ভূমিকা:
মানুষের ৬ষ্ঠ ইন্দ্রিয় কাছে আমি হেরে গেলাম। ৬ষ্ঠ ইন্দ্রিয়কে বিশ্বাস না করার জন্যই এই দূরদশা আজ আমার। মনের অজান্তে যা চিন্তা করছিলাম তা যে এভাবে সত্য হয়ে যাবে তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। বিষন্নতা তাই আমায় গ্রাস করতে পারেনি। বরং তার বদলে অপরিসীম আনন্দই আমার হৃদয়কে ভরে দিয়েছে অনেক দিন পর। সবাই আমার মনের আনন্দ দেখে অবাক হয়ে তাকিয়েছে। ভেবেছে দু:খে পাগল হয়ে গেলাম নাকি আবার। হন্টন কর্মে যদিও আপাতত স্হায়ী তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি, তাও স্বপ্ন দেখছি একদিন আবার মুক্ত বিহংগের মত আকাশে উড়বার সুযোগ আমি ফিরে পাবো। সেদিন আর কেউ আমাকে আটকে রাখতে পারবে না। যত দামী খাঁচাই হোক না কেন, তার ক্ষমতা থাকবে না আমাকে বন্দি করার। প্রিয় রাস্তার মুখ এখন খুবই দেখতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে ছুটে চলে যাই সেই পুকুর পাড়ের গাছগাছালীতে আবৃত রাস্তায় হাঁটতে। কিন্তু অনাকাঙ্খিত ঘটনাই সব উলোটপালোট করে দেবার আগেই সামলে নেয়ায় আজ আমি পরম আনন্দে আছি। মনে হচ্ছে পরম বলে কিছু নেই তা যে ভুল বিজ্ঞানীদের তা হাতে নাতে দেখিয়ে দেই।
মূল ঘটনা:
এই মাসের ২৫ তারিখে আমার ইউনিভার্সিটিতে ফাইনাল এক্সামের শিডিউল পড়ার কারনে শুক্রবার দিন অনিচ্ছা থাকবার পরও বাসা থেকে বের হতে হয়েছিল। প্রতিদিনকার মত একই রাস্তা ধরে বাস স্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পোড়া কপাল আমার। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেই কেন জানি বিনা কারনে হাইজ্যাকিং এর কথা মনে হচ্ছিল বারবার। আগে যদি জানতাম যে আসলেই আমার জীবনের একটি বহুল প্রতীক্ষিত ঘটনা আজ ঘটতে যাচ্ছে তাহলে হয়তো রাস্তা বদল করতাম। কিন্তু আমি ঘুনাক্ষরেও টের পাইনি সৃষ্টিকর্তার কি ইচ্ছে ছিল। ৮নংব্রিজ ক্রস করার পরই একলোক এসে আমাকে রাজীব ভাইয়ের কথা জিজ্ঞেস করা শুরু করলো। পূর্ব অভিজ্ঞতা অর্জনকারীদের কাছ থেকে যে জ্ঞান লাভ করেছিলাম তা আজ কাজ দিল। আমি খুব সহজেই বুঝতে পারলাম যে ছিনতাই এর শিকার হতে যাচ্ছি আমি। তখন একটাই ভাবনা ছিল কি করে লোকটাকে দূরে সরানো যায়। ভাগ্য ভালো ছিল বলেই পার্কের প্রবেশ পথ এসে পড়ে আর আমি জনাবহুল পার্কের ভেতরে প্রবেশ করি। লোকটার চাল চলন দেখেই বুঝা যাচ্ছিল যে সে আমাকেই খেয়াল করছে। তাই আমি এমন ভাবে হাঁটতে থাকলাম যে সে যত চেষ্টাই করুক যেন আমার সাথে বা আমার পেছনে থাকতে না পারে। এভাবে একটি বাড়ির পাহারাদারের সামনে এসে দাড়ালাম এবং ব্যস্ততার অভিনয় করলাম। লোকটি তখন আমাকে পাশ ঘেঁটে সামনে চলে যেতেই হলো। কিন্তু বিধাতা কপালে লিখে রাখলে তা খন্ডাবার ক্ষমতা কার আছে? আমি আবার যাত্রা শুরু করার পর পেছন থেকে তাদের দলের নেতা যখন এসে পড়লো তখন আর আমার কিছুই করার ছিলনা। আমার মোবাইলটি তাকে দিয়ে দিতেই হলো। তবে ভালো খবর হলো আমার সীম তাহার ফেরত দিয়াছিল
উপসংহার:
এখন থেকে ৬ষ্ঠ ইন্দ্রিয়কেও গননায় আনতে হবে। কাজটা আমার মত অলসদের জন্য একটু কঠিন হয়ে পড়লো। কিন্তু বিধাতার যদি তাহাই ইচ্ছে হয়ে থাকে তাহলে কি কিছু করার আছে নাকি?