কোভিড-১৯ বা সহজ কথায় করোনা।একটা রোগ,যার অবস্থান বা চলাচল সম্পর্কে কারো কোন ধারনাই নেই।কিন্তু আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে বিনা নোটিশেই।যেমনটা আক্রান্ত হতো পক্স কিংবা ডাইরিয়া,কলেরা কিংবা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে।ছোঁয়াচে।হচ্ছে,মারা যাচ্ছে,হয়েই যাচ্ছে।বছরের পর বছর ধরে,যুগ যুগ ধরে,শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে,আদিকাল থেকে এখন অবধি।
এই মৃত্যুর মিছিলের পর একটা উন্নত ধরনের ভাইরাস এলো আর বাংলাদেশ সহ অতি উৎসাহী একদল মানুষ এই রোগকে এমন বানিয়ে ফেললো যে এটাকে এইডসের চেয়ে ঘৃণ্য রোগ বানিয়ে ফেললো।
লাশ নিয়ে নটাঙ্কি,কারো হলে নটাঙ্কি,কারো বাসায় কোয়ারেন্টাইন এ থাকা নিয়ে এলাকাবাসীর নটাঙ্কি।
সাবান,গ্লভস,পানি সব কিছু থাকলে লাশ নিয়ে এই ঘৃণ্য চর্চা কারা চালু করেছে?যেখানে সকল বিশেষজ্ঞ জন ই বলেছে মৃত্যুর ৪/৫ ঘণ্টা পর শরীরে ভাইরাস থাকার কোন সম্ভাবনাই নেই।সেখানে একটা মানুষের শেষ যাত্রার অবমাননা মানব সভ্যতার অসভ্যতাকে এমন ভাবে তুলে ধরেছে যে তাকে পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট না বলে উপায় নেই।
পৃথিবী ব্যাপী লক্ষ লক্ষ রোগীকে লক্ষ লক্ষ ডাক্তার,নার্স সারাদিন ব্যাপী চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের বেশীরভাগই নিরাপদে আছে।সেখানে মৃত ব্যাক্তির লাশকে নিয়ে এতো ঘৃণা ছড়ানোর উদ্যেশ্য কি?অথচ সে না দিচ্ছে হাঁচি,না দিচ্ছে কাশি,না বলছে কথা।আর তার উপর প্রথমেই তার শরীরে উষ্ণ গরম পানি সাবান সমেত ঢেলে দিলেই তো ভাইরাসের ভয় চলে গেলো।তাই নয় কি?
এতো জ্ঞান বুদ্ধি আধুনিক মানব সকলের অথচ একটা মানুষকে শেষ সম্মান জানানোর জন্য এই জ্ঞান টুকুও আসে না?
দ্বিতীয়ত,বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে কোন ব্যাক্তি আক্রান্ত হলে তাকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি কিংবা বাসা থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
কেন?
এই রোগ সম্পর্কে আপনার ধারনা কি? ভাইরাস হেটে হেটে আপনার বাড়িতে গিয়ে আপনাকে ডাকবে?যেখানে কারো বাসায় কেউ আক্রান্ত হলে সে আইসলেশনে থাকলে এবং বাসার মেম্বাররা সতর্ক থাকলে সে বাসার মেম্বারদের কেই আক্রান্ত করবে না সেখানে পাড়া প্রতিবেশীর দিকে নজর দেয়ার যোগ্যতা বা সময় কোনটাই ভাইরাসের নেই।তো একজন আইসলেশনে থাকলে আপনাদের এতো আলগা চুলকায় কেন?
সে আইসলেশনে তার ঘরে শুয়ে থাক।আপনার জন্য ভয়ের কিছু নেই,আপনার সেটা নিয়ে মাথা ঘামানোরও কিছু আছে বলে আমি মনে করি না যদি আপনি সাবান পানির ব্যাবহার নিশ্চিত করেন।
এর সপক্ষে প্রমাণ দিচ্ছি,আমি নিজে ভয়ানক করোনায় আক্রান্ত এবং রিকভার করা ব্যাক্তি।আমার দরজার সাথের দরজায়ই আরেকটি ফ্যামেলি থাকে।আমরা দুই ঘর একই ওয়াশিং মেশিন ইউজ করি।যা বাইরের আমাদের করিডোরে রাখা।আমার অসুস্থতার পিক সময়ে আমি সেখানে কাপড় ধূতে দিয়েছি এবং মেশিন স্পর্শ করার পর আমি সেনিটাইজার লাগিয়ে এসেছি।পাশের বাসার ৫ সদস্যের একজন ও আক্রান্ত হয় নি এমনকি আমার উপরের তলার ও কেউ না।আজ যখন লিখছি তখন আমি রিকভার করার পরের ১৪ তম দিনে পা দিয়েছি।
দ্বিতীয়ত আরেকজন ভাই,উনার স্ত্রী ও ছোট মেয়ে আক্রান্ত হয়েছে।একই বাসায় উনারা থেকেছেন একটু সতর্ক ভাবে কিন্তু মূল ব্যাপার দুইজন রিকভার করে ফেলেছে এবং বাকী দুইজন আক্রান্তই হয় নি।
এরকম বেশ কয়েকটা উদাহরণ আমার সামনে জ্বলজ্বল করছে।
অথচ বাংলাদেশে সবকিছুকে এতোটাই গড়বড়ে ভাবনায় ফেলে দিয়েছে যে মানুষ করোনার যে কোন কিছুর চেয়ে মনে হয় এইডস হলে খুশীতে ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ্ পড়বে।
(আমি বলছি,ভয় পাওয়ার আগে বাস্তবতা বুঝে নিজেকে সতর্ক রাখুন,মানবতাকে প্রাধান্য দিন,বিজয় আসবেই)।
"আমার অভিজ্ঞতা এবং বাস্তব কিছু কথা নিয়ে বাকী লিখা চলবে।"
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৬:০১