হে মু'মিনগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল যা নিজেরা করো না? আল্লাহর কাছে এটা অত্যন্ত অপছন্দনীয় কাজ যে, তোমরা এমন কথা বলো যা করো না। (সূরা আস সফ(২-৩)
যতদূর চোখ যায় ততদুর দেখি,আফগানিস্তান থেকে ইরাক হয়ে সিরিয়া।সব যখন বোমার কাঁথা মুড়ে ঘুমায় তখন প্রতিবাদ মিছিল,বর্জন,ইট খুলে ফেলার হুমকি থেকে কঠিন কঠিন ভাষণ আর বক্তৃতা।নিজেও এক সময় সেই মিছিলে অংশগ্রহণ করে ভাবতাম আমেরিকা বুঝি এইবার থামতে বাধ্য হবে।
কীসের কি! আমেরিকা শাসন করে বৃদ্ধ হয়ে এখন মায়ানমার ও আমাদের দেশের মত দেশকে পশ্চাতদেশ প্রদর্শন করে। চায়না,ভারত,ব্রাজিল আর অন্যান্য দেশগুলোর কথা মুসলমান দেশগুলোর প্রতি বাদ-ই দিলাম।
এতো হুজুর ছিল না,কিন্তু তখন সাম্রাজ্যবাদী বাচ্চাগুলো ভয় পেতো।এখন চারিদিকে হুজুর আর হুজুর।ছাতির উপর বসে লতিফ সিদ্দিকি হজ্ব আর রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর অসম্মান করে দিব্বি টাঙাইলে বসে ২০১৮ এর নির্বাচন করে।
দেওয়ানবাগি নিজেকে একবার আল্লাহ তো একবার ফাতিমা (রাঃ) এর জামাই বলে(নাউজুবিল্লাহ)।
কোরআনের একটা অক্ষর পরিবর্তন করলে যেখানে কাফের হয়ে যায় সেখানে পুরো নারী আইন নতুন করে বানিয়ে ফেলে।
একটা কার্টুন বা মন্তব্য না। "ধ--------- নামক পত্রিকা প্রতিদিন রাসুলুল্লাহ(সাঃ) কে নিয়ে হেন মিথ্যা,নোংরা অশ্লীল লিখা লিখে যায়।
এতো কিছুর মাঝে হুজুরেরা কিছু পেয়েছিল হঠাত।সেটাও হুজুরদের যতটা না কল্যাণে তারচেয়ে বেশী জামায়াত তাদের পিঠ বাঁচাতে এঁকের পর এক প্রচার করতে থাকলে হুজুরদের হালকা টনক নড়ে উঠে।
চট্টগ্রামে হেফাজতের সমাবেশ হল।বেশ সফলতার পরে একটু সাহসী হয়ে উঠলো বটে।এইবার হবে ঢাকায় - - -
বিএনপি নড়েচড়ে উঠলো,রাজনৈতিক দুশ্চরিত্র চরিত্র এরশাদ পানি আর খাবার নিয়ে হাজির।মোছে তা দিয়ে বিরোধী দল ক্ষমতার লাড্ডু মিঠাই খাওয়া শুরু করলো।
হেফাজত সাহসকে দুঃসাহসে পরিণত করলো।দেশের যোগ্য প্রেসিডেন্ট হতে পারেন প্রয়াত আল্লামা শফি (রহঃ) এমন ঘোষণায় নিজেরা নিজেরাই আহ্লাদিত হয়ে উজ্জীবিত হয়ে গেলো।
জনগণের বিশাল ময়দান।খুশির ফোয়ারা বইছে আর "আমরা তো কিছু একটা" - কচুরিপানার নিচের মাছ হঠাত খোলা পুকুরে গিয়ে সমুদ্র মনে করার মত ভেবে ভেবে দিনটি কাটিয়ে রাত হলে সরকারের ক্র্যাকডাউনে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলে হারিয়ে যাওয়া ভাইদের নাম পর্যন্ত যারা বলতে পারেনি তাদের দৌড় সেইদিন আমলা থেকে আমজনতা সবাই পড়ে নিয়েছিল।
তারপর থেকে বিএনপি (চিপা পথে এসে গুড় খাওয়া পার্টি) ,ইসলামপন্থী সবাই ওয়াজ মাহফিলে আর টক শো তে জোর দিয়েছে।টক শোর সততা আর ওয়াজ মাহফিলের বক্তৃতা যেন এক সমান।বিশাল জনগণের সামনে হুংকার আর ঝঙ্কার।মঞ্চ থেকে নেমেই কিংবা শো রুম থেকেই বেড়িয়েই কেউবা সরকারের দালালিতে ব্যাস্ত কেউবা আখের গোছাতে।
যারা নিজেদের মান চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্য কেই উন্নত করতে পারে না,নিজের সমস্যা সমাধান করতে পারে না,নিজদের পরিবারের বা গোত্রের সমস্যা সমাধানে যাদের কোন ভূমিকাই নেই,নেই উদ্যোগ কিংবা নেই সেই দাম,মর্যাদা,যাদের মুখের কথায় তাদের এক ভাই নিরাপদ না,যাদের আচার আচরণে মুসলমানের কোন বৈশিষ্ট্যই নাই,যাদের পেট বুকের চেয়ে উঁচু,যারা অনলাইন অফলাইনে নিজদের সাথে চব্বিশ ঘণ্টা ঝগড়ায় লিপ্ত,যারা অত্যাচারী সরকারের তাঁবেদারিতে নিয়জিত,যারা নিজদের চরিত্রে নবী কে অসম্মানিত করে,নিজদের ঘরে নবীদের অসম্মানকে পাত্তাই দেয় না,সে নিয়ে যাদের কোন ভ্রুক্ষেপ ও নাই তাদের বর্জনের ডাক যে শুধুই গলাবাজি তার প্রমাণ মাওলানা মামুনুল হকের মত লোকদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম।
কত ঘণ্টা পার হল? এমন ফালতু কথা কেন বলেন? মঞ্চ পেলেই চিৎকার চেঁচামেচি করে অভ্যাস হয়ে গেছে।অথচ এদের নাই আগে পিছনের কোন চিন্তা চেতনা।
ওয়াজ আর মুফতি বেড়েছে কিন্তু দেশের মানবিকতা আর নৈতিক মূল্যবোধ! ধ্বংস থেকে ধ্বংসাত্মক হয়ে গেছে মুসলমান নামের এই জাতিটি। দোষটা কার !
এদের দাম সমাজে নেই।তাই পৃথিবী ব্যাপী অন্যরা ইসলামকে এখন সরাসরি আক্রমণ করার সাহস পাচ্ছে।কারণ সকলের কাছে এই বিষয়টি স্পষ্ট যে,এই হাঁক ডাক অনেকটা উচ্ছিষ্ট ভোগীর মত।খাবার পেলেই আবার চুপ।
আবার হঠাত করে হেফাজত জেগে উঠেছে।তবে কি !
নাহ,একটু ঝেরে কেশে নিন।এরকম জাগনা তারা ২০১৩ সালেও জেগে উঠেছিল।সেইবার জেগে উঠায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপন দেখায় সরকার ক্র্যাকডাউন করে হেড ডাউন করে দিয়েছিল।এইবারের আন্দোলনে সরকার পতনের কোন বিষয় ছিল না বরং একজন তো সরকারকে আজীবন সমর্থন দিয়ে দিয়েছেন।আর এই জন্যই সরকার এই ময়দান খালি করে দিয়েছে।
কেন?
অনেক গুলো লাভ।
সিনহার কথা মনে আছে?একাত্তর টিভি বয়কটের কথা মনে আছে? নুরু নামের একটা ছেলে যে রাস্তায় ঘুরছে মনে আছে? সেনাপ্রধানের ফোনালাপে হাসিনার বিরুদ্ধে চাক্ষুষ প্রমাণের দিকে কারো মন আছে? গনধর্ষনের কথা গুলো!!
সব ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে এই একটা মিছিলে।সেই সাথে কুনো ব্যাং হেফাজতকে একটু টপে তুলে তাদেরকে সকলের হট কেইক বানিয়ে ফেলা হয়েছে।ক্র্যাকডাউন না,একটা হালকা পশ্চাতদেশের শব্দে যারা দৌড়ে পালাবে তাদের সামনে এনে চিৎকার করালে তারা যেমন আত্মতুষ্টিতে ভোগে অন্যদিকে মনোযোগ দেয়ার সাহস ও সুযোগ পাবে না তেমনি জনগণ ও এই তামশা দেখতে দেখতে আবারও ভুলে গেছে তাদের কিছু করনীয় ছিল।
হালে সরকার কিছুটা অস্থিরতা থেকে আবারও চাঙ্গা ভাব ফিরে পাচ্ছে।হুজুরদের ময়দানে হাফিজুর-মামুনুল হকের লড়াই শুরু হচ্ছে।
রাত ও গভীর হচ্ছে,বক্তৃতার আইয়ুবি না ময়দানের আইয়ুবির প্রার্থনায় নির্যাতিত দের ক্রন্দন দীর্ঘতর হচ্ছে ----
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৪