ত নয়। ফলে অনেক সময় আমরা চাইলেও তা পারি না। বিষয়টা আদর্শগত।
ধরো, দশজন মানুষ এখানে একটি ফান্ড তৈরী করল। ফান্ড স্টেক হোল্ডার হিসাবে তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিতেই পারেন। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে একটা সময় পর স্টেক হোল্ডাররা আমাদের নিজস্ব নীতিমালাই পাল্টে ফেলার জন্য নানা ভাবে ইনিয়ে বিনিয়ে অনুরোধ করেন বা ভিন্ন উপায়ে চাপ প্রদান করেন। যদি কখনও এমন হয় যে, ইনভেস্টররা ব্লগের নীতিমালায় কোন ধরনের হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তার করবেন না, তখন বিষয়টা হয়ত ভেবে দেয়া যেতে পারে। আর সাবস্ক্রিপশন করার পুর্বে একটি ত্রুটিমুক্ত সাইট উপহার দিতে হবে। তারপর বাকি অন্য হিসাব।
অপুঃ আচ্ছা বাদ দিন, এবার অন্য ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। আপনার কয়েকজন পছন্দের ব্লগারের নাম বলেন আর কিছু অপছন্দের ব্লগারের নাম বলেন।
কাভাঃ কি সর্বনাসের কথাবার্তা শুরু করলে হে অপু!! আমার তো দেখি এই ইন্টারভিউতে আসাই ভুল হয়েছে! (কিছুক্ষন এদিক সেদিক চেয়ে) আমার তো পছন্দের ব্লগার সবাই, কিন্তু তুমি হয়ত জিজ্ঞেস করতে পারো কার কার লেখা আমার ভালো লাগে। উমমম…… এইভাবে বলাও তো দেখি কঠিন হচ্ছে অপু। তুমি আমারে মহা বিপদে ফালাইলা। আচ্ছা আমি এইভাবে বলার চেষ্টা করি।
রম্যঃ ইদানিং ভালো রম্য দেখি না। অধিকাংশই সুড়সুড়ি দিয়ে জোর করে হাসানোর চেষ্টা। আগে দারুন সব রম্য আসত। সেই সব মিস করি। এই সেক্টরে ব্লগার ভুয়া মফিজ কিন্তু বেশ ভালো করছিলেন, শুরুর দিকে উনার বেশ রম্য আমার ভালো লেগেছিলো পড়তে। আরেকজন আছেন ভারতীয় ব্লগার, গেছো দাদা। উনার রম্যগুলো বেশ উপভোগ্য বা সহজে হাসা যায়। আর রাজনৈতিক রম্য পড়তে চাইলে আমি হাসান কালবৈশাখী ভাইয়ের লেখা পড়ি।
ধর্মঃ এই বিষয়ে অধিকাংশ পোস্টেই কপিপেষ্ট আর একই গৎবাঁধা ধারার ও কিছুটা বিরক্তিকরও। তবে সমসাময়িক এই বিষয়ে দুই একজন আছেন যারা ভালো লিখতেন - একজন হচ্ছেন - ব্লগার ঈশ্বরকনা আরেকজন ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর। আর বিপক্ষে লেখার মধ্যে আমার পছন্দ ছিলো সাসুম সহ আরো দুই একজন। তবে এদের কাউকেই এখন আর লিখতে দেখি না।
ছোট গল্পঃ এই সেক্টরে নতুন তেমন কেউ আমার মনে সেভাবে দাগ কাটে নি। তবে মাঝে মাঝে খুব চমৎকার গল্প দেখি, আলাদা করে নাম তাই মনে নেই।
কবিতাঃ আমি অনেকের কবিতাই পছন্দ করি বিশেষ করে বিজন রয়, খায়রুল আহসান, সেলিম আনোয়ার, জিএম হারুন -অর -রশিদ প্রমুখ।
এছাড়া সম সাময়িক সময়ে আমি যাদের লেখা ও মন্তব্য আগ্রহ নিয়ে পড়ি - শেরজা তপন, শায়মা, হাসান মাহবুব, মোস্তাফা কামাল পলাশ, সোনাবীজ ভাই, আহমেদ জীএস, ড: এম আলী, জুন, সায়েমুজজ্জামান, কালবৈশাখীর ঝড়, রিম সাবরিনা জাহান সরকার, করূনাধারা সহ প্রমুখ। এদের লেখা ও মন্তব্য ভালোলাগার পাশাপাশি, আরো বেশ কয়েকজনের মন্তব্যও ভালো লাগে, যেমন ব্লগার আর ইউ সহ আরো বেশ কয়েকজন। বিভিন্ন পোস্টে তাদের আলোচনা পোস্টটিকে সমৃদ্ধ করে।
অপুঃ আচ্ছা বুঝছি থাক আর লাগবে না। এবার আপনার অপ্রিয় কিছু ব্লগারের নাম বলেন।
কাভাঃ হা হা হা। অপু এমন জটিল প্রশ্ন আমাকে না করলেই খুশি হবো।
অপুঃ ব্যক্তি জীবনে আপনি কি করেন? চাকুরী নাকি ব্যবসা?
কাভাঃ আমি দীর্ঘদিন মার্কেটিং কমিউনিকেশন অ্যানালিস্ট হিসাবে বেশ কিছু নাম করা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করেছি। বর্তমানে আমার নিজের একটি এজেন্সী আছে। আমরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন কোম্পানীর ডিজিটাল মার্কেটিং, ইকমার্স, ওয়েব ডেভলপমেন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শক হিসাবে কাজ করি। পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন কোম্পানীকে রিমোর্ট অ্যাডমিনেস্ট্রেশন, কাস্টমার কেয়ার সংক্রান্ত বিষয়ে সাপোর্ট দিয়ে থাকি।
অপুঃ এবার আসেন আসল প্রশ্নে! ব্যক্তিগত প্রশ্ন জীবনে প্রেম করেছেন কতগুলো? আর কতগুলো মেয়ে আপনার প্রেমে পড়েছে বলে মনে হয়? কখনও কি কোন মেয়েকে ইম্প্রেস করতে গিয়ে বলেছেন, ‘জানো, আমি সামুর মডু’ ?
কাভাঃ যারা গুনে গুনে প্রেম করেন তারা বোকা। আমি বোকা নই। আর আমার প্রেমের পড়ার মত বোকা মেয়ে খুব কমই আছে - যদিও বাজারে বিভিন্ন রকম গুজব আপনি শুনবেন, এই সব কথায় কান দেবেন না।
জী, আমার স্ত্রীকে বলেছিলাম, আমি সামুর মডু। সেই থেকে আমার স্ত্রী সংসারের পাশাপাশি এখানেও চোখ রাখেন।
অপুঃ কোন ব্লগারের প্রেমে পড়েছিলেন?
কাভাঃ না কোন ব্লগারের প্রেমে পড়ি নি তবে দুই একজন সম্ভবত প্রেমে পড়ে ব্লগে এসেছিলেন।
অপুঃ তারা এখন কোথায়?
কাভাঃ আমার ধারনা তারা মাঝে মাঝে বিভিন্ন মাল্টি নিকে এসে আমাকে বকাঝকা করে। যদিও আমি বিয়ের সময়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম - মেয়েরা তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। তারপরেও মেয়েরা সম্ভবত সহজে ক্ষমা করতে পারে না।
অপুঃ ভাবী কি আপনার পাসওয়ার্ড জানে?
কাভাঃ হ্যাঁ, খুবই দুঃখের বিষয় তোমার ভাবী ‘আমার’ পাসওয়ার্ড জানে। কিন্তু আমার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টের পাসওয়ার্ড জানে না।
অপুঃ কয়েক মাস আগে দেখলাম আপনাকে একজন কোর্টের বারান্দায় দৌড়াদৌড়ি করানোর হুমকি দিল, কদিন আগে দেখলাম আপনাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিল। এরা কি আসলেই দেখা করতে আসে? কেবল ব্লগের মডারেটর হওয়ার কারণে আপনার জীবনে কোন বিপদ নেমে এসেছে ? কোন প্রকার জীবননাশের হুমকি বা সামাজিক ভাবে কোন বিপদ ?
কাভাঃ হ্যাঁ। বেশ কয়েকবার কিছু ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। আগে জানতাম না কিভাবে এইগুলো হ্যান্ডেল করতে হয় কিন্তু এখন বিষয়টা জানি। সবচেয়ে বড় কথা - আমাদের ব্লগ অথোরিটি এই ধরনের ঘটনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগযোগ করেন এবং বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
অপুঃ অনেকেই মনে করেন যে ব্লগ মডারেটরের পরিচয় গোপন থাকাই ভাল। সেখানে মুখপাত্র হিসাবে আপনাকে সবাই চিনে। এই ব্যাপারে আপনি কোন নিজেস্ব মতামত আছে কি?
কাভাঃ না নিজস্ব কোন মতামত নেই। সবাই সবার মত করে চিন্তা করতে পারেন। আমরা একটি নির্দিষ্ট কারন মাথায় রেখেই প্রকাশ্য আসার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফলে আমরা কোন দ্বিধায় ভুগছি না।
অপুঃ আপনার সাথে অনেকেরই ব্যক্তিগত পরিচয় আছে। এই ব্যক্তিগত পরিচয় কি আপনার মডারেটরের দায়িত্ব পালনের পথে কখনও অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে বলে আপনার মনে পড়ে?
কাভাঃ উমমম… না… তবে অনেক সময় হয়। যেমন অপু ধরো আমি তোমার প্রসঙ্গই দিয়েই একটা উদহারণ টানি। বর্তমানে যে কয়জন ব্লগার আছেন, তার মধ্যে সম্ভবত তোমার সাথেই আমার বেশি সরাসরি দেখা হয়েছে, আমরা এক সাথে সাইকেলও চালিয়েছি। ব্লগের অনেক বিষয়ে তুমি যেমন মডারেটরের সাথে দ্বিমত করেছ, অভিযোগ করেছ আবার আমিও ব্লগার হিসাবে অপু তানভীরের কাছে আমার প্রত্যাশা পূরনের অভাবের কথা বলেছি। তুমি এবং আমি দুইজনেই ম্যাচিউরড বলে বিষয়টা সুন্দরভাবে হ্যান্ডেল করতে পেরেছি।
আবার দেখো কিছুদিন আগে আগে ব্লগের ফেসবুক গ্রুপে চকলেট সংক্রান্ত একটি অনভিপ্রেত ঘটনা নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছিলো। অনেক ব্লগার এই সব দেখে ব্লগে আসছিলেন, আমাকে নক দিয়ে জানতে চাচ্ছিলেন ঘটনা কি। আমি ব্যাপারটায় সত্যি বলতে বেশ বিরক্ত হয়েছিলাম কারন এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্টরা যে যার অবস্থান থেকে বক্তব্য দিয়েছেন। আমি মডারেশনের জায়গা থেকে লক্ষ্য করলাম যে আলোচনাগুলো হচ্ছে তা খুবই ছেলেমানুষী টাইপ হচ্ছে এবং উস্কানীমুলক। তাই ক্যাচাল ব্লগারদের প্রিয় ব্যাপার হলেও আমি ব্লগ গ্রুপের ঐ পোস্টগুলো সরিয়ে দিয়েছি। এখন একজন ব্লগার এতে ভীষন উত্তেজিত হয়ে গেলেন, তিনি বললেন, এই ব্লগে মডারেটর কি এমন হনু হয়েছে যে তার বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না, এই ব্লগ তো ত্যাগ করেছি এখন ফেসবুক গ্রুপও ত্যাগ করলাম। সামান্য একটা চকলেট ইস্যু সামলাইতে পারে নাই।
আমি প্রচন্ড অবাক হলাম এই বিষয়ে যে, উনার পোস্ট মডারেটরকে কেন্দ্র করে ছিলো না। যদি মডারেটরকে নিয়ে কোন অভিযোগ করতে তাহলে সেই পোস্ট অবশ্যই থাকত। ব্লগে হয়ত অন্যকে গালি দিলে বা খারাপ কথা বললে সেই কমেন্ট মুছে দেয়া হবে কিন্তু মডারেটরকে নিয়ে কোন সমালোচনা বা গালি দিলেও সেই কমেন্ট মুছে দেয়া হয় নি বা হয় না এমনকি সেটা মাল্টি নিক হলেও। অথচ তিনি আমাকেই এক প্রকার দোষারোপ করলেন। খুবই মজার বিষয় হচ্ছে - আমি ব্যক্তিগতভাবে উক্ত ব্লগারের প্রথম প্রকাশিত বইয়ের প্রচ্ছদ করে দিয়েছি, বইটির প্রকাশের আগে পান্ডুলিপি পড়েছি। এখন এটার অর্থ এই নয় যে, আমি কোন ভুল করলে আপনি তা বলবেন না, কিন্তু আমার প্রত্যাশা ছিলো - যেহেতু তিনি আমার সাথে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ও ফেসবুকে সংযুক্ত তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করলে এই বিষয়ে হয়ত আমি ব্যাখ্যা দিতে পারতাম।
বরং তিনি বললেন, মডারেটের বিপক্ষে বলার কারনে পোস্ট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমি সত্যি বলতে সেদিন বেশ কষ্ট পেয়েছি।
অপুঃ আপনার কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা অর্জন করতে হলে আপনাকে কোন বিরিয়ানী থেকে বিরিয়ানী খাওয়াতে হবে? বিরিয়ানীর সাথে আরও কিছু খাওয়াতে হবে?
কাভাঃ আহা! কি চমৎকার ব্যাপার। আমাকে নীলক্ষেত রয়েল তেহারী ভরপেট খাওয়ালেই আমি খুশি। যদিও এখন আর নীলক্ষেত তেহারী আগের মত নেই। তবে আমাদের শৈশবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এই রয়েল তেহারীর সাথে আমার গভীর প্রেম ছিলো। আমি ১২ টাকা প্লেট থেকে খাওয়া শুরু করেছি।
অপুঃ ধরেন আমাদের ভাবী ব্লগিং শুরু করল । এবং কয়েকটি নীতি ভঙ্গ করল । আপনি তাকে নীতিমালায় আওতায় আনতে পারবেন? যদি আনেন তাহলে রাতে কোন হোটেল থেকে খাওয়া দাওয়া করার পরিকল্পনা থাকবে?
কাভাঃ …… মিয়া আগে বিয়াশাদী করো! তারপর এই সব প্রশ্নের জবাব পাইবা। আর হ্যাঁ, কানে কানে, তোমার ভাবী এই ব্লগে ব্লগিং করে। আমি আগে সেটা জানতাম না, একদিন একটি সন্দেহ জনক আইডির আইপি সার্চ করতে গিয়ে দেখি… পালাবি কোথায়?
অপুঃ ইন্টার ভিউ অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে । আজকের মত এখানেই শেষ করছি। শেষ করা আগে যদি আমাদের সকল ব্লগারদের উদ্দেশ্যে আপনি কিছু বলতেন তাহলে ভাল হত!
কাভাঃ অনেক ধন্যবাদ অপু। তুমি সময় করে এই উদ্যোগটি নিয়েছ। ব্লগারদের উদ্দেশ্যে আমার তেমন কিছু বলার নেই। আমি ব্লগারদের কাছ থেকে সব সময় শেখার চেষ্টা করি। আশা করি এই প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে। সবাই ভালো থাকুক, নিরাপদে থাকুক আর চুটিয়ে ব্লগিং করুক।
আজকের ইন্টারভিউ তাহলে এখানেই শেষ । আগ্রহী পাঠকরা নিজেদের মনে থাকা প্রশ্ন করতে পারেন । আশা করি আমাদের মডারেটর সময় সুযোগ মত প্রশ্নের জবাব দিবেন ।
আগের পর্ব
ভুয়া মফিজ
শায়মা
ছবি পিক্সেল
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৪৪