কখনো কোন সময় আনমনে দেওয়ালের অথবা নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখেছেন কি ট্রান্সপারেন্ট ব্যাকটেরিয়া সেপের কিছু চোখের সামনে দিয়ে ভেসে বেড়াতে? যদি দেখে থাকেন তাহলে আপনি যা দেখেছেন নাম হল 'আই ফ্লোটার'।
মজার ব্যাপার হল এই আই ফ্লোটারের অবস্থান কিন্তু আকাশে বা বাতাসে নয়, আপনার চোখের ভিতরে। মানুষের চোখ ভিট্রিয়াস হিউমর নামের এক ধরনের জেল দ্বারা পূর্ণ,অনেকটা ডিমের সাদা অংশের মত। চোখের পিছনের দিকে আছে আলোক সংবেদনশীল কোষের একটি স্তর, যাদের নাম হয়তো শুনে থাকবেন, তা হল রডস এবং কোনস।এই রডস এবং কোনস দিয়ে গঠিত হয় চোখের রেটিনা।
এই ফ্লোটারগুলি হল ভিট্রিয়াস হিউমরের প্রোটিনের টুকরা অথবা কোষের গুচ্ছ যা রেটিনার সামনে দিয়ে ভেসে বেড়ায়। আসলে আপনি সরাসরি প্রোটিন বা কোষগুচ্ছ দেখতে পান না ,যা দেখেন তা হল রেটিনার উপরে এদের ছায়া।এগুলো রেটিনার এত কাছে থাকে যে এদের ছোট্ট একটু ছায়াও বিশাল মনে হয়।এজন্যই ফ্লোটারগুলিকে অনেক সময় বেশ বড় দেখায়। আবার কোন নির্দিষ্ট ফ্লোটারকে ফলো করলে দেখবেন এটি অদৃশ্য হয়ে যায়। ব্যাপারটি অনেকটা বোতলে রাখা বরফের টুকরার মত। বোতলটি উল্টে দিলে বরফ টুকরাটিও সরে জাবে।ব্যাপারটি অনেকটা এরকমই।
বাই দা ওয়ে, মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ভিট্রিয়াস হিউমর সংকুচিত হয়ে যায়। তাই আপনি যদি আপনি এখন এগুলি না দেখে থাকেন তাহলে এখনো দেখার সম্ভাবনা আছে। ৬০ বছরের বেশি বয়স্কদের মধ্যে ২৫% এই ফ্লোটার দেখতে পায় আর ৮০ পেরোতে পেরোতে দুই তৃতীয়াংশ মানুষ নিয়মিত ফ্লোটার দেখা শুরু করেন।
পি.এসঃ চোখ বন্ধ করলে আলোর যে ঝলকানি দেখতে পান সেটার কারনও ভিট্রিয়াস হিউমর। যখন আপনি চোখ বন্ধ করেন তখন জেলি টাইপ ভিট্রিয়াস হিউমর আর রেটিনাতে টান লাগে। যেহেতু রেটিনা সংবেদনশীল,তাই চোখ বন্ধ অবস্থায় আমরা অনেকটা সাদা আলোর ঝলকানি দেখি।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:২৪