শাহবাগে বাস থেকে যখন নামি দেখি আমার স্যান্দেলের ফিতা খুলে গেছে । তখনই বুঝলাম কিছুক্ষনের মধ্যে এমন কিছু হবে যেটা আমার মন খারাপ করে দিবে । ঠিক তখনই টিয়া পাখির ফোন । মনতো ভাল হবার কথা । ফোন রাখার পরও মনটা খচখচ করতে লাগলো । এমন কিছু ঘটবে যটা বাকিটা দিন আমার মনটা খারাপ করে রাখবে । তরঙ্গ প্লাসে উঠলাম মোহাম্মাদপুরে যাবো বলে । ঠিক যে সিট টাতে বসলাম তার আগের টাতে একজোড়া কাপল বসেছিল । অনেক দিন পর এরকম পারফেক্ট কাপল দেখলাম । ঢাকা শহরে এমন এমন কাপল দেখি । ভাইয়া আর আপু দুজনেই মেদিক্যালের স্টুডেন্ট । দুজন টুকটাক কথা বলছে । একটু পর আপুটা ভাইয়াটার কাধে মাথা রাখলো । কি চমত্কার একটা দৃশ্য । আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল । আহ্ ! এরা কত না সুখে আছে ! ইচ্ছা করলেই মনের মানুষের সাথে কথা বলতে পারছে । হাত ধরতে পারছে । কাধে মাথা রাখতে পারছে । এটাই তো বেঁচে থাকার আনন্দ । আমি তো এমন পারি না । আমাকে কত যে দিন অপেক্ষা করতে হয় কেবল আমার টিয়া পাখির সাথে কথা বলার জন্য । এই জন্য এমন সুন্দর কিছু দৃশ্য দেখলে আমার মন খারাপ হয় । নিজেকে বড় অসহায় লাগে । আমি ঐ ভাইয়া আর আপুটার দিকে তাকিয়ে থাকি । আপুটাকে কতই না সুখি মনে হচ্ছে । আর হবেই না কেন ? মনের মানুষের কাছাকাছি থাকা কত যে আনন্দের তা কেবল যারা দুরে থাকে তারা উপলদ্ধি কয়তে পারে । আমি দুরে আছি আমি জানি ।আপু একবার ভাইয়ার কাধে মাথা রাখছে আর একবার মাথা তুলে কথা বলছে একবার ভাইয়াটার হাত ধরছে আবার ভাইয়াটার চুল নাড়ছে , চশমা খুলে নিচ্ছে ! আসলে কত কিছুই না তার করতে ইচ্ছা করছে আনন্দ প্রকাশের জন্য । আপুটা এবার জানশা খুলতে গেল । দেখলাম ভাইয়াটা এবার নিজেই জানলা খুলে দিল । কিছু একটা বলল আপুটাকে । আপুটা খুব খুশি হল । এটাও কি চমত্কার একটা দৃশ্য । আমি থাকতে কেন তুমি এই সামান্য কষ্ট টুকুও করবে ? এবার ভাইয়াটা আপুটার কাধে মাথা রাখলো । দেখলাম প্রতি উত্তরে আপুটা ভাইয়াটার গালে হাত রাখলো । ছোট বাচ্চা দের যেমন করে আদর করে ওভাবে আদর করতে লাগলো ।
আহা । আমার জীবন টাতে এমন কবে আসবে???