এবার পূজার ছুটিটা জমিয়ে আড্ডা মেরে কাটাব বলে আগে থেকেই প্লান ছিল। পরিকল্পনা মাফিক ১৪ তারিখ রাতের টিকেট ও কাটা হয়ে গেলো। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। বাক্স পেটরা ও রেডি। ১৪ তারিখ বিকাল বেলা আমার পতি প্রবর অফিস থেকে ফিরেই বিনা মেঘে বর্জপাত ঘটালেন। তিনি জানালেন তার যাওয়া হচ্ছে না, কারন তার কোন ডেলিগেট আসছে। শুনেই মেজাজ চরম খারাপ হলো। আমার মন মেজাজ খারাপ দেখে সে ও চিন্তায় পড়ে গেল এবং সমাধান হিসাবে প্রস্তাব করল যে সে ১৪ তারিখ রাতে খুলনা গিয়ে আমাকে পৌছে দিয়ে আবার ১৫ তারিখ রাতে ঢাকায় ফিরবে, কারন তার ডিউটি ১৬ তারিখ বিকাল থেকে। মন্দের ভালো হিসাবে অগত্যা এই প্রস্তাবেই রাজী হলাম।
১৫ তারিখ ভোর সাড়ে পাঁচটায় আমাকে আমার বাবার বাসার গেটে নামিয়ে দিয়ে সাহেব ছুটলেন গ্রামে। সেখানে আমার শ্বাশুড়ি রয়েছেন। আমি অনেক বললাম কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে তারপর যেতে, কিন্তু তিনি নাছোড় বান্দা। দুপুরের পর তার ফোন পেলাম, জানালেন তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে রওনা হয়েছেন এবং আমি যেন আমার মেঝ ভাবী ও ছোট বাইকে নিয়ে নিউমার্কেট এ যাই। অনেক বললাম বাসায় এসে তারপর যেতে কিন্তু কে শোনে আমার কথা। সাহেবের নির্দেশনা মাফিক নিউমার্কেটে গেলাম এবং ঘুরাঘুরি শেষে দারুচিনিতে ডিনার সেরে তাকে গাড়িতে তুলে দিয়ে বাসায় ফিরলাম। পরদিন মানে ১৬ তারিখ গেলাম শ্বশুরবাড়িতে। সত্যি বলতে কি আমার শ্বাশুড়ি যে কতটা কেয়ারিং না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। তার কাছে গেলে অন্য কোথাও আসতে মন চায় না। ঐদিন বিকালে এলো আমার ননদ। বিকাল বেলা সাহেবের বন্ধুরা ফোন করা শুরু করল। তাই বাধ্য হয়ে সাহেবকে ছাড়াই আমি, আমার ননদ, আমার পিচ্চি শ্বাশুড়ি (শারলী) আর এক চাচাত দেবর বের হলাম নবমীর পূজা দেখতে।
দূর্ভাষীর বন্ধুরাও এক একজন, সবগুলাই এক একটা জিনিস। কয়েকটা বান্ধবীর সাথে ও দেকা হলো সব নাকি ক্লাসমেট। আমার সাহেব ছুটির মধ্যে অফিসের কাজে ব্যস্ত জেনে একজন বলেই বসল "ও খুব ভালো বন্ধু আমাদের, কিন্তু ও এমনই কাজ পাগল যে আমরা কখন ও ওর সাথে প্রেম করার কথা ভাবিনি"। যাই হোক সন্ধ্যার পরে ফিরে শ্বাশুড়ির তৈরী করা বিভিন্ন রকম পিঠা খেয়ে আজ দুপুরের পরে আবার বাবার বাড়ি এলাম, কিন্তু মনটা খারাপ লাগছে, মনে হচ্ছে কবে ঢাকায় ফিরব। অবশ্য তার ও বেশী দেরী নেই ২০ তারিখে ফিরছি।
বিয়ের এতদিন পরে মনে হচ্ছে, একা একা থাকা আর অন্ধকারে থাকা একই জিনিস।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৫:৩৫