somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের দ্বিচারিতা পূর্ণ শিক্ষা

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের সারাজীবনের শিক্ষাই দ্বিমুখী,দ্বিচারিতা পূর্ণ। তাই আমরা যখন শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড বলি কিংবা মূর্খ শিক্ষিতদের পার্থক্য করতে গিয়ে শিক্ষিতদের দাম দিয়ে পরক্ষনেই তাকিয়ে দেখি তার মধ্যে সুনীতি কিংবা মানবিক কিংবা বৈষম্যহীন ভালো চরিতের কোন বালাই-ই নাই তখন কনফিউজড হয়ে যাই তাহলে শিক্ষাকে কিভাবে সেরা বলি !

আমাদের কিছু মিথ তৈরি করা আছে।অনার্স,মাস্টার্স কিংবা কে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে বা কোন প্রতিষ্ঠানে তার উপর দিয়ে আমরা শিক্ষা বিচার করি।
এগুলো নিতান্তই পুঁথিগত শিক্ষা যা মানুষের মানুষ হওয়ার সাথে এর সম্পর্ক খুব বেশী নেই।তবে একদমই যে নেই তা ও না।ক্ষেত্র বিশেষ এই শিক্ষা মানুষকে কিছু শক্তিশালী ধারনা দেয়।
আমাদের মুল শিক্ষা হল পরিবার এবং সমাজ।সেখানেই মুল গলদ লুকিয়ে আছে।
পরিবার বা সমাজ কি কখনো খারাপ শিক্ষা দেয়?
তর্কের শুরুতে জাস্ট গণিতের মনে করি "ক" বা "খ" এর মত ধরে নিলাম নিন্মবিত্ত কিংবা বস্তির মানুষের পরিবারে খারাপ শিক্ষা কিছুটা হয়েই যায় কিংবা সেই সমাজ সচেতন না বলে খারাপ শিক্ষা ছোট থেকেই একটা বাচ্চা পায়। (বস্তুত সকল সময় এরকম না)
এখন আসি উচ্চবিত্ত পরিবারে।বাবা-মা শেষ বয়সে এসে বা বখে যাওয়া ছেলে মেয়ের ক্ষেত্রে যে কোন বয়সে এসে কাঁদে আর বলতে থাকে এতো টাকা খরচ করলাম,এতো ভালো স্কুলে পড়ালাম,সমাজের সেরা মানুষদের মধ্যে রাখলাম এতো ভালো ভালো শিক্ষক দিলাম তারপরও কেমনে খারাপ হল!!
এটা একটা কমন প্রশ্ন।আর এটাই আমাদের গলদের জায়গা যা আমরা বুঝতে পারি না।
বস্তি বলেন আর আলিশান বাড়ি বলেন,সবাই সন্তানদেরকে সত্য কথা বলতে শিখায়,সৎ পথে চলতে বলে,ধনী-গরীবে কোন বৈষম্য নাই এমন ভালো ভালো কথাই শিখায়।বই ও এমনই শিখায়।তবে কেন মানুষ এগুলো শিখে না? কেন মানুষ খারাপ হয়ে যায় ?
বাবা-মা যখন বাসায় শিখায়,
" সকল মানুষ সমান,মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নাই,সবার রক্ত এক,আফ্রিকান কালোরাও মানুষ"- সন্তান এই উপলব্ধি নিতে নিতে হঠাত কাজের বুয়ার ছোট্ট ছেলেটা সেখানে এসে বসলে ভদ্র লোকেরা তাকে তাড়িয়ে দিয়ে বাচ্চাকে বলবে, " বাবা ওদের সাথে মিশো না,ওরা ভালো না,খবরদার ওদের সাথে খেলবা না,ওরা গরীব" - ঠিক এই জায়গা টা থেকেই বাচ্চাটা শিখে আসে,"ওই কাজের বুয়ারা মানুষ না,রিকশাওয়ালারা মানুষ না,আপনার অধিনস্ত শ্রমিকেরা মানুষ না,বস্তির ওই গুলো মানুষ না,অর্থবিত্তহীন চারপাশের কেউই মানুষ না"
এখানেই অনার্স মাস্টার্স ব্যার্থ হয়ে যায় একটা মানুষ তৈরি করতে,এখানেই শিক্ষা ব্যার্থ হয়ে যায়।
এরকম নানা উদাহরণ দেয়া যায়,সদা সত্য কথা বলার শিক্ষা দিয়ে সন্তানকে দিয়ে যখন কাউকে বলিয়ে দেয় যে গিয়ে বল বাবা বাসায় নেই,তখন সন্তান শিখে নেয় "অবশ্যই সদা সত্য কথা বলতে হবে,তবে নিজের পক্ষে গেলেই তবে"
আর এরকম শিক্ষাই আজকাল পরিবার ও সমাজে চলছে।বাবা মায়ের ভয়ঙ্কর ঝগড়া দেখে বড় হওয়া সন্তানকে যখন শিখানো হয় " ঝগড়া করা ভালো না,এঁকে অপরকে সম্মান করতে হয়" তখন সন্তান বড় হলে খুনি হতেও দ্বিধা করে না কারণ সে জানে সম্মান তাকেই করতে হয় যার সাথে তুমি পারবে না আর বাকীদের দমিয়ে রাখতে হয় ক্ষমতা আর জোর দিয়ে,সবসময় ঝগড়া বা কাউন্টার মুডে থাকতে হয়,না হলে মানুষ দুর্বল ভাববে কিংবা কাউকে ছেড়ে কথা বলার কোন সুযোগ নাই।সে গালি দিলে আমাকেও দিতেই হবে,না দিলেও দিতেই হবে তাকে আগেই আটকে ফেলার জন্য।
এরকম হাজারো দ্বিচারিতা পূর্ণ শিক্ষায় শিক্ষিত সমাজ আজ পুঁথিগত বিদ্যায় কোথাও ৭০ শতাংশ কিংবা ১০০ শতাংশ কিন্তু মানুষ হিসেবে তাদের মাঝে পাওয়া যায় কয়জন ?
ধর্মীয় দুনিয়া থেকে পাশ্চাত্য ভোগ বিলাসের দুনিয়া।সব জায়গায় একই রূপ বিচরণ করছে।নবিজীর ক্ষমার বয়ান কান্নার সুরে করতে করতে কল্লা ফালাও এর আওয়াজ উঠে,উমরের ভৃত্যকে নিয়ে উঠের রশি টানার গল্প বলতে বলতে হেলিকপ্টারের জোরালো আবদার কানে বেজে উঠে।
আপন বাবা মাকে দুরে ঠেলে শ্বশুর শাশুড়িকে বুকে টেনে সন্তানকে বাবা মায়ের প্রতি সবচেয়ে দরদী হতে বলার শিক্ষাই চলছে।
সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সন্ত্রাস দমনের কঠিন হুশিয়ারি দিয়ে পেটোয়া বাহিনী লাগিয়ে দেয়,নকলের মত অসদ উপায় কে ঘৃণ্য বলে প্রাইভেট পড়ানোর নাম করে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিয়ে দেয়ার শিক্ষাই আজ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে।

সমস্যা গোঁড়ায়,পুঁথিগত বিদ্যার জোরকে শিক্ষিত না ধরে গোঁড়ার বাস্তবিক চর্চাময় শিক্ষায় যেদিন শিক্ষিত ধরা হবে তখন তার সঠিক শিক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষাই জাতির সত্যিকার মেরুদণ্ডের ভূমিকায় আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৩
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×