আফসানার কথা মনে আছে? মিরপুরের সাইক ইন্সিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজির স্থাপত্য বিভাগের ছাত্রী। যাকে গত ১৩ আগস্ট তেজগাঁও কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন হত্যা করে দলীয় সাঙ্গ পাঙ্গ সাথে নিয়ে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে রেখে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য বিশেষ মহলের বিশেষ ইশারায় চিকিৎসক জানিয়েছেন, আফসানার মৃত্যু হত্যা নয়, এটি আত্মহত্যা।
প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে সারাদেশ। বিচারের দাবীতে আওয়াজ ওঠে সবার কন্ঠে। খুনীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে সর্বমহলে।
কিন্তু খুনী ছাত্রলীগ নেতা রবিন ও তার সাঙ্গ পাঙ্গরা বহাল তবিয়তে ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। জনগণের রাজপথের প্রতিক্রিয়া রাজপথেই আছড়ে পড়ে। ছাত্রলীগ নেতা হলে যেন সাতখুন না শতখুন মাফ!
গতকাল সোমবার সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস পরীক্ষার হল থেকে বের হওয়ার সময় তাঁর ওপর চাপাতি নিয়ে হামলা চালায় শাবিপ্রবির ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম। দিনে দুপুরে জনসম্মুখে নির্দয়ভাবে কুপিয়ে আহত করে খাদিজাকে। খাদিজা এখন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আহত খাদিজার অপরাধ সে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের প্রেমের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। আর ছাত্রলীগ নেতার সাথে এ দুঃসাহস দেখানোর খেসারত দিতে হল তাকে।
আশার ব্যাপার হলো দেশের মানুষ ধাক্কা খেয়ে খেয়ে বেশ সচেতন হয়ে উঠছে। বিচারহীনতা নীরবে সহ্য না করে বিচারের দায়িত্ব তারাই গ্রহণ করেছে। আর তাই খাদিজাকে কুপিয়ে বদরুল পালিয়ে যেতে পারেনি। জনগণ উত্তম মাধ্যম দিয়ে অবশেষে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
বিচারহীনতা যখন সমাজকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে তখন জনগণের এ পথে হাঁটার বিকল্প থাকে না। খাদিজা বাঁচুক অথবা মরুক গতানুগতিকভাবেই দেশের পুলিশ প্রশাসন বাঁচিয়ে নেবে বদরুল আলমকে। কিন্তু জনগণ সচেতন হলে তাৎক্ষনিক অন্যায়ের প্রতিরোধ করা সহজ হবে। সোনার ছেলেদের ভয়ে আতঙ্কিত নারীরা সাহস পাবে নির্ভয়ে পথচলার। কারণ, মাইরের উপর ঔষধ নাই...