খুব বেশিদিন নয়। মাত্র ক’দিন আগে নারাণগঞ্জের এক আলোচিত ঘটনার প্রেক্ষিতে জনৈক সাংসদ সাংবাদিকদের একটি বিশেষ ভাষায় গালি দিয়েছিল। যে ভাষাটি ইদানিংকালে সামাজিক মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। শুধু এই সাংসদই নয়, এর আগে প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী মহসিন আলীও সাংবাদিকদের ‘সারমেয়’ বলে সম্বোধন করেছিলেন।
সাংবাদিক সমাজের ওপর জনমনের এ ক্ষোভ কি অমূলক বা অযৌক্তিক? সাংবাদিকতাকে মহান পেশা বলে সম্বোধন করা হয়। কিন্তু এই পেশা কি তার মহত্ত্বের জায়গাটি ধরে রাখতে পেরেছে? মহান পেশাকে বাণিজ্যে পরিণত করতে গিয়ে আজ জাতি বিভিন্নভাবে এই পেশায় জড়ি মানুষদের দ্বারা প্রতিদিনিই কমবেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে। উপকৃত যে হচ্ছে না তা বলবো না। তবে যে ক্ষতি হচ্ছে তা কেন হবে?
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণগুলোর veiw বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পত্রিকাগুলো এখানে তাদের লিঙ্ক শেয়ার করে আর পাঠকরা সহজেই পেয়ে যায় চমকপ্রদ খবরগুলো। কিন্তু এই পাঠক বাড়ানোর চিন্তা করতে গিয়ে পত্রিকাগুলো ইদানিং মোটেই দায়িত্বশীল সূলভ আচরণ করছে না। যেসব সংবাদকর্মী এসব মিডিয়ায় কাজ করে তারা সকলেই জানে যে, ফেসবুক শুধু এডাল্ট তথা প্রাপ্তবয়স্করাই ব্যবহার করে না। এখানে স্কুল পড়ুয়া কিশোর থেকে শুরু করে বয়ো:বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলেরই আনাগোনা রয়েছে। অথচ তারা এসব জেনেও যেন এডাল্ট খবরের লিঙ্ক শেয়ারের প্রতিযোগিতা শুরু করে দেয়।
নিচে আজকের বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন ভার্সনের কিছু স্ক্রীণশট প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করছি। যেগুলো এই সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংবাদকর্মীরা ফেসবুকে শেয়ার করেছে।
এখন প্রশ্ন হলো সামাজিক মাধ্যমে এধরণের অশালীন অসামাজিক খবরের লিঙ্ক কি কোন বিবেকবান সংবাদকর্মী শেয়ার করতে পারেন? এসবের মধ্যে এমনসব খবরও আছে যা আমি কমিউনিটি স্টান্ডার্ডের কথা চিন্তা করে উপস্থাপন করতে পারিনি। আমি দেশের সকল বিবেকবান মানুষের কাতারে দাঁড়িয়ে মনে করি সাংবাদিকরা পতিতাপুত্র কিংবা সারমেয় গোছের কেউ নন। আমাদের সে বিশ্বাস ভঙ্গ করার কোন অধিকার তাদের আছে কি? কোমলমতি কিশোরদের এডাল্ট খবর পড়ানোর কোন দায়িত্ব পত্রিকার মালিকপক্ষ কিংবা সম্পাদকীয় পর্ষদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে কি?
আমরা মিডিয়ার কাছে জনগুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোই আশা করি। ওয়ার্ল্ড ক্লাস পতিতাদের খবর প্রচারে দেশ ও জাতির ক্ষতি বৈ উপকারের কোনই সম্ভাবনা দেখি না।