somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাকহীন ভারতের লজ্জা হবে কবে?

২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের কোথায় তাজমহল আর কোথায় কয়লা বিদ্যুৎ সবকিছু বলে দেয়ার জন্য দাদা ভাই সেজে বসে আছে ভারত। রাজনীতি কে করবে আর কে জেলে পঁচে মরবে সবকিছু বলে দেয়ার দায়িত্ব যেন তারই কাঁধে। কোন নদীতে পানি থাকবে আর কোন নদী শুকিয়ে মরুভূমি হবে সেসব ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্বও যেন তার। অথচ স্বঘোষিত মোড়ল ভারতের অবস্থা দেখলে যে কোন বিবেকবান মানুষ বমি উদগিরণ করতে বাধ্য হবে। আজগুবি কাজকর্ম দেখে মাথাই নষ্ট হয়ে যাবে। অরুচিকর কর্মকান্ড দেখে চিরতরে আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। গরুবাদী ভারতের এহেন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি বর্ণনা করতে কয়েক যূগ লেগে যাবে। তবুও ফুরাবে না তাদের বন্দনা।
গতকাল একটি খবর অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। খবরটি হলো “স্ত্রীর লাশ কাঁধে নিয়ে ১২ কিলোমিটার হাঁটলেন স্বামী”। খবর শুধু নয়, এ খবরের করুণ ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে গেছে সর্বত্র। যারা নিজেদের মানুষ বলে পরিচয় দেয় এমন সকলেই মর্মাহত হয়েছেন এই মর্মান্তিক ছবি দেখে।


গতকালের এই খবরের রেশ না কাটতেই আজ আরও এক মর্মান্তিক খবর প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায়। খবরটি হলো – “অ্যাম্বুলেন্স ও অর্থের অভাবে এবার বাঁশে ঝুলিয়ে লাশ বহন”। খবরে বলা হয়- ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের বালেশ্বর জেলায়। অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে প্লাস্টিকে বস্তায় পার্সেস করা এক বৃদ্ধার মৃতদেহ কাধে নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরেন দুই সুইপার। বহনের সুবিধার্থে ওই বৃদ্ধার মৃতদেহ হাত-পা ভেঙে বস্তাবন্দি করা হয়।


গত ১১ আগস্ট ২০১৬ তারিখেও এমন মর্মান্তিক একটি খবর ভাইরাল হয়। খবরটি ছিল “দীর্ঘসময় রাস্তায় পড়ে থেকেই মারা গেল লোকটি, সাহায্যে আসেনি কেউ”। খবরে বলা হয় “নয়াদিল্লিতে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মুমূর্ষু একটি মানুষ আহত অবস্থায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পড়ে থাকার পরও, তাকে হাসপাতালে নেয়া তো দূরের কথা, সামান্য সাহায্যের জন্যও এগিয়ে আসেনি একজন মানুষও। শেষপর্যন্ত একজনকে আসতে দেখা যায়, তাও ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে। এ সমস্ত দৃশ্যই ধরা পড়েছে ওই এলাকাটির সিসিটিভি ফুটেজে। আর তা ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় লোকটি আহত হওযার পর বহু গাড়ি আশপাশ দিয়ে চলে যাওয়ার সময় কেউ এগিয়ে না এলেও, একজন ব্যক্তি তার কাছে যায় এবং আহত মানুষটির মোবাইল ফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৫টার সময় রাস্তার ধারে হেটে যাওয়ার সময় তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন।


এরপর ভ্যান-চালক তাকে আহত হতে দেখেও পালিয়ে যায়। তারপরে রিকশা থেকে নেমে এসে একজন তার পকেট থেকে মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়। এরও নব্বই মিনিট পর পুলিশ এসে যখন লোকটিকে উদ্ধার করে তখনও তার দেহ থেকে প্রচুর রক্তপাত হচ্ছিল। হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসকরা।

শুধু এই ঘটনা নয়। নিম্ন বর্ণের হিন্দু আর দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর ভাইরাল হওয়ার মত ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। মিডিয়ায় আর ক’টিই আসে? প্রশ্ন হচ্ছে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা কি আসলেই এতটা নাজুক?

চলুন, ভারতের শীর্ষ ধনীদের একটা তালিকা ও সম্পদের পরিমান দেখে আসা যাক।
১. মুকেশ আম্বানি (১,৯৩০ কোটি টাকা)
২. দিলিপ শাংভি (১,৬৭০ কোটি টাকা)
৩. আজিম প্রেমজি(১,৫০০ কোটি টাকা)
৪. শিব নদর (১,১১০ কোটি)
৫. সাইরাস পুনওয়াল্লা (৮৫০ কোটি)
৬. লক্ষী মিত্তল (৮৪০ কোটি)
৭. উদয় কোটাক (৬৩০ কোটি)
৮. কুমার বিড়লা (৬১০ কোটি)
৯. সুনীল মিত্তল (৫৭০ কোটি)
১০. দেশ বন্ধু গুপ্ত (৫৫০ কোটি)
১১. শশী ও রবি রুইয়া (৫০০ কোটি)
১২. মিকি জগতিয়ায়নি (৪৪০ কোটি)
১৩. এম এ ইউসুফ আলি (৪২০ কোটি)
১৪. বিক্রম লাল (৪০০ কোটি)
১৫. সুভাষ চন্দ্র (৩৬০ কোটি)
১৬. গৌতম আদানি (৩৫০ কোটি)
১৭. বেনু গোপাল বাঙ্গুর (৩৫০ কোটি)
১৮. সবিতা জিন্দাল (৩৫০ কোটি)
১৯. পঙ্কজ প্যাটেল (৩৫০ কোটি)
২০. কপিল ও রাহুল ভাটিয়া (৩১০ কোটি)

দৈনিক প্রথম আলোর তথ্য অনুসারে- এ বছর ভারতের শীর্ষস্থানীয় ১০০ ধনী ব্যক্তির মোট সম্পদের আর্থিক মূল্যমান গিয়ে ঠেকেছে আড়াই’শ বিলিয়ন ডলারে। গত বছর তা ছিল ২২১ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া ১৪১ জন ব্যক্তি ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক হয়েছেন এ বছর। গত বছর এই সংখ্যাটি ছিল ১০১ জন।

এরপরেও মানবিক কারণ দেখিয়ে ভারতে বিনা শুল্কে বাংলাদেশের মত রাষ্ট্রকে পন্য সরবরাহের সুযোগ দিতে হয়! একদিকে ভারত পারমানবিক অস্ত্রের মহড়া দেয়, মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠায়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে হামলার হুমকি দেয়। অন্যদিকে দু’মুঠো খাবারের অভাবে আত্মহত্যা করে শত শত গরীব কৃষক। গ্রাজুয়েশন করে সুইপার পদে আবেদন করতে হয়। আর খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ করতে ভারতবাসীর মত খ্যাতি বোধকরি আর কোন জাতি অর্জন করতে পারেনি।

নারী নিগ্রহের স্বর্গরাজ্য হিসেবেও ভারতের খ্যাতি কম নয়। প্রতিদিনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তালিকা দিতে গেলে তা হবে একধরণের অসাধ্য সাধন। গরুবাদী ভারত কবে নাগাদ মানবতাবাদী হয়ে উঠবে তা বলা কঠিন। নাকহীন ভারতের লজ্জা কবে হবে তাও বলা মুশকিল...
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৫১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প বলেছে, বাংলাদেশ পুরোপুরি এনার্খীতে, তারা মাইনোরিটির উপর অত্যাচার করছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬



৩ দিন পরে আমেকিকার ভোট, সাড়ে ৬ কোটী মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে; ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫১ ভাগ। এই অবস্হায় সনাতনীদের দেওয়ালী উপক্ষে ট্রাম্প টুউট করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×