শৈশবে ফিরছি
ফিরছি কাকতাড়ুয়া আর
একটি নদীর চিত্রকল্পে।
সেই কাকতাড়ুয়ার ভুশণ্ডি জীবন:
বহুযুগ আগে এক প্রকাণ্ড কাঠের গুঁড়ি থেকে ছিন্ন হয়ে
ভেসে এসেছিল সে; মানুষ
নিজেদেরই প্রয়োজনে লাল উত্তরীয় মুড়ে তাকে বানাল ভোজবাজিকর।
হাতের যাদুকাঠিটি আজ কোই, যার ইশারায়
ঘুমিয়ে পড়ত দস্যু কাকাতুয়া দল?
কাকাতুয়া নেই, নেই তাদের উদ্যম দস্যুতাও
গ্রীষ্মের সমস্ত গান হিম হয়ে জমে আছে ক্লান্তির কফিনে।
নদীটি অধুনালুপ্ত; তার
আতপ উছল জলে পাখসাটে পাখিদের দেখে
একদিন ধুয়ে যেতো পিঁচুটি চোখের
সেকোন্ প্রিয়জনের অভিশাপে সেও
অহল্যারই মতো তলে তলে চলে গেছে—
রোদের আলপনা মুছে ঘুমের গহ্বরে।
বয়োবৃদ্ধ কাকতাড়ুয়া আজ
যাবতীয় ভূদৃশ্যকে জাগিয়ে তুলতে চায়ছে।
জাগিয়ে তুলতে চায়ছে নদীটিকে, যার
গতিপথ ধরে ধরে কোনোদিন হয়তো সে পৌঁছে যাবে চির-উৎসমুখে।
সেই কাকতাড়ুয়া কি আমিই,
দুপাশে ছড়িয়ে হাত জেগে আছি উদয়াস্ত?
জেগে আছি— যেন কোনো তীব্র স্বপ্নের সুড়ঙ্গ পথে যেতে যেতে
জেগে আছি— নিজেরই বানানো যত আজগুবি ভাঁওতায়,
মনগড়া গল্পে।
এ আমার আজন্ম জমানো কড়িপাতি
একটু একটু করে বিকিয়ে বিকিয়ে তাকে শৈশবে ফিরছি। পল ক্লে- স্ট্রং ড্রিম (১৯২১)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৭